আমরা বিভিন্ন সময় প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে প্লে স্টোর থেকে এমন অনেক অ্যাপস ডাউনলোড করি, যেগুলো আমাদের মোবাইলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং বিপদজ্জনক। এই অ্যাপসগুলো আমাদের অজান্তেই আমাদের মোবাইলের ডেটা চুরি, ব্যাটারি ড্যামেজ, মোবাইল স্লো কিংবা হ্যাং এবং আপনার মোবাইল অতিরিক্ত গরমসহ এমন মারাত্মক সব ক্ষতি করে থাকে।
আর তাই, আমাদের মোবাইলকে এ ধরনের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে মোবাইলের জন্য ক্ষতিকারক এমন কিছু অ্যাপস সম্পর্কে জানবো।
১. র্যাম বুস্টার/ব্যাটারি সেভার অ্যাপস্
আজকের তালিকার প্রথমেই রাখবো র্যাম বুস্টার এবং ব্যাটারি সেভার নামে কিংবা বিভিন্ন ধরনের অপটিমাইজার অ্যাপসগুলোকে। আপনার মোবাইলে যদি এ ধরনের কোনো অপটিমাইজার অ্যাপস থাকে তাহলে এক্ষুনি অ্যাপস গুলো ডিলিট করে দিন।
কারণ এগুলো মোবাইলের জন্য ক্ষতিকর এক ধরনের ভুয়া এবং ফেক অ্যাপস । কেননা একটা মোবাইলের স্প্রিট বাড়ানো কিংবা ব্যাটারি সেভিং এই ব্যাপার গুলো অনেকটা হার্ডওয়ার রিলেটেড । আর হার্ডওয়ার রিলেটেড কোন বিষয় সফটওয়্যার দ্বারা পরিবর্তন করা সম্ভব না।
আর সত্যিকার অর্থে, আপনি কিভাবে মোবাইলের রেম ফ্রি করবেন, কিভাবে আপনি ব্যাটারি পাওয়ার সেভ করবেন, এই অপশনগুলো আপনার মোবাইলে ডিফল্টভাবে দেওয়া থাকে। আপনি চাইলেই এগুলো ব্যবহার করতে পারেন । তাহলে কেন আপনি অযথা রিস্ক নিয়ে এ ধরনের third-party অ্যাপস্ গুলো ব্যবহার করবেন ? এগুলো তো কোনো উপকার করবেই না
বরং এই অ্যাপসগুলো অহেতুক আপনার মোবাইলে র্্যামের জায়গা নষ্ট করবে, এবং সব সময় ব্যাকগ্রাউন্ডে চলবে। যার ফলে আপনার ব্যাটারির পাওয়ার খুব দ্রুত শেষ হয়ে যাবে এবং মোবাইল খুব স্লো হয়ে যাবে।
২. থার্ড পার্টি অ্যাপস :
আমরা অনেক সময় বিভিন্ন সফটওয়্যার প্লে স্টোরে না পেয়ে গুগল থেকে সরাসরি APK ফাইল ডাউনলোড করে ইন্সটল করি। এগুলোকে বলা হয় থার্ড পার্ট সফটওয়্যার। এই ধরনের অ্যাপসগুলো ব্যবহার করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
কারণ এ ধরনের অ্যাপস গুলো ইন্সটল করলে এগুলোর সাথে অনেক সময় বিভিন্ন ধরনের ভাইরাস এবং ম্যালওয়ার মোবাইলে এসে যায়। এতে পরবর্তীতে আপনার মোবাইলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যেমন_( মোবাইল স্লো, র্্যাম পুরে যাওয়া, বিভিন্ন ধরনের পার্সোনাল ছবি কিংবা ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া)
তাই এ ধরনের অ্যাপস গুলো ইনস্টল না করা উচিত। তবে যে অ্যাপস গুলো রিভিউ অনেক ভালো এবং খুব জনপ্রিয় সেগুলো ডাউনলোড করাতে কোন সমস্যা নেই। তবে যেগুলো পরিচিত নয় কিংবা রিভিউ কম সেগুলো ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকাই সবচেয়ে নিরাপদ।
৩. এন্টিভাইরাস অ্যাপস :
কম্পিউটারের মত মোবাইলকে ও আমরা ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য অনেক সময় আমরা বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করি। অথচ মোবাইলে কোন ধরনের এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। কেননা বর্তমান সময়ের মোবাইল গুলো এতটাই আপডেট এবং আধুনিক যে, ডিফল্টভাবেই অনেক অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার এবং স্ক্যানার দেওয়া থাকে ভাইরাস স্ক্যান করার জন্য ।
আর সত্যিটা হচ্ছে, এই এন্টিভাইরাস সফটওয়্যারগুলোর প্রায় সবগুলোই ফেক । তাহলে এখন আপনি একটু চিন্তা করে দেখুন তো, যেখানে একটা প্রোগ্রাম মোবাইলে ডিফল্ট ভাবে দেওয়া থাকে, সেখানে কেন আমরা শুধু শুধু এন্টিভাইরাসের মত এমন একটা ঝুঁকিপূর্ণ সফটওয়্যার ব্যবহার করে আমাদের মোবাইলকে ঝুঁকিতে ফেলব?
৪. ফাস্ট চার্জিং অ্যাপ:
আমরা অনেকেই মোবাইলকে দ্রুত চার্জ করার জন্য ফাস্ট চার্জিং অ্যাপস ব্যবহার করি। এতে মনে হয় আমাদের মোবাইল খুব তাড়াতাড়ি চার্জ হয়ে যায়। আসলে এটি একটি সম্পূর্ণ ভুল তথ্য। কেননা আমি আগেই বলেছি হার্ডওয়ার রিলেটেড কোন ইস্যু কোন সফটওয়্যার দ্বারা পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।
আর যেহেতু মোবাইলে চার্জ হওয়ার বিষয়টা হার্ডওয়্যার এবং ব্যাটারি রিলেটেড, তাই সফটওয়্যার দ্বারা মোবাইল ফাস্ট চার্জ করা সম্ভব নয়। আপনার মোবাইলের ব্যাটারি যদি ফাস্ট চার্জিং এর ক্ষমতা না রাখে, তাহলে আপনি যতই অ্যাপস ব্যবহার করেন না কেন, কোনদিনও আপনি কোন ধরনের অ্যাপস ব্যবহার করে মোবাইলের চার্জ ফাস্ট করতে পারবেন না। এমনকি ফাস্ট চার্জার দিয়েও না।
তাই আমি বলব আপনার মোবাইলে যদি এ ধরনের কোনো ফাস্ট চার্জিং অ্যাপস থাকে তাহলে এক্ষুনি এগুলো ডিলিট করে দিন। কেননা অযথা এ ধরনের ফালতু এপপ্স মোবাইলে রেখে আপনার মোবাইলের রেম এবং ব্যাটারি খরচ করার কোন মানে হয় না।
শেষ কথা:-
তো বন্ধুরা, আশা করি আমি আপনাদের বর্তমান সময়ের কিছু বহুল ব্যবহৃত ক্ষতিকর কিছু অ্যাপস সম্পর্কে জানাতে সক্ষম হয়েছি। এমনিভাবে এই লিস্টের বাহিরেও আরো অনেক ক্ষতিকর এপ্স রয়েছে, যেগুলো আমি আপনাদের অন্য কোন আর্টিকেলে জানাতে চেষ্টা করব। তো আজকের আর্টিকেলটি পড়ে আপনাদের কেমন লাগলো এবং নতুন কিছু জানতে পারছেন কিনা, সেটা নিচের কমেন্ট বক্সে জানাবেন। ধন্যবাদ।