আসসালামু আলাইকুম। বর্তমানে এই ব্যস্ত জীবনের দোটানায় আমরা আমাদের স্বাস্থ্যের কথা ভুলেই যাচ্ছি। যার ফলে কমছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং আক্রান্ত হচ্ছে বিভিন্ন ভয়াবহ রোগে। সময় নষ্ট না করে আসুন তবে জেনে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সামান্য কিছু উপাদানের অসামান্য গুণ সম্পর্কে।
হলুদ:
বিশেষজ্ঞরা বলছেন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে হলুদ এর কোনো বিকল্প নেই। হলুদ রক্তের কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। যার ফলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। চিবানো রসুন হাইড্রোজেন সালফাইট তৈরি করে যা রক্ত চলাচল সঠিক রাখে, এসিডিটি দূর করে এবং হার্ট ভালো রাখে।
কালোজিরা
মৃত্যু ব্যতিত সকল রোগের মহৌঔষধ বলা হয় কালোজিরাকে। প্রতিদিন এক চামচ কালোজিরা আপনাকে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং ত্বকের রোগ থেকে দূরে রাখবে, এরসাথে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরো উন্নত করবে।
তুলসী পাতা
একেবারেই ঠিক শুনেছেন। নিয়মিত সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে যদি তুলসী পাতার রসের সঙ্গে পরিমাণমতো মধু মিশিয়ে খাওয়া যায় তাহলে রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসে। তুলসী পাতায় থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস্ হার্ট ভালো রাখে। এছাড়াও ঠান্ডা-কাশি, মুখের রুচি বাড়াতে, মাথাব্যথায়, এবং হার্টের বিভিন্ন সমস্যায় তুলসীর জুড়ি মেলা ভার।
পালং শাক
সুপারফুড পালং শাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও মিনারেল। পালংশাকে থাকা beta-carotene চোখের আলসার সারাতে বেশ উপকারী। এতে থাকা টেকোফেরল, ফোলেট, ও ক্লোরোফাইনিল ব্লাড প্রেসার ও ক্যান্সার প্রতিরোধে অত্যন্ত কার্যকরী। এছাড়াও ত্বকের সুরক্ষা ও হাড়ের গঠন শক্তিশালী করতেও পালং শাক এর কোন বিকল্প নেই।
মাশরুম
মাশরুম ফাইবার জাতীয় খাবার হওয়ায় এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আদর্শ খাবার। এতে কোলেস্টেরল কমানোর অন্যতম উপাদান গুলো থাকায় নিয়মিত মাশরুম খেলে রক্তচাপ ও হৃদরোগ নিরাময় হয়। মাশরুম স্পাইনাল কর্ড সুস্থ রাখে। যার ফলে প্যারালাইসিস হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। বর্তমানে এইড্স প্রতিরোধক হিসেবেও মাশরুম ব্যবহৃত হচ্ছে।
সজনে পাতা
পুষ্টিগুণের এক বিরাট আধার সজনে পাতা। পরিমাণের ভিত্তিতে তুলনা করলে তুলসী পাতায় রয়েছে লেবুর থেকে 7 গুণ বেশি ভিটামিন সি, দুধের চেয়ে চার গুণ বেশি ক্যালসিয়াম, ও কলার চেয়ে তিনগুন বেশী পটাশিয়াম। ক্ষতস্থান সারার ক্ষেত্রে, শ্বাসকষ্ট, মাথাধরায়, মাইগ্রেন ও আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় সজনে পাতা বেশ কার্যকরী।
টমেটো
টমেটো শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম। এরমধ্যে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্টস্ দেহ কোষ থেকে বিষাক্ত ফ্রিরেডিকেলকে সরিয়ে প্রস্টেট ক্যান্সার সহ অন্ননালী এবং অগ্নাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। এর পাশাপাশি টমেটো হৃদরোগকে প্রতিহত করে, স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে, শরীরের মেদ নিয়ন্ত্রণ করে এবং বার্ধক্য রোধেও বেশ সহায়ক।
শসা
ফাইবার ও ফ্লুইড সমৃদ্ধ শসা শরীরে ফাইবার ও পানির পরিমাণ বাড়ায়। ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফাইবার থাকার কারণে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। শসার রস ডায়াবেটিস, আলসার ও এসিডিটির ক্ষেত্রেও উপকারী। আর্থ্রাইটিস, হার্ট ও ফুসফুসের সমস্যা, কিডনি, ব্লাডার ও লিভারের সমস্যায় ও শসার কোন বিকল্প নেই।
দারুচিনি
উচ্চ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন দারুচিনি আমাদের দেহের ব্লাডসুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে, ছত্রাক ঘটিত ইনফেকশন প্রতিরোধ করে, রক্ত চলাচল ও রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা স্বাভাবিক রাখে। দারুচিনি মরণব্যাধি লিউকোমিয়ার বিস্তারও রোধ করে।
পেঁপে
শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস্ সমূহের চমৎকার উৎস পেঁপে। উক্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমূহ কোলেস্টেরল প্রতিরোধে সহায়তা করে যা হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের প্রধান কারণ। এছাড়াও পেঁপে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি করে, হজমে সহায়তা করে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ও ক্যান্সার প্রতিহত করে।
এসবের পাশাপাশি আমাদের দৈনিক তিন লিটার পানি পান করতে হবে যা কিডনি ভালো রাখে ও শরীরকে সতেজ রাখে।
আজ এ পর্যন্তই।