আসসালামু আলাইকুম।।। সবাই কেমন আছেন??? আজকে আমি যে গল্পটি বলব সেটি সম্পূর্ণ কাল্পনিক বাস্তবের সাথে কোন মিল নেই। বেশি কথা না বাড়িয়ে সুজাসুজি গল্পে যাওয়া যাক।
পাশের বাড়ির জইতনের মা এর মোরগের ডাকাডাকিতে ঘুম ভাঙলো মজিদ ব্যাপারীর। তাড়াতাড়ি অজু করে ফজরের নামাজ সেরে নিল সে। মজিদ বেপারী ধানের কারবার আছে বাজারে। যাই হোক অযথা কথায় না যাই সরাসরি গল্পের দিকে যাওয়া যাক। নামাজ সেরে মসজিদ বেপারী ওর স্ত্রী কে বলল হাঁস-মুরগির ঘর খুলে দিতে। যাই হোক ঘর খুলে মজিদের বউ দেখে ওর ঘরের নতুন মেহমান এসছে সরি সরি মেহমান না সাতটি মুরগির বাচ্চা। বাচ্চা গুলো কি সুন্দর ছিল ওর মধ্যে একটি বাচ্চা তো আবার খোপা নাসি কিছুদিন আগে হাঁসের বাচ্চা গুলো উঠেছিল। কাহিনী মূলত এখান থেকে শুরু। ছোটবেলা থেকেই হাঁস মুরগির বাচ্চা অনেক সুন্দর ছিল পাশের বাড়ির জয়তুন বিবি প্রায়ই ওদের বাচ্চাগুলোকে কে কিনতে চাই তো। যাইহোক আস্তে আস্তে বাচ্চাগুলো বড় হয়। শিয়াল আর বেজির পেটে গেছে কয়েকটা। মুরগির এখন বাচ্চা মাত্র দুইটি আর হাসে একটি। মুরগির বাচ্চা দুটো অনেক সুন্দর ছিল আর হাঁসের কথা তো বলা চলবেনা।হাঁস মুরগির বাচ্চা গুলো একসাথে খেলা করতো । হাঁস পুকুরে নেমে পানি ছিটিয়ে দিত মুরগীদের গায়। আস্তে আস্তে বড় হয়ে উঠলো। মানুষ এর জীবনের যে রকম প্রেম আসে ওদের জীবনে হয়তো বা এসময়টা এসে গেল। যাই হোক হঠাৎ করেই হাঁসের বাচ্চাটি একদিন মুরগির বাচ্চা দুটির সামনে গিয়ে রোমান্টিক সেই হিন্দি গানটি গাইল ,,, মেনে আপনা দিল ইয়ে দে দিয়া এ বি না ছোঁচা কোন হো তুম, এ ফেসলা যো দিল নে কিয়া হে এভিন আচ্ছা কন হো তুম,,, হাঁসের গানটি শুনে তো মুরগির দুই মেয়ে পাগল হয়ে গেল। গল্পটি এভাবে এগোনো যাচ্ছে না সুতীরাং এদের নাম দেওয়া যাক। হাসের নাম হল রাজ্জাক। মুরগির মেয়েটির নাম হলো শাবানা এবং ববিতা।গল্পটি যেন আস্তে আস্তে পুর একটি মুভিতে পরিণত হচ্ছে। হাঁস রাজ্জাকের গানটি শোনার পর থেকে শাবানা এবং ববিতার কেমন কেমন লাগছিল। শাবানা এর বান্ধবী জয়তুনের মার মুরগি কবরী কে বলল হয়তোবা সে রাজ্জাকের প্রেমে পড়ে গেছে। অপরদিকে ববিতা কবরী এর ছোটবেলার বান্ধবী। সন্ধ্যাবেলা ববিতা কবরী কে কথা বলতে বলতে রাজ্জাকের কথা মনে হয় একটি গান গাইলো,,,,,, বন্দে মায়া লাগাইছে পিরিতি শিখাইছে দেওয়ানা বানাইছে রে কি জাদু করিয়া রাজ্জাক পাগল করেছে।।।।। সত্যি কথা বলতে কবরী দুই বোনের কথায় কিছু বুঝতে পারছিল না। তাই শুধু ওদের কথায় হা মিলে গেল। পরের দিন সকাল বেলা রাজ্জাকের সাথে প্রথম দেখা হয় শাবানার রাজ্জাক যাকে ভালোবাসতো। সত্যি কথা বলতে রাজ্জাক কে শাবানা ভালবাসলেও মুখে প্রকাশ করতে চাইল না। তাইতো সে রাজ্জাককে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করল কিন্তু রাজ্জাক তার পথ আটকালো। মুরগি শাবানা এবার বলল কি হয়েছে পথ কেন আটকাচ্ছে।রাজ্জাক বলল আমার প্রশ্নের উত্তর কিন্তু এখনো আমি পাইনি। এবার মুরগি শাবানা বলল রাজ্জাক তোমার এবং আমার জাতির মধ্যে অনেক তফাৎ আমরা কখনো এক হতে পারি না। এটা কখনোই সম্ভব নয় আমাদের সমাজ আমাদের প্রেম ভালবাসাকে কখনো মেনে নেবে না সুতরাং ওই দিকে না যাওয়া ভালো। এবার হাস রাজ্জাক বলল তোমাকে না পেলে আমার এই জীবন বৃথা। যে জীবনে তুমি নেই সে জীবন রেখে আমি কি করবো।শুনলাম ধানের জমিতে নাকি বিষ দিয়েছে আমি ওখানে গিয়ে এক্ষণি বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করব। মনের কষ্টে সে গান গাইতে লাগলো আমি জ্ঞান হারাবো মরেই যাব বাঁচাতে পারবে না কেউ।।।।
মুরগি শাবানা এবার আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না শাবানা এবার তার বিখ্যাত ডায়ালগ বলতে লাগলো,,,, না না আমার এ কথা শোনার আগে মরণ কেন হল না। এবার রাজ্জাক বুঝতে পারল মুরগি শাবানার কথা। এবার দুজন দুজনের হাত ধরে বটের গাছের নিচে বসে গাইতে লাগলো,,,,, কি জাদু করেছো বলোনা ঘরে আর থাকা যে হলোনা বুঝিনি কখন আমি হয়েছি তোমার,,,,,, ওইদিকে ববিতার কলিজা ফেটে যায় ওদের গান শুনে। ও সব ঘটনা তাল গাছের পেছোন থেকে দেখেছে । এবার মুরগি ববিতা হাঁস রাজ্জাক কে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,,, রাজ্জাক ও রাজ্জাক রে তুই অপরাধী রে আমার যত্নে গড়া ভালবাসা দে ফিরাইয়া দে আমার অনুভূতির সাথে খেলার অধিকার দিলো কে রাজ্জাক তুই বড় অপরাধী তোর ক্ষমা নাই রে।।।।
এই বলে ববিতা কান্না করতে করতে বাড়িতে চলে গেল এবং সব ঘটনা খুলে বলল তার আম্মুকে। মা মুরগি সব কথা শ
শুনে তো রেগে আগুন। সাথে সাথে ঝগড়া লেগে পরল হাঁস রাজ্জাকের মায়ের সাথে। যাই হোক ঝগড়ার মধ্যে হঠাৎ করে রাজ্জাক আর শাবানা বাড়িতে ঢুকলো। সাথে সাথে দুজনকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেল দুজনের বাবা-মা। সে দিন সারাটা দিন হাঁস আর মুরগির দেখা হয়না তাদের বাবা-মার কারণে। সুতরাং পথের ধারে মনের দুঃখে হাস বসে থাকে গান গাইতে লাগলো,, পথের পানে চেয়ে আছি গো আমি সখির দেখা পাইনা হাই গো দুটি চোখ আমার ব্যাকুল হয়ে আছে,,,,,,, এবার হাস রাজ্জাককে ওর মা বোঝাতে লাগলো অনেক কথা রাজ্জাকের জন্য পাগল নাকি ওর খালাতো বোন রাজহাঁসের মেয়ে রোজিনা। রাজ্জাককে নাকি রোজিনা ছোটবেলা থেকে ভালোবাসে। কিন্তু রাজ্জাক এর ক্রাশ তো শাবানার প্রতি আগে থেকেই ফিদা হয়ে আসে । সুতরাং সে কখনোই শাবানা ছাড়া অন্য কাউকে তার হৃদয়ে দিতে পারবে না জায়গা।
সুতরাং হাস তার মাকে পরিষ্কার করে বলে দিলে যদি কাউকে বিয়ে করতে হয় তবে সেটি শাবানা ছাড়া অন্য কেউ আর হতে পারে না। এদিকে মুরগি
অবস্থা খুব খারাপ ছিল। যাইহোক আস্তে আস্তে ওদের পরিবারের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি হল। প্রায় ঝগড়া লেগেই থাকত কিন্তু হঠাৎ একদিন কি যেন ভেবে হাঁস এবং মুরগির বাবা-মা একত্র হয় মিটিং করলে এবং ওদের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল। কিন্তু কি আর করার ওদের কপালে হয়তো এত সুখ সইল না। পরের দিন মজিদ বেপারী বাড়িতে পাত্রপক্ষ আসলো তার মেয়েকে দেখতে। হঠাৎ করে এসেছে ওরা না বলে। কি করার মজিদ বেপারী বাজারে গেছিল কিন্তু
কিন্তু সব দোকান বন্ধ থাকায় মাংস পায়নি। তাই জন্য মুরগিকে ধরে নিয়ে গেল তাও আবার মুরগির শাবানা। বাচ্চাকে কথা শোনার পর ছুটে আসলো। বুঝে ওঠার আগেই রাজ্জাককে ধরে ফেলল মজিদ বেপারী। দুজনকে টুপাই করে বেঁধে রাখল।
এখন রাজ্জাক শাবানা হাঁস-মুরগি দুইজন মিলে গান গাইতে লাগলো ,,,,,,, যদি এক দেহেতে ওই বিধাতা দিত বিধি দন আলাদা হইতাম না মোরা আজকে দুইজন, তবে তোমায় ভালোবাসিতাম।।।।।।গানটি বলতে বলতে ওরা চোখের পানি ফেলেছিল কিছুক্ষণের মধ্যেই মজিদ বেপারী ওদের দুজনকে জবাই করে ফেলল। মুরগি রোস্ট হয়ে বরের পেটে গেল। আর হাঁস তার মাংসের ভুনা দিয়ে খুশি করল বরের বাবাকে। অপরদিকে মুরগি ববিতা রাজ্জাক এ পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার শুনে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। যাইহোক হাঁস-মুরগি রাজ্জাক শাবানার প্রেম কাহিনী সফল না হলেও মসজিদ বেপারির মেয়ের বিয়ে কিন্তু হয়েছে।।।।।
ধন্যবাদ সবাইকে আমার গল্পটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য।।