আপনার বাসায় পুলিশ আসলো তখন আপনি কি কি করবেন । গোপন সংবাদের বিত্তিতে যদি যানা যায় কোন বাড়িতে বা নিদিষ্ট কোন জায়গায় আগ্নেয়াস্ত্র, মাদক বা বিস্ফোরক আছে তখন পুলিশ তল্লাসির জন্য ঐ জায়গায় যেতে পারে । এ সময় যাতে মানবধীকারের কোন লঙ্ঘন না হয় সে জন্য রয়েছে আইনের সুনিদিষ্ঠ কিছু বিধান । বিভিন্ন কারনে বাসায় পুলিশ আসতে পারে, যেমন যদি কোন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়, তখন আসামি গ্রেফতারের উদ্যেশে পুলিশ আপনার বাসায় যেতে পারে ।এছাড়াও কোন মামলার পলাতক আসামিকে খুজে বের করতে ঐ আসামির বাড়িতে পুলিশ তল্লাশি করতে পারে । বাসাবাড়িতে পুলিশ এলে ভয় না পেয়ে বা বিরোধীতা না করে সহযোগীতা করার বিধান রয়েছে আইনে । আর এ সময় তল্লাশির নামে যাতে হয়রানি করা না হয় সেজন্যেও সুস্পষ্ট আইনের বিধান রয়েছে । বাসাবাড়িতে পুলিশ এলে যদি সন্দ্যেহ হয় তহলে আগে যুক্তি সঙ্গত সময়ের মধ্যে তাদের অপেক্ষা করতে বলে কাছের থানায় ফোন করে নিশ্চিত হয়ে নিতে পারেন যে আসলে ওই থানা থেকে কোন পুলিশ পাঠানো হয়েছে কিনা । তাই আপনি যেখানেই থাকুন না কেন স্থানীয় পুলিশের নাম্বারটি আপনার ফোনে থাকা বা সংগ্রহে থাকা অবশ্যই জরুরি । যদি কেও নিজেকে আপনার কাছে পুলিশের পরিচয় দেয় আর তাতে যদি আপনার সন্দহ হয় তাহলে আপনি তার কাছে তার পরিচয় পত্র বা প্রমান পত্র দেখতে চাইতে পারেন আইনে এরকও বলা আছে । পুলিশ সুনিদিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে চাইলে তল্লাশি করতে পারে । কোর্ট থেকে ম্যাজিস্ট্রেট যদি কোন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করে তাহলে পুলিশ উক্ত ব্যাক্তি বা বস্তুর সন্ধানে আপনার বাড়িতে তল্লাশি করতে পারে । কিন্তু সেক্ষেত্রে ওয়ারেন্ট কৃত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে যে ওয়ারেন্ট নামা থাকবে তা পুলিশ তাদের সাথে করে নিয়ে আসবে এবং তা আসামি ধরে নেয়ার সময় কেও দেখতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা তা দেখাতে বাধ্য থাকবে । আইন অন্যযায়ী অপরিচিত যে কেও হোক না সে পুলিশ কারও সয়ন কক্ষে হুট করে ঢুকতে পারবে না । এজন্য অবশ্যই আগে অনুমতি নিতে হবে । সেক্ষেত্রেও পুলিশ যদি ওয়ারেন্ট আছে বলে তাহলে ওয়ারেন্টের কপি দেখার অধিকার আপনার থাকবে । এছারা পুলিশ যদি উক্ত সয়ক কক্ষে তল্লাশি চালাতে চায় তবে ঘরের মালিক সেখানে উপস্থিত থাকতে পারবেন । ফোজদারি কার্যবিধী ১০২ ধারা অনুযায়ী কোন ঘর, যায়গার, বা পুলিশের সন্দেহ কৃত স্থানে উল্লেখেত ব্যাক্তি পুলিশকে সেখানে তল্লাশি করার অনুমতি দিতে বাধ্য থাকবে । কিন্তু যদি ঘর বা বাসাবারি হয় সেক্ষেত্রে দুজন প্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষির উপস্থিতিতে পুলিশ সেখানে তল্লাশি করবেন । এছারাও ১০৩ ধারা অনুযায়ী পুলিশ কোন আবদ্ধ জায়গায় কোন কিছু পেলে তা তারা নির্ধারিত ফর্মে তালিকা করে নিবেন। এ ক্ষেত্রে তালিকার অতিরক্ত কিছু নিতে পারবেন না । আর পুলিশ সেই লিষ্টে কি কি লিখেছেন তা ভালো করে যাচাই করে নিবেন এবং উক্ত স্থানে উপস্থিত সাক্ষি ও মালিকের সাক্ষর করে নিতে হবে এবং সেই লিস্টের একটা কপি মালিককে দিয়ে যেতে বাধ্য থাকবে । যে বস্তুর সন্ধানে পুলিশ তল্লাশি করবেন উক্ত স্থানের আশেপাশেও পুলিশ তল্লাশি করতে পারবে । কোন ব্যাক্তি দেহে লুকিয়ে রেখেছে বলে সন্দেহ হলে পুলিশ তার দেহেও তল্লাশি করতে পারবেন । এরূপ ব্যাক্তি স্ত্রী লোক হলে ৫২ ধারার নির্দেশনাবলি অনুশরন করতে হবে ৫২ ধারা অনুযায়ী স্ত্রী লোককে অবশ্যই মহিলা পুলিশ দিয়ে দেহ তল্লাশি করতে হবে । সেখানে মহিলা পুলিশ না থাকলে স্থানীয় কোন মহিলা দিয়ে পূর্ন সালিনতার সহিত তার দেহ তল্লাশি করতে হবে । আর তা করতে হবে সাক্ষিদের উপস্থিতিতে । ফৌজদারি কার্যবিধি ১০৩ (১) ধারা অনুযায়ী তল্লাশি চালানোর আগে, প্রস্তুত অফিসার বা অন্যকোন ব্যাক্তি যে স্থানে তাল্লাশি চালানো হবে সেই এলাকায় দুই বা ততোধীক অধিবাসিকে তল্লাশিতে হাজির থাকা ও সাক্ষি হিসেবে আহব্বান জানাতে হবে ।
১০৩ ধারা অনুযায়ী সাক্ষিদের উপস্থিতিতে তল্লাশি চালাতে হবে । এ সময় উক্ত অফিসার বা অন্য কোন ব্যাক্তি তল্লাশির সময় জ্বব্দ কৃত সমস্ত জিনিস এবং যে জায়গায় ওই জিনিষ গুলি পাওয়া গেছে তার একটি তালিকা প্রস্তুত করবেন । সে তালিকায় উক্ত সাক্ষিরা সাক্ষর করবেন । বিশেষ ভাবে সমন জারি করা না হলে উক্ত সাক্ষিদের আদালতে উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন হবে না । কিন্তু তল্লাশি স্থানের দখল দার উপস্থিত থাকতে পারবেন । ১০৩ এর ধারা (৩) অন্যযায়ী তল্লাশির সময় তল্লাশিস্থানের দখলদার বা তার ক্ষেত্রে অন্য কোন ব্যাক্তিকে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে তল্লাসির সময় হাজির থাকার অনুমতি দিতে হবে ।
এধরনের নিয়ম কানুন না মেনে পুলিশ যদি আপনার ঘরে ঢুকতে চায় ? কিংবা তল্লাশি করতে চায়? তাহলে বুঝতে পারবেন তাদের ভিতরে হয়ত কোন অসৎ উদেশ্য আছে । সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে সচ্ছার হতে হবে প্রয়োজনে এলাকাবাসী অথবা পরিচিতজনদের সাহায্য চাইতে হবে ।
আমার পরামর্শ থাকবে যদি এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয় তাহলে সম্ভব হলে পূরো প্রক্রিয়া ভিডিও করে রাখবেন । একা থাকলে অবশ্যই বন্ধু-বান্ধব বা পরিচিতজনদের ফোন করে জানিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন । আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যতটুকু সম্ভব ভাল ব্যবহারের চেষ্টা করুন । সে সময় সম্ভব হলে তাদেরকে আপনি আপনার আইনি অধিকারের কথা স্মরণ করিয়ে দিন ।