আমরা জীবনে অনেক কিছুই হারিয়ে ফেলি। তখন আমরা মনে অনেক ব্যথা পাই। সেই হারানো বস্তু আমরা খুঁজে বেড়াই। কখনও সহজেই পেয়ে্ যাই। আবার কখনুও দীর্ঘ সময় লাগে খুজতে। অনেক ক্ষেত্রে সারা জীবনও খুঁজতে লাগে।
হারানো বস্তু ফিরে পাওয়ার পর মন তৃপ্ত হয়। জীবন থেকে হতাশা-দূর্দশা কেটে যায়। ফলে আমরা খুঁজে পাই জীবনের নতুন দিক। হারানো জিনিস খুজে না পেলে অনেক সময় আমাদের জীবনে নেমে আসে কঠিন অন্ধকার। ফিরে পাওয়ার পর জীবন আলোকিত হয়।
অনেক না্রী-পুরুষ চাকরি হারায়, ব্যবসা হারায়, সংসার হারায়, প্রিয়জন হারায়। সকল মানুষই জীবনে কিছু না কিছু হারায়। ফিরে না পেলে আমরা কখনও কখনও সহ্য করে নেই। জীবন তখন থেমে থাকে না। আপন গতিতে চলতে থাকে।
বিভিন্ন ভাবে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় নানান জিনিস অথবা টাকা-পয়সা হারিয়ে ফেলি। কখনও আমরা মনের ভুলে হারাই। আবার কখনও চুরি হয়ে যায় বা অন্য কেউ ছিনিয়ে নেয়। কেউ কেউ মজা করেও অন্যের জিনিস নেয়। অনেকে অবহেলা করে নিজের জিনিস হারিয়ে ফেলে। কেউ খামখেয়ালিপানা করেও অন্যের জিনিস নিজের করে নেয়। এভাবে হারানো ফিরে পাওয়ার মধ্যেই আমাদের জীবন অতিবাহিত হতে থাকে। আজ হারিয়ে যাওয়া জিনিস নিয়ে কয়েকটি ঘটনা লিখলাম।
আমি যখন স্কুলে পড়ি তখন গ্রামের বাড়িতে বন্ধুদের সাথে নদীতে গোসল করার সময় আমার হাতের স্বর্ণের আংটি টি পানিতে পড়ে যায়। এতে আমার মনটা একটু খারাপ হয়ে যায়। আবার বকা দিবে সেই চিন্তাও হয় মনে। একটু পর আমার এক বন্ধু খুঁজতে খুঁজতে পানিতে কাঁদার মধ্যে আটকে থাকা আমার আংটি টি পেয়ে যায়। এতে আমি এতোটাই খুশি হয়েছিলাম যে আজও ঘটনাটি ভুলিনি।
আমার ভাইয়ের বিয়ের পর আমরা সবাই দিনাজপুর ওর শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার জন্য ভোর ছয়টায় বাসা থেকে রওনা দিলাম। আমি আর ভাবির বোন লিয়া একটি রিকশায় উঠি। লিয়ার ভ্যানিটি ব্যাগে অনেক স্বর্ণ ছিল। হঠাৎ করে একজন ছিনতাইকারী এসে ব্যাগটি দ্রুত ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। এতে আমাদের সবার মন ভীষণ খারাপ হয়। লিয়াকে সান্ত্বনা দেওয়া ছাড়া ঐ মুহূর্তে কিছুই আর করার ছিল না।
আমার পরিচিত একজন নিজের শিশুর গুঁড়া দুধের কৌটাটি ভুল করে আলমারিতে রেখে দেয়। পুরো বাড়ি খুঁজে যখন পায় না তখন গৃহকর্মীকে দায়ী করে। এতে গৃহকর্মী কান্নাকাটি করে কাজ ছেড়ে চলে যায়। তখন পরিবারটির কষ্ট হয়। একদিন আমার গৃহকর্মীটি কাজ শেষ করে যাওয়ার সময় আমার মোবাইল ফোনটি চুরি করে নিয়ে চলে যায়।
আমার স্বামী তিনটি মোবাইল ফোন রাস্তায় হারিয়ে ফেলে পরপর। আমার পরিচিত একজন অভিভাবক বললেন যে, স্কুলের বাৎসরিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তাহার ছেলে স্কুলের নতুন জুতা জোড়া হারিয়ে ফেলেছে ফলে অবশিষ্ট পুরানো জুতা জোড়া পড়ে বাসায় ফেরে। ওর মা সেই পুরানো জুতা এক বৎসর রেখে দেয়। যেন পরবর্তী অনুষ্ঠানে ছেলেটি পুরানো জুতাগুলো ফেলে নতুন এক জোড়া জুতা পড়ে নিয়ে ফিরে। হারিয়ে যাওয়া কোনো জিনিস এভাবে খুঁজে পাওয়ার ঘটনা বিরল।