প্রতিদিনই কিছু না কিছু রেকর্ড হয়েছে। প্রতিটি ম্যাচেই কিছু কিছু ইতিহাস লেখা হয়েছে। আরেকটা হোয়াইটওয়াশের ইতিহাস রচিত হয়ে গেলো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশের মধ্য দিয়ে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, দীর্ঘ বিরতির পর মাঠে নেমে বাংলাদেশের পারফর্মেন্স হতাশ করেনি দর্শকদের। সেই সাথে খেলোয়াড়দের অনেকখানি আত্মবিশ্বাস বেড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই ওয়ানডে সিরিজের পর। সিরিজ জয় তো আগেই নিশ্চিত হয়ে গেছিলো। এখন তৃতীয় আন্তর্জাতিক ম্যাচটি জিতে ক্যারিবীয়দের হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশী টাইগাররা। এই ম্যাচটি দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টানা আটটি এক দিনের ম্যাচ জয়ের রেকর্ড হয়েছে বাংলাদেশের।
যদিও মাঠে তেমন দর্শক ছিলো না। খেলায় এখনো আগের মতো উত্তেজনা ফেরেনি। কিন্তু খেলোয়াড়দের পারফর্মেন্স অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। সাকিব ৫১, তামিম ৬৪, মুশফিক ৬৪ এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদও ৬৪ রান করেন। টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় স্বাগতিকরা এবং ৫০ ওভারে দলীয় সংগ্রহ ছিলো ৬ উইকেট হারিয়ে ২৯৭ রান। চারজন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান ব্যক্তিগত ইনিংসে অর্ধশতকের বেশি রান করেন। এতে ক্যারিবীয়দের সামনে ২৯৮ রানের বিশাল লক্ষ্য দাঁড়ায় এবং ১৭৭ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীদের ইনিংস। ১২০ রানের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচটি জিতে নেয় বাংলাদেশ।
ক্যারিবীয় ইনিংসে ব্যাটিং চলাকালীন ৭ রান তুলতেই জুটি ভেঙ্গে প্রথম উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান। এরপর সাকিব, সাইফুদ্দিন, মেহেদী, সৌম্য, তাসকিনরা মিলে ঐ ইনিংস আর বেশিদূর এগোতে দেননি। শেষ উইকেটটি নেন তাসকিন আহমেদ। কোনো জুটিই খুব বেশি স্থায়ী হতে দেননি বাংশাদেশি বোলাররা। বাংলাদেশের স্কোর ভালো ছিলো এবং দলীয় পারফর্মেন্সও ভালো হয়েছে। কিন্তু দুটো বিষয় দর্শক এবং সমালোচকদের সমালোচনার মুখে পড়েছে। প্রথমত ওপেনার লিটন দাসের রান শূন্য অবস্থাতেই এলবিডব্লিউ এর ফাঁদে পড়ে আউট হওয়া এবং দ্বিতীয়ত সৌম্য সরকারের সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাট করতে নামা। রান তুলতে বেশ কয়েকটি বল খরচ করতে হয়েছিলো সৌম্যকে যা মিডল বা লোয়ার মিডল অর্ডারে খেলতে নামা ব্যাটসম্যানরা সাধারণত করতে পারেন না। পরে রান আউট হন সৌম্য। দ্রুত অর্ধশতক তুলে ব্যক্তিগত ৬৪ রানে সাইফুদ্দিনকে নিয়ে ইনিংস শেষ করেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তার শেষদিকের ব্যাটিংও প্রশংসা পেয়েছে এবং দলকে একটা বড় অঙ্কের রানের সংগ্রহ এনে দিয়েছে।
ব্যক্তিগত ৬৪ রান এবং ৪টি ক্যাচ নিয়ে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ হন মুশফিকুর রহিম। উইকেটের পেছনে তার পারফর্মেন্স পুরো সিরিজ জুড়েই প্রশংসনীয় ছিলো। আর ম্যান অব দ্যা সিরিজের খেতাব পেয়েছেন তিন ম্যাচে মোট ১১৩ রান এবং ৬ উইকেট নেয়া সাকিব আল হাসান। এছাড়া ব্যাটসম্যানদের মধ্যে ওপেনার তামিম ইকবাল তিনটির মধ্যে দুটি ম্যাচেই অর্ধশতকের ঘর পেরিয়েছেন এবং সাকিব, মুশফিক, রিয়াদের পারফর্মেন্সও প্রশংসনীয় ছিলো। আর বোলারদের মধ্যে সাকিব আল হাসান ছাড়াও মুস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, মেহেদী হাসান মিরাজ দারুণ পারফর্ম করেছেন।
সর্বোপরি একটা চমৎকার সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল। খেলোয়াদের ব্যক্তিগত পারফর্মেন্স, দলীয় পারফর্মেন্স, ছন্দ, সমন্বয় সব কিছুতেই এই সিরিজে অসাধারণ তকমা পাবার দাবি রাখতেই পারে টাইগাররা!