একই সাথে সকল চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের ভাষ্য মতে, স্বাস্থ্যকর জীবনের মূলমন্ত্র তিনটি। সেগুলো হলোঃ ‘সঠিক খাদ্যাভ্যাস’, ‘পরিমিত ঘুম’ ও ‘স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন’। যেকোনো মৌসুমে এই তিনটি অভ্যাস ঠিক রাখলে সুস্থ্য থাকবেনই।
আমাদের দেশের সব জেলায় খুব বেশি শীত না পড়লেও উত্তরাঞ্চলের বেশ কিছু জেলায় ইতিমধ্যে জাঁকিয়ে শীত পড়েছে। অন্যান্য এলাকায় উত্তুরে ঠাণ্ডা হিমেল হাওয়া ও সাথে হালকা শরীরে কাঁপুনি জানান দিচ্ছে হেমন্তকাল পেরিয়ে ইতিমধ্যে আমাদের মাঝে শীতকালের আগমন ঘটে গেছে। বাঙালির শীতকাল মানেই হলো বিভিন্ন উৎসবের মৌসুম। এ কারনেই বাঙালির জীবনচর্চায় অনিয়ম আরও বেড়ে যায়।
শীতের এই সময়ে প্রত্যেক বয়সী নারী পুরুষ শিশু বৃদ্ধ সবারই নিয়ম মেনে পরিমাণমতো পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। অসচেতনতার দরুণ শীতের এ সময়ে শারীরিক অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সমস্যাগুলোর মধ্যে বিভিন্ন রকমের ত্বকের সমস্যা, অ্যালার্জি, হজমের গণ্ডগোল, ক্ষত ইনেফেকশনের সমস্যা উল্লেখযোগ্য যা প্রায়জনের লেগেই থাকে।
অন্যান্য বছরের শীতের তুলনায় এ বছরের শীত অন্য রকম ও অসুখ বিসুখেট ধরণও অন্যরকম। করোনা ভাইরাস মহামারিতে এ সময় প্রত্যেকের মানুষের জীবনযাত্রায় কিছুটা হলেও পরিবর্তন এসেছে। এ বছর শীতকালিন উৎসবের আমেজ থাকলেও সাথে রয়েছে মনের মধ্যে বিষণ্ণতার এক সুর। খাবার ঘুম থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য রক্ষা নিয়ে সবাই এখন চিন্তিত।
বহুকাল ধরেই রোগ নিরাময় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভিটামিন সি এর ভূমিকা বিশেষ ভাবে স্বীকৃত। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও বাড়িয়ে তোলার ক্ষেত্রে সঠিকভাবে ডায়েট পালন করার বিকল্প নেই। এর মধ্যে, প্রতিদিনের ডায়েট এবং ঋতু বিশেষের ডায়েটের মধ্যে কিছু ভিন্নতা থাকবে। প্রতিটি মৌসুমভেদে এই ডায়েট এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও বলিষ্ঠভাবে গড়ে তোলা যাবে। শীতকালে এমনিতেই আমাদের শরীরের কর্মক্ষমতা অন্যান্য মৌসুমের তুলনায় অনেকটাই কম থাকে।
এই মৌসুমে সাধারণত টক জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করাটা শরীরের জন্য ভালো। আবার শীতকালে মানুষের ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। টক জাতীয় খাদ্য খেলে সেই খাদ্যের মধ্যে ভিটামিন সি এর উপাদানসমূহ ত্বকের যত্ন নেয় এবং ত্বক ভালো রাখে। কাঁচা আমলকি এদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো ভূমিকা রাখতে পারে।
এছাড়াও রয়েছে মৌসুমি ডাল, গমের আটা, নতুন চাল, ভুট্টা, আখ, গুঁড় ইত্যাদি। এই ধরণের খাবারগুলোতে যথেষ্ট পুষ্টি উপাদান রয়েছে। অপরদিকে, প্রোটিন জাতীয় খাদ্য যেমন দুধ, ডিম ইত্যাদি নিয়ম করে খেলেও শরীর ও স্বাস্থ্য ঠিক থাকে। এই শীতে হাল্কা মশলাযুক্ত ও গরম খাবার গ্রহন করা শরীরের পক্ষে ভাল।
ত্বকের ক্ষেত্রে, আপনার ত্বক যাতে কোমল, নরম, মোলায়েম ও উজ্জ্বল থাকে সে জন্য প্রতিদিন গোসল ও হাত মুখ ধুয়ার পর তেল এবং ক্রিম ব্যবহার করবেন। যেহেতু করোনার এই সময়টাতে বাইরে এত বেশি যাওয়া ঠিক নয় সেহেতু চেস্টা করুন বাড়িতেই রূপচর্চা করতে।
এক্ষেত্রে কাঁচা হলুদ বাটা, চন্দন বাটা এবং অ্যালোভেরা জেল মিলিয়ে মিশ্রন বানিয়ে সপ্তাহে কমপক্ষে দু’দিন মুখে ও ত্বকে লাগান। এতেই এই শীতে আপনার ত্বক অনেক উজ্জ্বল দেখাবে।
বিশেষ করে, শীতের মৌসুমে সূর্যের মিঠা আলো ত্বকের জন্য খুবই ভাল। কারণ, এটি আপনার ত্বকে ভিটামিন ডি এর চাহিদা মেটায়। সূর্যের আলোয় থাকা ভিটামিন ডি শরীরের জন্য অপরিহার্য।
ভালো থাকুক আপনাদের শীতকাল। ঘরেই থাকার চেস্টা করুন। আর, শরীর ও ত্বকের যত্ন নিন। বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।