রোবট শব্দের অর্থ হচ্ছে দাসত্ব। এই সুত্র থেকেই যন্ত্র দাস বা যন্ত্র ক্রীতদাস অর্থে রোবট শব্দটির ইংরেজিভাষায় প্রথম ব্যবহার করেন ইউরোপীয় লেখক কারেল চাপেক তার আর ইউ আর নাটকে। চাপেক এর নাটকের পর থেকেই রোবট শব্দটি ইংরেজিভাষায় পাকাপাকি ভাবে জায়গা করে নেয়।
মার্কিন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী উইলিয়াম গ্রে সর্বপ্রথম রোবট পশু তৈরি করেন। গ্রে তার রোবট পশুর নাম দিয়েছিলেন টেস্টিউডো যার অর্থ কচ্ছপ। তিনি যন্ত্রটি এমন ভাবে তৈরি করেছিলেন যাতে সেটি কোন জীবন্ত প্রানির একাধিক প্রতিক্রিয়া নকল করতে পারে। যেমন যন্ত্রটির চোখের জায়গায় ছিল আলোক তড়িৎ কোষ, স্পর্শ অনুভব করার জন্য ছিল সুবেদি ব্যবস্থা। এছারা সামনে পিছনে কিংবা বাক নেয়ার জন্য ছিল একাধিক মোটরের ব্যবস্থা। রোবটটি অন্ধকারে চলতে পারত । চলার পথে যখনি কোন বাধা পেত তখনি কিছুটা পিছিয়ে এসে সামান্য বাক নিয়ে আবার এগিয়ে যেত সাম্নের দিকে। এইভাবে বার বার বাধা পেলেও রোবটটি পাশ কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে পারত। আবার তার চোখ কোন আলো দেখতে পেলে সরাসরি সেই আলোর দিকে এগিয়ে যেত। কিন্তু রোবটটির ব্যাটারির ক্ষমতা কমে গেলে তার আচরন পাল্টে যেত। ব্যাটারি কমে গেলে রোবটটি নিজে নিজেই চার্জ এর জায়গায় গিয়ে নিজেকে চার্জ করতে পারত। ব্যাটারি চার্জ করা শেষ হলে সে নিজেই বের হয়ে আসত। আবার নিজের কাজে নিয়জিত হত।
আজকের দিনে টেস্টিউডের মত অনেক খেলনা হয়ত পাওয়া যাবে । কিন্তু সেই সময়ে উইলিয়ামের বুদ্ধিমান রোবট পশু যে একটি অভিনব আবিষ্কার ছিল তাতে কোন সন্দেহ নেই।
বিভিন্ন জিনিসের যেমন শ্রেনিবিভাগ আছে তেমনি রোবটেরও শ্রেনিবিভাগ আছে। রোবটকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। টার্টল, আর্ম, মোবাইল। টার্টল অনেকটা টেস্টিউডের মত। ছক বাধা নিয়ম অনুসরন করে চলে। আর্ম হল বাহু সম্পন্ন রোবট। যা একই জায়গায় দারিয়ে থেকে শুধু যান্ত্রিক বাহু দ্বারা কোন জিনিশ তুলে নেয়, জোরা লাগায় বা কোন কাজ করে থাকে। আর মোবাইল হল বুদ্ধিমান চলমান মোটর রোবট। এ ধরনের রোবটের অনেক রকম নির্দেশ মেনে কাজ করার ক্ষমতা আছে। যেমন কুকুরকে বেরিয়ে নিয়ে আসা বা গ্লাসে পানি ঢেলে দেয়া । এ রকম আরও বহু কাজ করতে পারে।
রোবটের মস্তিষ্ক হচ্ছে একটি কম্পিউটার ,আর তাকে যেসব নির্দেশ দেয়া হয় তা কম্পিউটার প্রোগ্রাম বলা যেতে পারে। এই নিতি কাজে লাগিয়ে পশ্চিমের জগতে অনেক রোবট তৈরি করা হচ্ছে। আর্ম রোবট বেশিভাগ কলকারখানায় কাজে লাগান হয়। আর টার্টল রোবট বিভিন্ন গবেষণা কাজে ব্যাবহার করা হয়।
সুইডেন এ রোবট সংখ্যা সব থেকে বেশি। কারন সুইডেনে শ্রমিক এর অনেক অভাব। এর পরে আছে জাপান। সব শেষে ইতালি। ভারতেও রোবট ব্যাবহার সুরু হলেও তার সংখ্যা অনেকই কম।