মন ভালো নেই, আর এভাবে মনকে কয়দিন জোর করে ভালো রাখা যায় বা মনকে ভালো রাখতে হবে বলুন তো! সেই কবে মার্চ ‘২০ এর মাঝামাঝিতে লকডাউন শুরু হয়েছে; তার আর শেষ হওয়ার কোন লক্ষ্মণ নেই। এমন পরিস্থিতিতে মনকে কতদিন প্রবোধ দিয়ে রাখবো যে এইতো আর ক’দিন পরেই তো লকডাউন শেষ। কিন্তু এটা যেহেতু আর বলার জো নেই, তাই মন বিদ্রোহী হয়ে উঠেছে। সে আর বাঁধা মানতে চায় না। তাহলে এখন করণীয় কি?
বন্ধুরা বুঝতেই পারছেন সবারই একই অবস্থা হচ্ছে। শুধু আমার না।
আমাদের অবচেতন মনে যে বিদ্রোহের সুর বাজছে তাকে মূল্য দিতে হবে – নাহলে সে একসময় এমন অজানা অন্ধকারময় পথ বেছে নেবে তখন তা থেকে পুনরায় ফিরে আসা কঠিন হবে। তাই এই বিষয় টি অবশ্য ই আমাদের আন্তরিকতার সাথে ভেবে দেখতে হবে দিন শেষ সীমানায় পৌঁছার আগে।
তাই বন্ধুরা আজ আমি আমার এই লেখার মাধ্যমে কি বোঝাতে চাচ্ছি তা ইতিমধ্যে হয়ত অনুমান করে ফেলেছেন। হ্যাঁ বন্ধুরা এই লকডাউন সময়ে আমাদের অলসভাবে পড়ে থাকা সময় টুকু তে অবচেতন মনে যাতে কোন কুপ্রভাব না ফেলে তার জন্য অবশ্যই একটা উপায় বের করে নিতে হবে। আর সেই উপায় তুলে ধরার জন্য আবার আমার প্রিয় ওপেনসোর্স ব্লগ সাইট গ্রাথর ডটকম এর সাথে মিতালী করা এবং বোনাস হিসাবে আপনাদের সাথে ও মিতালী করার বাসনা করা।
বন্ধুরা তো আর বেশি বক বক না করে শুরু করা যাক। লকডাউন সময়ের জন্য মনটাকে সুস্থ, সুন্দর ও সৃজনশীল কাজের মধ্যে ডুবিয়ে রেখে খারাপ কাজ থেকে দূরে রাখার উপায় উদ্ভাবনের খোঁজে। আমার এই ছোট্ট জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে খারাপ সময় বা ধরা লকডাউনের মত সময়ে যে যে কাজ ও চিন্তা চেতনা করলে আমরা আমাদের বিদ্রোহী মন বা কটু চিত্ত কে কুপথ থেকে দূরে রেখে সুপথে রাখতে সক্ষম হব তা তুলে ধরার চেষ্টা করছিঃ-
এর জন্য কিছু ধারাবাহিক নিয়ম ফলো করতে হবে ~~~
১। সর্বপ্রথমে আমাদের পারিবারিক ভাবে একটা সুন্দর ও সৃজনশীল টাইমফ্রেম বাঁধতে হবে। আর অবশ্যই সেই অনুযায়ী চলার চেষ্টা করতে হবে। এই টাইম ফ্রেমে পরিবারের সবার বিষয় বিবেচনা করে এমন একটা রুটিন সেটিং করে নিতে হবে যাতে সকলের জন্য সময় টা উপভোগ্য, বৈচিত্র্যময় ও সৃজনশীল হয়। তাহলে সবার জন্য আনন্দের হবে ও সবাই খুশি থাকবে। এতে কারো মনে অসন্তুষ্ট ও বিদ্রোহ ভাব দেখা দেবে না।
২। টাইমফ্রেমে বাঁধা রুটিনের মধ্যেই আমাদের নিত্য নৈমিত্তিক বিষয় গুলো – যেমন খাওয়া, ঘুমানো,গোছল,ধর্মীয় কাজ সম্পাদন, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা, খেলাধূলা(এক্ষেত্রে ইনডোর খেলাধূলা। যেহেতু লকডাউন আউটডোর এ যাওয়া উচিত হবে না), বিনোদন, সৃজনশীল কাজ ও আনন্দদায়ক কাজ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
৩। রুটিনে উল্লেখ থাকা কাজগুলো যার যা করণীয় সেগুলো যথাযথ ভাবে পালন করা এবং এর তদারকির জন্য পরিবারের দায়িত্ব শীল কর্তাব্যক্তিরাই বিশেষ করে বয়োজ্যেষ্ঠ এবং অভিজ্ঞরাই দায়িত্ব নিলে ভালো হবে। তখন পরিবারের সবারই তা মেনে চলতে কোন অসুবিধা হবে না এবং কাউকে অবমূল্যায়ন বা অবহেলা করার মানসিকতা দেখা দেবে না। এরকম হলে সবার জন্যই লকডাউন সময় টা অভিশাপ না হয়ে বরং আশীর্বাদ হিসেবে পরিগনিত হবে।
৪। তবে সব যে একেবারে ষোলোআনা ১০০% পরিপূর্ণ হবে এটা ভেবে নেওয়া মোটেই ঠিক নয়। সময় পরিক্রমায় পরিবারের কোন সদস্যের কিছু কিছু ভুল ত্রুটি হতেে পারে। তার জন্য তিরস্কার না করে, ভুল সংশোধনের ব্যবস্থা করতে হবে। এতে করে পরিবারের সবারই মাঝে সম্প্রীতির বন্ধন সুদৃঢ় হবে এবং সবদিক দিয়েই উন্নতি সাধিত হবে।
তো সুপ্রিয় বন্ধুরা প্রবন্ধ টি লম্বা হওয়ার ভয়ে আর বেশি কিছু লিখলাম না। কারণ লেখা বড় হলে সেটা পড়ার ধৈর্য্য সবার থাকে না। তাই সংক্ষিপ্ত অথচ মূল কথা গুলো ফুটে ওঠা এভাবেই লিখতে হয়। তাহলে পাঠকের ও ধৈর্য্য চ্যুতি ঘটে না। আবার পাঠক যদি ভালো ভাবে লেখা পড়ে তাহলে লেখক এর লেখার সার্থকতা সফল হয়।
সুপ্রিয় বন্ধুরা আশা করি লকডাউনের সময়ে সময় টা কে কিভাবে চালানো উচিত এই এতক্ষণ ধরে পড়ে আসা লেখা টি আপনাদের একটু হলেও ভালো লেগেছে এবং দেখানো উপায় গুলো অবলম্বন করে একটু হলেও সুফল বয়ে আনবে এই প্রত্যাশা করে চলে যাবার আগে এটুকুই বলব লকডাউন সময়ে সবাই বাড়িতে সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপন করে সময় টা
কে উপভোগ্য করে তুলুন -এই কামনায় লেখা শেষ করছি। সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ।