আমরা সকলেই ছোট থেকে বড় হয়েছি। কোন মানুষই এমন নেই যে, সে বড় থেকে ছোট হয়েছি। আমরা প্রথমে জন্মলাভ করার মায়ের দুধ খেয়েছি। অতঃপর সুজি তারপর আস্তে ভাত ডাল মাছ মাছের কাটা গোস্ত গোস্তের হাড্ডি ইত্যাদি খেতে শিখেছি। অতঃপর যখন আমাদের প্রায় ছয় সাত বছর বয়স হলো তখন হয়তো আমরা নূরানী বা প্লে তে ভর্তি হয়ে গিয়েছি।
তখন মাদ্রাসা/স্কুলে যাওয়ার জন্য একেকজনের এক এক ধরণের বুদ্ধি কেউর মাথা ব্যাথা তো কেউর পেট ব্যাথা। আবার দেখা যেত পরীক্ষার সময় কিছু ছাত্র কিভাবে যেন ১ম স্থান অধিকার করত। আবার কিছু ছাত্র একেবারে ফেলের উপর ফেল। যারা পরে তারা পারে এটা আমরা সবাই জানি। কিন্তু যারা পরেনা তারাও পারে। এটা সাধারণত সকলের মনে পড়ে না।
দেখা যায় প্রায় সময় যে ফেল করে এমন একটা ছাত্রের সাথে একটা ১ম স্থান অধিকার কারী ছাত্রের সাথে একদম গভীর বন্ধুত্ব। সে পড়া ফাকি দেয় তো তার বন্ধুও তার সাথে পড়া ফাকি দেয়। সে স্কুল নাগা দেয় তো তার বন্ধুও স্কুল নাগা দেয়। সে সারারাত জেগে জেগে মুভি দেখে সেও দেখে । সে সকালে স্কুলে এসে ঘুমায় তো তার বন্ধু ও স্কুলে এসে ঘুমায়।
সে যেদিন স্কুলে আসে না তার বন্ধু যদি ভুলে সেদিন স্কুলে এসেও পড়ে তাও ফেরত চলে যায় বা বাহিরে ঘুড়া-ফেড়া করে স্কুলের পড়ার টাইম শেষ হলে বাসায় পৌছায়। তারা সবকিছুই একসাথে করে কিন্তু যখন পরীক্ষা আসে তখন দেখা যায় একজন ১ম স্থান অধিকার করেছে আর ২য় জনের নাম রেজাল্টের শেষ স্থানটাও অনেক কষ্ট করে ধরে রাখতে হচ্ছে।
তখন কেমন যে লাগে, মনে মনে বলে “হালায় আর আমি এক লগেই সবকিছু করছি কিন্তু পরীক্ষার সময় ওর আসল পরিচয় পাওয়া গেল বন্ধুত্বের নামে এতদিন আমাকে ধোকা দিয়েছে” ওর মায়রে বাপ। তো এর কারণ হিসাবেই আমার আজকের এই পোষ্টটি লেখা।
আমার মনেও এই একই ধরণের খটকা ছিল যে, একই সাথে ঘুড়াফেড়া করি কিন্তু সালায় ১ম স্থান আর আমি শেষ স্থান। তখন অনেক খোজাখোজির পর একটা বৈজ্ঞানিক থিওরী আমার সামনে আসল যা পড়ার আমার মনে যতগুলো খটকা ছিল সব দূর হয়ে গেল। এবং আমি বুঝতে পারলাম যে, কেন সে না পড়ে ১ম স্থান আর আমি না পড়ে শেষ স্থান।
তো থিওরীটা হলো
একবার কয়েকজন মনোবিজ্ঞানী একটা গবেষণা করল যে, মানুষের মন তার শরীরের উপর কতটা প্রভাব ফেলতে পারে। বিজ্ঞানীরা আমেরিকার ছিল। তাই তারা আমেরিকার জেলখানা থেকে এমন একজন কয়েদিকে ধরে আনল। যার নাকি দুই দিন পর ফাসির আদেশ আছে। তো তারা কয়েদিকে এই বিশ্বাস দিল যে, তাকে ফাসি দেওয়া হবে না বরং তার সামনে একটা সাপ ছেড়ে দেওয়া হবে আর সাপটা তাকে কামড় দিবে আর সে মৃত্যুবরণ করবে।
অর্থ্যাৎ তাকে এটা বুঝানো হলো তাকে সাপের কামড়ের মাধ্যমে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হবে। তো যথাসময় তার হাত পা চোখ বেধে দেওয়া হলো। এবং তাকে বলা হলো এখন তোমাকে সাপে কামড় দিবে। তো মনোবিজ্ঞানীরা দুটি সেফটিপিনের দুই মাথা একসাথে তার পায়ে ধুকিয়ে দিল। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই লোকটা মারা গেল। আর একটা কথা বলে রাখি যে, সেই সেফটিপিনে না কোন জীবানু ছিল না কোন বিষ।
তো যখন পরীক্ষা করা হলো দেখা গেল যে, লোকটা সত্যিই মারা গিয়েছে। এবং যখন তার শরীরের ভিতরটা পরীক্ষা করা হলো তখন বিজ্ঞানীরা একেবারেই চমকে উঠলো। যে তার শরীরে এক জাতীয় বিষ পাওয়া গেছে আর এই বিষের ক্রিয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তার মৃত্যুর পূর্বেও বিজ্ঞানীরা তার শরীরের চেকআপ নিয়ে ছিল। কিন্তু তার শরীরে কোন রকমের বিষ পাওয়া যায় নাই। অর্থ্যাৎ তার মন পুরোপুরি বিশ্বাস করে নিয়েছিল যে, তাকে সাপে কামড় দিবে। যার কারণে তার শরীরে বিষ প্রবেশ করা ছাড়াই বরং তার শরীরের ভিতরেই বিষ তৈরী হয়ে গিয়েছে।
বুঝলেন তো পাঠক। মানুষ অর্থ্যাৎ আমাদের মন অনেক শক্তিশালী আমরা যদি চাই তো এমন কিছু নাই যা আমরা করতে পারব না। সুতরাং কার মেধা কম আর কার মেধা বেশী। এটা বেশী বড় কথা নয় বড় কথা হলো কার বুঝ শক্তি বেশী আর কার বুঝ শক্তি কম। আপনি যে জিনিসটা একবার ভালোমত বুঝে নিবেন সে জিনিসটি কখনও আপনি ভুলবেন না।
আর যে জিনিসটি আপনি মুখস্থ করবেন। সে জিনিসটি মনে রাখার জন্য আপনার কয়েকদিন পর পর চর্চা করতে হবে। না হলে আপনি সে জিনিসটি মনে রাখতে পারবেন না। এখন তো বুঝতে পারলেন যে কেন আপনি শেষ স্থান আর আপনার ঐ বন্ধু যে আপনার মতই না পড়ে প্রথম স্থান অর্জন করে।
এটা পুরোটাই আপনার বুঝ শক্তির উপর যদি আপনার বুঝ শক্তি ভালো থাকে তাহলে আপনিও পারবেন তার মতো না পড়ে ১ম স্থান অর্জন করতে শুধু আপনার এতটুকু মনে করতে হবে যে, সে ও পড়ে না আমি ও পড়ি না তাহলে সে কেন ১ম স্থান আর আমি কেন শেষ স্থান। আজ থেকে আমিও ১ম স্থান অর্জন করব সে না পড়ে ১ম স্থান অর্জন করে দরকার হলে আমি তার থেকে একটু বেশী পড়ব।
তো কেমন লাগল পাঠক পোষ্টটি পড়ে। যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর যদি কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট বক্সে লিখে জানাতে। তো দেখা হবে নেক্সট কোন আর্টিক্যেলে ততদিন পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন এবং গ্রাথর ডট কমের সাথেই থাকুন