মানুষ মাত্রই অনুভূতিশীল। মানুষের অনুভূতিগুলো খুব সহজেই প্রকাশ পায় তার আচরণে। রাগও এরকম একটি অনুভূতি। মানুষের রাগ থাকাটা স্বাভাবিক, বরং না থাকাটাই অস্বাভাবিক। অনেকেই কারণে অকারনে নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে রেগে যান। রাগের মাথায় অনেকে উল্টাপাল্টা কাজও করে থাকেন, যাহাতে তার নিজের কোন নিয়ন্ত্রণ থাকেনা। অতিরিক্ত রাগ স্বাস্থ্যের ও সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। রাগের মাথায় কোন কাজ বা সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তার ফল বিরুপ হতে পারে। যারা এই রাগ নিয়ে চিন্তিত, তাদের জন্য এই পোস্ট।
আসুন জেনে নেই কিভাবে রাগ নিয়ন্ত্রণ করবেন।
- চুপ থাকুনঃ অনেকেই রেগে গেলে অনেক উল্টাপাল্টা কিছু বলে থাকেন, যার জন্য পড়ে আফসোস করতে হয়, রেগে গিয়ে বেফাস কথা বলার উদাহারণ আমাদের দেশে অনেক আছে। তাই যখনই মনে হবে আপনি রেগে গেছেন, তখনি চুপ হয়ে যাবেন। তাহলে আর বিপদে পড়তে হবেনা।
- ক্ষমাঃ ক্ষমা করতে শিখুন। রাগ নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে বড় উপায় হচ্ছে ক্ষমা করা। ক্ষমা করে দিন ও ভুলে যান। ক্ষমা যদি করতে পারেন, তাহলে আপনার আর তার প্রতি রাগ থাকবেনা।
- ব্যায়াম করুনঃ নিয়মিত ব্যায়াম ও বিশ্রাম নিন। জোরে নিঃশ্বাস নিতে চেস্টা করুন। যদি মনে করেন রেগে যাচ্ছেন,তখন জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিন। এতে রাগ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসবে।
- ভালো শ্রোতা হনঃ বলেন কম, শুনেন বেশী, সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনুন। কথার মাঝখানে কাউকে থামিয়ে দিবেন না। অনেক সময় পুরো কথা না শুনেই রেগে যাই আমরা। এটা খুবই খারাপ একটি অভ্যাস।
- পারিপার্শ্বিক দিক যাচায় করুনঃ যদি কোনো ব্যক্তির ব্যবহারে আপনি রাগান্বিত হন। তবে আপনি তার দিক থেকে একটু ভেবে দেখুন। কোন প্রেক্ষাপটে তিনি এমন ব্যবহার করলেন সেটা অনুভাবন করুন। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েই মানুষ ভালো কিছু করে। যে বিষয়ে বা ব্যক্তির কারণে আপনে রেগে গেছেন তার কোনো মজার দিক নিয়ে ভাবুন। অতঃপর রেগে গেলে আপনার অভিব্যক্তি কেমন হাস্যকর দেখায় তা কল্পনায় দেখুন। তুচ্ছ বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে না দেখাই ভালো।
- নিজের দুর্বলতা সম্পর্কে জানুনঃ যে ব্যক্তি বা বিষয়গুলোতে আপনিকে রেগে যেতে পারেন সেগুলোর একটা তালিকা নিজে নিজেই তৈরি করুন। সেই বিষয়গুলো থেকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।
- আপন মানুষের সাহায্য নিনঃ আপনার আপনজনের সাহায্য নিন। হতে পারে স্ত্রী/স্বামী, বন্ধু,আত্মীয় বা পরিবারের সদস্য। তাদের কাছে আপনার হঠাৎ রেগে যাওয়ার কথা শেয়ার করুন। তাদের কোথা শুনে সমাধান পেয়েও যেতে পারেন।
- অন্যদের নিয়ে ভাবনা বাদ দেনঃ অন্যদের নিয়ে চিন্তা ভাবনা বাদ দেন। অন্যরা আমাদের নিয়ে কি বলল না বলল তা নিয়ে অনেক সময় আমরা বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ি। এ ছাড়া কারণে-অকারণে মানুষকে সন্দেহ করতে শুরু করি। এর ফলে আমাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়। সেটা নিজেও বুঝতে পারেনা।
- সম্মান করতে শিখুনঃ মানুষকে সম্মান করতে শিখুন, সবার প্রতি আগ্রহশীল হন। অন্যদের সম্মান দিন ও তাদের চাওয়া পাওয়ার কথার প্রতি গুরুত্ব দিন। তাহলে অন্যরাও সম্মান দেবে আপনাকে।
মনে রাখবেন, রেগে গেলেনতো হেরে গেলেন। তাই সুখী হতে চাইলে রাগ পরিহার করতে শিখুন।