অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ-
‘আমরা কি উৎপাদন করব? উৎপাদনে কি প্রযুক্তি ব্যবহার করব? উৎপাদিত পণ্য কাদের জন্য প্রযোজ্য? –
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর প্রদানই হচ্ছে একেক দেশের একেক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রধান কাজ এ সম্পর্কে ৩০০ শব্দের মধ্যে একটি প্রবন্ধ লিখ।
সংকেত- সূচনা, বিভিন্ন অর্থ ব্যবস্থার বর্ণনা, বিভিন্ন অর্থব্যবস্থার মধ্যে তুলনা, উপসংহার।
উত্তর-
একটি দেশের অর্থব্যবস্থার কেমন হবে এবং কিভাবে তাদের অর্থনৈতিক কার্যাবলি পরিচালিত হবে তা নির্ভর করে সেদেশের জনগণের জীবন যাত্রার মান ও আর্থিক কার্যাবলি উপর। আমরা জানি অর্থনীতি হচ্ছে চয়ন বা নির্বাচনে বিজ্ঞান। এটা আমরা শিখেছি যে অর্থনীতি সীমিত সম্পদ ব্যবহার করে সর্বোচ্চ কল্যাণ সাধনের জন্য সঠিক পথ বাছাইয়ের জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা চালায়। বিভিন্ন অর্থ ব্যবস্থার তুলনা-
১/ ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা-যে অর্থব্যবস্থা ব্যক্তি মালিকানা নির্ভর করে গড়ে উঠে তাকে ধণ-তান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা বলে। ধনতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য –
১/সম্পদের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত।
২/ একজন উদ্যোক্তা ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন।
৩/ এই অর্থব্যবস্থায় প্রতিযোগিতা হয়।
৪/শ্রমিকরা নানাভাবে শোষিত হয়।
৫/ ভোক্তার স্বাধীনতা পরিলক্ষিত হয়।
৬/ উদ্যোক্তা সর্বোচ্চ মুনাফা অর্জন করেন।
২/ সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা-
যে অর্থব্যবস্থা দেশের জাতীয় সম্পদের মালিকানা রাষ্ট্রীয় মালিকানায় থাকে তাকে সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা বলে।
সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য-
১/ সম্পদের মালিকানা প্রতিষ্ঠিতত।
২/ রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ থাকে বিধায় অবাধ প্রতিযোগিতা দেখা যায় না।
৩/ভোক্তা স্বাধীনতার অস্তিত্ব নেই।
৪/ শ্রমিক শোষণ তুলনামূলক কম
৫/উদ্যোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত
সমাজতন্ত্রে ব্যক্তি মুনাফা অনুপস্থিতি বিদ্যমান
৩/ মিশ্র অর্থব্যবস্থা-
সমাজতান্ত্রিক ও ধনতান্রিক অর্থব্যবস্থার সমন্বয় এ যে সম্পর্ক গড়ে উঠে তাকে মিশ্র অর্থব্যবস্থা বলে। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই এই অর্থ ব্যবস্থা প্রচলিত।
এর বৈশিষ্ট্যসমূহ-
১/সম্পদ এ ব্যক্তি ও সরকারি মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত
২/ মিশ্র অর্থব্যবস্থা উৎপাদন, ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে, ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিচালিত হয়
৩/ভারী শিল্প ও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়
৪/ ইসলামী অর্থব্যবস্থা- ইসলামী শরীয়তের উপর ভিত্তি করে যে অর্থব্যবস্থা পরিচালিত হয় তাকে ইসলামী অর্থব্যবস্থা বলে।
এর বৈশিষ্ট্য –
১/ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের উপর প্রতিষ্ঠিত।
২/ ঋণের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা প্রচলিত।
৩/এই অর্থব্যবস্থায় যাকাত ব্যবস্থা রয়েছে।
অর্থ ব্যবস্থার তুলনামূলক আলোচনা-
বর্তমান সময়ে মিশ্র অর্থব্যবস্থা বেশি জনপ্রিয়।ধনতন্র ও সমাজতন্ত্র অর্থব্যবস্থার সংমিশ্রনে অর্থ ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। ধনতন্র যাকে আমরা মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ বলতে পারি। এইসব অর্থব্যবস্থা বাদে ইসলামী অর্থব্যবস্থা আলাদা বৈশিষ্ট্য বহন করে। তবে যেসব দেশে উৎপাদন করা হবে, উৎপাদন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে এবং উৎপাদিত পণ্য কাদের জন্য প্রযোজ্য হবে তার উপর নির্ভর করে এসব অর্থব্যবস্থার নির্ধারণ করা হয়।
উপসংহার-
ইসলামিক সমাজতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা কারণে একে অপরের ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে অর্থনীতিতে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা পরিমাণ মাত্রাতিরিক্ত আবার সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি তা খুবই সংকীর্ণ। ইসলামী অর্থব্যবস্থা একটি তন্তুীয় অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যা অর্থনীতিকে কাম্য স্তরে সীমিত করে।
ধন্যবাদ সকলকে।