পৃথিবীতে সব মানুষই তাঁদের নিজ নিজ অবস্থানে সুখী হতে চায়। যে চায় না সে হয় পাগল না হয় উম্মাদ। পৃথিবীতে এমন একটি মানুষ পাওয়া যাবে না যে সুখ চায় না। অনেকের ধারনা, অর্থনৈতিক প্রতিপত্তি থাকলেই কেউ সুখী হতে পারে। আসলে তা নয়। লাখ লাখ মানুষের জন্য এখনকার সময়ে প্রকৃত সুখ যেন সোনার হরিণ।
মানুষ এখন টাকার বিনিময়ে সুখ কিনতে চায়। অর্থ ও প্রতিপত্তি মানুষকে সাময়িকভাবে মানুষকে কিছুটা সুখ দিতে পারলেও স্থায়ী সুখ দিতে বড় ভূমিকা পালন করে না। মনোবিদদের মতে, সুখ জাগতিক কোনো ব্যাপার নয়। সুখ আধ্যাত্মিক ব্যাপার।
অনেকে বলেন, সুখ হল জেনেটিক বিষয়। আবার কিছু বিজ্ঞানী আছেন যারা বলেন, মস্তিষ্কের এমন কিছু অংশ আছে যেখান থেকে সুখ নিঃসৃত হয়। আনার, কারও মতে, সুখ অনেকাংশেই মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন। এটি অনেকটা মানুষের কোলেস্টেরল লেভেলের মতো। আবার এটি ক্ষেত্রবিশেষ মানুষের লাইফস্টাইল এবং খাদ্যাভ্যাস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
সুখ এমন একটি জিনিস যাকে মাঝে মাঝে স্বার্থিক উদ্দেশ্য বলে মনে করা হয়। মানুষের কী আছে না আছে তার ওপর অনেকাংশে সুখ নির্ভর করে না। মানুষ কী নিয়ে ভাবে বা মগ্ন থাকে তার ওপর নির্ভর করে সুখ। যার যা আছে তা শুকরিয়া আদায় করাও সুখ। মানুষ আজ যা ভাবছে যা করছে আর যেভাবে বীজ বুনন করছে তার ওপরও ভিত্তি করে তার ভবিষ্যতের সুখ। সুতরাং কাজ-কর্ম ও চিন্তাধারায় পজিটিভ অ্যাপ্রোচ থাকা চাই। সফলতা আসবেই। আত্মবিশ্বাসে সম্পূর্ণ বিশ্বাসী, মর্যাদা ও হৃদয়বান, সৎ মানুষ সব সময় সুখী হয়।
অভিজ্ঞরা বলেন, সুখের শর্টকাট কোনো উপায় নেই। ২৪ ঘণ্টাই কেউ সুখী থাকে না। সুখী মানুষের জীবনেও হতাশাও থাকে। পার্থক্য হল সুখী মানুষরা হতাশা, দুঃখ-কষ্টকে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারে। অন্যরা তা পারেন না।
জগতে লোভ লালসা, ঈর্ষা ও প্রতিহিংসা, অশান্তি, অসুখ ধ্বংসের মূল কারণ। মানুষ তার সততা, সৎকর্ম ও অটল সৃষ্টিকর্তাপ্রীতি দ্বারা উল্লিখিত বদগুণ থেকে নিজেকে দূরে রেখে এই পার্থিব জীবনেই পরম স্বর্গসুখের স্বাদ লাভ করতে পারে।
সুস্থ, সুন্দর ও সুখী জীবনযাপনের জন্য প্রকৃতিতে অনেক নিয়ামত রয়েছে। প্রাকৃতিক জীবনযাত্রা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কারণে আজ বিশ্বজুড়ে লাখো-কোটি মানুষের শরীর-মন-আত্মার ওপর প্রচণ্ড নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অথচ প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করার মাধ্যমে আমরা অতি সহজে সুস্থ, সুন্দর ও সুখী জীবনের অধিকারী হতে পারি।
বর্তমান বিশ্বে লাখ লাখ মানুষ মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ার কারণে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বহু দেশে এর ব্যাপক বিরূপ প্রভাব পড়ছে। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এসব মানুষকে সুস্থ করে তোলা নিয়ে বিশ্বব্যাপী অনেকেই বিভ্রান্তিতে রয়েছেন।