সুপ্রিয় দর্শক মন্ডলী আসসালামুয়ালাইকুম!
কেমন আছেন আপনারা? আশা করি আল্লাহ তায়ালার রহমতে সকলে ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।
:::::::::::::» প্রশ্ন ॥ ৮৩।:::::::::::::::
ফাহিম নিয়মিত নামাজ আদায় করে। আবার নিয়মিত মিথ্যাও বলে। তার অবস্থা দেখে বন্ধু নাঈম তাকে বলল, তুমি মনযােগ দিয়ে নামাজ পড়ােনা। হক আদায় করে নামাজ আদায় করলে তুমি অন্যায় থেকে বাঁচতে পারতে।
(ক). تصنعون শব্দের অর্থ কী?
(খ). المنكر বলতে কি বুঝায়?
(গ). নামাজ আদায় করা সত্ত্বেও ফাহিমের নামাজ হয় না এটি কোন আয়াত ও হাদিস থেকে বুঝা যায়, বর্ণনা কর।
(ঘ). বন্ধু নাঈমের উপদেশ ফাহিমের অন্য যথেষ্ট কিনা? কুরআন ও হাদিসের আলােকে বিশ্লেষণ কর।
:::::::::::::::::৮৩ নং প্রশ্নের উত্তর::::::::::::::
(ক). تصنعون শব্দের অর্থ- তােমরা বানাও, তোমরা করাে।
(খ). المنكر শব্দের অর্থ- অন্যায় ও গর্হিত কাজ। পরিভাষায় মুনকার বলতে ঐ সব কাজকে বুঝানাে হয় , যা হারাম ও অবৈধ। হওয়ার ব্যাপারে শরিয়ত বিশারদগণ একমত ।المنكر- এর মধ্যে যাবতীয় অপরাধ এবং প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য গুনাহের কাজ অন্তর্ভুক্ত, যা নিঃসন্দেহে মন্দ এবং যা সত্যের পথে সর্ববৃহৎ বাধা।
(গ). নামাজ আদায় করা সত্ত্বেও ফাহিমের নামাজ হয় না। এটা সুরা আনকাবুত – এর ৪৫ নং আয়াত এবং ইমরান ইবনে হােসাইন ( রা ) বর্ণিত হাদিস থেকে বােঝা যায়।
*উল্লিখিত আয়াত ও হাদিসের মর্মানুযায়ী যে ব্যক্তি মনােযোগসহ নামাজ কায়েম করে, সে আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনাআপনি সৎকর্মের তাওফিকপ্রাপ্ত হয় এবং যাবতীয় গুনাহ থেকে বেচে থাকার শক্তি পায়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি নামাজ পড়া সত্ত্বেও গুনাহ থেকে বেচে থাকে না, বুঝতে হবে যে, তার নামাজের মধ্যে ক্রটির কারণে নামাজ হয় না। এ ব্যাপারে কুরআন মাজিদের আয়াত হচ্ছে-
অর্থাৎ, এবং সালাত কায়েম করুন। সালাত অবশ্যই বিরত রাখে অশ্লীল ও মন্দ কাজ হতে। আর এ ব্যাপারে হাদিস হচ্ছে , ইমরান ইবনে হােসাইন ( রা ) হতে বর্ণিত , রসুল ( স ) ইরশাদ করেন- من لم تنهاه صلاته عن الفحشاء والمنكر فلا صلاة له-
(ঘ). বন্ধু নাঈমের উপদেশ ফাহিমের জন্য যথেষ্ট।
কুরআন ও হাদিসের বর্ণনা থেকে জানা যায়, নামাজ অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে এবং যে ব্যক্তি নামাজ পড়া সত্ত্বেও গুনাহ থেকে। বেঁচে থাকে না, বুঝতে হবে যে, তার নামাজ হয় না।
**উদ্দীপকে উল্লিখিত নাইম তার বন্ধুকে যথাযথ উপদেশ দিয়েছে বিধায় তার সাথে আমি একমত। এ বক্তব্যটির মাধ্যমে শরয়ি মাসয়ালা মাসায়েলের ব্যাপারে তার পাণ্ডিত্য প্রকাশ পেয়েছে। তার বক্তব্যটি কুরআন ও হাদিসের বক্তব্যের সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ। কুরআন ও হাদিসের বিভিন্ন বর্ণনা নাইমের মন্তব্যটিকে সমর্থন করছে।
যেমন কুরআন মাজিদে এসেছে , আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন “ আর তুমি নামাজ কায়েম কর। কেননা নিশ্চয় নামাজ যাবতীয় অশ্লীল ও গর্হিত কাজ থেকে বিরত রাখে। নামাজের আনুগত্য বলতে অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত রাখে। নামাজের আনুগত্য বলতে অন্যায় ও অশ্লীল কাজ থেকে বিরত থাকার কথা বােঝানাে হয়েছে। অন্য একটি হাদিসে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে। আব্বাস ( রা ) হতে বর্ণিত , তিনি বলেন , যার নামাজ তাকে সৎকাজ করতে এবং অসৎ কাজ হতে বেঁচে থাকতে উদ্বুদ্ধ করে না , তার নামাজ তাকে আল্লাহ থেকে আরাে দূরে সরিয়ে দেয়। সুতরাং উল্লিখিত আলােচনা থেকে একথা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। যে , যে ব্যক্তি একাগ্রচিত্তে নামাজ কায়েম করে, সে আল্লাহর পক্ষ থেকে আপনাআপনি সৎকর্মের তাওফিকপ্রাপ্ত হয় এবং যাবতীয় গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার শক্তি পায়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি নামাজ পড়া সত্ত্বেও গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে না , বুঝতে হবে যে, তার নামাজ হয় না। অতএব উদ্দীপকে বর্ণিত ফাহিমের নামাজও এ ধরনের হওয়ায় তার ব্যাপারে তার বন্ধু নাইমের মন্তব্য যথার্থ।
আসা করি আপনারা সকলে বুঝতে পারছেন।
****হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন মাক্স পড়ুন এবং নিরাপদ থাকুন সামাজিক ডিসটেন্স বজায় রাখুন।