এই রিকশা যাবে ??? -জি ম্যডাম কই যাবেন …. ? -রুয়েট যাবাে , চিনাে ? -জি ম্যাডাম উঠেন …. ! দুইজন মেয়েকে নিয়ে চলতে শুরু করলাম । আমি আরমান আসিফ ।মার দেওয়া ডাক নাম অশুভ বুঝলেন না তাে , কেন শুধু মার দেওয়া নাম বললাম । কারন আমার বাবা অনেক আগেয় মারা গেছে।
এখন আমার মা আর বােন আছে।টানাটানির শংসার , আর তাই এই পেশাটা বেছে নিয়েছি । -এই থামাে থামাে ! -জি ম্যাডাম .. ! -এই নাও ভাড়া । -ম্যাডাম , আমার কাছে তাে খুচরা নেই । -কি বলাে কি , খুচরা নাই মানে ।
আজকাল রিকশাওয়ালারাও বড়লােক হয়ে গেছে । ( অনেক রেগে গিয়ে মেয়েটি ) -আচ্ছা ম্যাডাম আমি কোথাও থেকে খুচরা করে এনে দিই …. ! -আমার হাতে সময় নেই । এই পাচ টাকা রাখ ! -ম্যাডাম , ভাড়া তাে বিশ টাকা , পাচ টাকা না তাে । -এই ছেলে এই , এতাে বেশি কথা বলিশ কেন হ্যা , যেটা দিছি সেটাই নে ।
এই বলে পাচ টাকা রেখে চলে গেল । আসলে বড়লােকের মেয়েরা এমনি হয় হয়তাে।তবে মেয়েটা দেখতে খুব সুন্দরি । পুরা পরীর মতাে , রাগলে আরাে বেশি সুন্দর লাগে । আমি এগুলাে কি ভাবছি , আমার এগুলাে ভাবা মানাই না।আমি কোথায় আর ওরা কোথায়।যাইহােক , আমারাে সময় নেই কলেজে যেতে হবে ।
-আসসালামু আলাইকুম , আমি কি ভিতরে আসতে পারি স্যাত … ? ( আমি ) -হুম শুভ আসাে । -ধন্যবাদ স্যার । -তা বাবা শুভ এতাে দেরি করলে যে ,? -আসলে স্যার বাসায় একটু কাজ ছিলাে তাই দেরী হয়ে গেলাে । ( আমি ) আমি গিয়ে আমার যায়গায় বসলাম ।
কিছুক্ষণ পরে একটা কণ্ঠ শুনে কিছুটা বিস্মিত হলাম । তবে দরজার দিকে তাকিয়ে সেটা পরীকার হলাে যে , আমার রিকশায় চড়া সেই মেয়েটি …… ! -May , l coming sir . -হ্যা আসাে । মেয়েটি আমাকে দেখে কিছুটা অবাক হলাে , সে হয়তাে আমাকে এখানে আসা করেনি । তারপর চারিদিকে সে মুখ ফিরিয়ে দেখলাে কোথাও জাইগা আছে কি না । কিন্তু সে বসার জন্য জাইগা
আমার পাসে একটা সিট ফাকা ছিলাে , বাধ্য হয়ে তা C সেখানেই বসতে হলাে।আমার পাসে বসে কেমন যেন চোখে তাকাচ্ছিলাে । হয়তাে একটা রিকশাচালক এর পাসে বসলে সবারি এমন হয় । আমি ওগুলাে চিন্তা বাদ দিয়ে ক্লাসে মনােযােগ দিলা প্রথম দিনের মতাে ক্লাস শেষ হলাে , পরিচয় পরব চলে আজ শুধু।
জানতে পারলাম মেয়েটির নাম বৃষ্টি ক্লিাস শেষে রুম থেকে বের হলাম আর অম্নি কে যেন ডাক দিলাে , -এই রিকশা শুভ এদিকে আয় …… ! ( একটা মেয়ে কন্ঠ আমি ভাবলাম আমি রিকশা চালায় এটা অন্য মানুষ কি করে যানে । পরে খেয়াল করে দেখলাম বৃষ্টি ডাকছে , আমি তার কাছে যেতেই সে বল্লো …. ?
তোমার নাম কি?আমি বললাম আমার নাম আসিফ। মেয়েটি বললো: তুমি না সেই ছেলেটি যে সকালে রিকশা চালিয়ে ছিলে।আর এখন কলেজে ক্লাস করছো। ব্যাপার কী তোমার। আমি বললাম: আপনার জেনে কী হবে। আমি কী করি না করি। আপনার অতো জানতে হবে না। আপনি আমার 15টাকা দেন।
মেয়েটি বললো: আমি টাকা ঠিকই দেবো কিন্তু তোমার সম্পর্কে কিছু জানতে চাই।তার আগে একটা কথা। তুমি আর আমি বন্ধু হবে। আমি বললাম তা হয় না। আপনার বড়লোক আর আমরা গরিব। আপনার আব্বা-ভাইয়েরা দেখলে খারাপ বলবে।আর লোকে আপনার কী বলবে ,বলবে গরিবের সাথে বেড়াচ্ছে।
মেয়েটি বললো: আমার আব্বা-ভাইয়েরা কিছু বলবে না।আর লোকে কি বলবে, আমার যার সাথে ইচ্ছা তার সাথে কথা বলবো, তার সাথে ইচ্ছা ঘুরে বেড়াবো তাতে অন্যের কী। আমি বললাম: আচ্ছা ঠিক আছে। বলেন কি বলবেন।
মেয়েটি বললো: আগে তুমি করে বলো।
আমি বললাম: কেনো? মেয়েটি বললো:বলো, আমরা তো ফ্রেন্ড, এজন্য।
আমি বললাম: ওকে, কি বলবে বলো?
মেয়েটি বললো: তুমি এই বয়সে রিকশা চালাও কেনো?
আমি বললাম: আমার বাবা অনেক আগে মারা গেছে। আমি, আমার মা আর বোন একই সঙ্গে থাকি। অভাবের সংসারে কীভাবে চলবে কাজ না করলে।মা অসুস্থ মায়ের ওষুধ কেনার টাকা। বোনের স্কুল এর খরচ , এদিকে আমার খরচ ।মা একা কীভাবে চালাতে পারে, এজন্য আমি এই রাস্তা বেছে নিয়েছি।কোনো একটা কাজ তো করতেই হবে। এজন্য রিকশা চালাই আর পড়াশোনা করি।
মেয়েটি কথা গুলো শোনার পর বললো: এই কার্ডটা নাও আর কাল সকালে এই ঠিকানায় এসে যোগাযোগ করো। আমি বললাম: ঠিক আছে। মেয়েটি বললো: চলো কিছু খেয়ে আসি। আমি বললাম: আমার কাছে তো টাকা নেই, টাকা বাসাই রেখে এসেছি।
মেয়েটি বললো: টাকা লাগবেনা, আমি দিবানি টাকা। আমরা দুজনে খাওয়া দাওয়া করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
তারপরদিন সকালে আমি এই কার্ডের ঠিকানাই যায়। এবং দেখি এটা একটা কোপ্পানির ঠিকানা। আর সেখানের মালিক বৃষ্টি।
বৃষ্টি বললো: আজ থেকে এই অফিসের কাজ তোমার। আমি বললাম: মানে বুঝলাম না। বৃষ্টি বললো: মানে, এই অফিসের সব কিছুর দায়িত্ব তোমার আজ থেকে। আমি বললাম: এতো সহজে একটা মানুষ কে বিশ্বাস করা ঠিক নয়। আমি যদি সব নিজের করে নিই। তাহলে তখন কি হবে।
বৃষ্টি বললো: আমার বিশ্বাস আছে তোমার ওপর, তুমি কখনো এমন কাজ করবে না। কেননা যে কখনো অর্থের জন্যেও খারাপ পথ বেছে নেয় নি ,সে কখনো এমন কাজ করতে পারে না।
আর আমি সেই থেকে এই অফিসে কাজ করি।আর এখন আমি এই কোম্পানির বস।
আমি আর বৃষ্টি বিয়ে করি।
আর একেই বলে বিশ্বাস। বৃষ্টির আসিফের ওপর একটা বিশ্বাস ছিলো।মে, আসিফ কখনো তাকে ফাঁকি দেবে না। এইজন্য একে অপরের প্রতি বিশ্বাস করলে জীবনে অনেক কিছু করা সম্ভব।