রায়হান রায়হান কিরে রায়হান এই রায়হান ওঠ তারাতাড়ি, কলেজ যাবি না।
আরে মা আর একটু ঘুমাতে দাও না।
৮:৪৪ বাজে।
কী? ৮:৪৪ বাজে আর তুমি আমাকে এখন ডাকতেছ।
আমি তারাতাড়ি বিছানা থেকে উঠে ফ্রেস হলাম। আর তারাতাড়ি করে রেডি হয়ে কলেজ ব্যাগ নিয়ে একটু নাস্তা করে দৌড় দিলাম।তারপর একটা রিক্সায় উঠলাম।
যতক্ষনে যাচ্ছি ততক্ষণে আমার পরিচয় দিয়ে নেই।
আমার নাম রায়হান।আর একটু আগে যে আমাকে ঘুম থেকে তুলে দিলেন তিনি আমার মা।আমার মায়ের নাম নাজমা চৌধুরী।আর আমার বাবার নাম মি. শরিফুল চৌধুরী।আর আমি বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। আমাদের
বাসা দুই তালা।আর সুন্দর একটি ছাদ আছে আমাদের।
আমি প্রায় রাতে ছাদে যাই। রাতের আকাশ দেখতে অনেক সুন্দর লাগে।
আমি পড়ালেখায় তেমন ভালো না।তবে যে একেবারে খারাপ তাও না। মাঝামাঝি আর কী।
কলেজ এসে গেছি।ভাড়া দিয়ে কলেজ মাঠে প্রবেশ করলাম।
ক্লাসমেট: কিরে বোকা এদিকে আয় আড্ডা দেই।
আমি কথা না বলে সোজা ক্লাস রুম গেলাম।
যারা আমাকে বোকা বললো তারা আমার ক্লাসমেট।
আমি পড়াশোনায় ভালো ছিলাম না কিন্তু আমি খুব ভদ্র টাইপের ছিলাম। আমি কখনো কারো সাথে খারাপ আচরণ করিনি কখনো আমি ঝগড়া মাড়ামাড়ি তে যাইনি কখনো রাতে কথাও আড্ডা দেয়নি কোনো মেয়ের দিকে তাকাই নি।আর এসব সম্ভব হয়েছে আমার বাবা মায়ের কারনে। একটা বাস্তব কথা বলি যে পরিবারে মা একটু সচেতন হয় সে পরিবারের ছেলে-মেয়ে ভদ্র হয়।( I Love My Family.)
আর এ জন্য তারা আমাকে বোকা বলছিল।
ওসব কথা বাদ।
স্যার ক্লাসে আসতেছে।
আসসালামুয়ালাইকুম স্যার। কেমন আছেন?
স্যার: অলাইকুম আসালাম তোমার সবাই কেমন আছো।
আমার: ভালো আছি স্যার।
সবাই বসে পড়ো।
সবাই বসে পড়লাম।
তোমাদের সাথে আজ একজন নতুন জোগ দিবে।
তার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতেছি।
এদিকে আসো।
দেখলাম একটা মেয়ে আমি চোখ নামিয়ে নিলাম।
এর সাথে তোমাদের পরিচয় করিয়ে দেই।এর নাম লামিয়া আক্তার।আর এর বাবা একজন বিজনেসম্যান।এরা বরিশাল থেকে এখানে এসেছে। তোমারা তোমাদের নাম এক এক করে বল।
সবাই সবার পরিচয় দিতেছে।আমি লাস্ট বেঞ্চে বসে ছিলাম।
ও তোমাদের তো আমার বাসা কলেজ
সম্পর্কে কিছুই বলা হয়নি।
আমার বাসা ঢাকার
আর আমাদের কলেজ নাম
রায়হান এই রায়হান
জি জি স্যার কি ভাবতেছিলে
কিছু না স্যার
তোমার পরিচয় দাও।
আমি মাথা নিচু করে বললাম।
আমার নাম রায়হান।
তারপর বসে পরলাম।
স্যার ছেলেটার কি সমস্যা নাকি।
এ কথা শুনে সবাই হাসতে লাগলো।
সাবাই চুপ।
না ও ওরকমি মেয়েদের দিকে তাকিয়ে
কথা বলতে কখনো দেখিনি।
ওওওওও।
যাও বসো।
আরে এ মেয়ে তো দেখি আমার এখানে আসতেছে।
আমার ডান সাইটের সিটে বসে পড়লো।
স্যার ক্লাস শুরু করলেন ক্লাস বেশিক্ষণ চললো না।তাতেই বেল পড়ে গেল।আমি ক্লাস থেকে বেরিয়ে মাঠে
গেলাম। তারপর বাকি ক্লাসগুলো করে বাসায় ফিরলাম।
বাসায় এসে বেল বাজালাম মা দরজা খুললো।
খাবার রেডি করো আসতেছি।
তারপর উপরে গিয়ে গোসল করে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসলাম। খাওয়া দাওয়া করে আবার উপরে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
ঘুম থেকে উঠলাম।উঠে দেখি ৬ টা বাজে। তারপর নিচে গেলাম গিয়ে আমার চোখ কপালে। আমাদের কলেজে যে মেয়েটি নতুন ভর্তি হয়েছে সেই মেয়েটি আর আমার খালা আমাদের বাসায় সোফায় মায়ের সাথে গল্প করতেছে।
আমি সোফার কাচে গিয়ে বললাম
খালা কখন আসলেন।
এইতো গতকাল আসছি।
মানে তুমি গতকাল আসছো আর আমি জানতেই
পারলাম না।
আসলে তোর খালা খালু দুজনেই গতকাল রাতে
আমাদের এখানে এসেছে।আর তারা এখন থেকে আমাদের বাসায় থাকবে। আচ্ছা মা ওকে তো চিনলাম না।
আরে ও তোর খালার মেয়ে।ওর নাম..
থাক জানি।
ও তোদের তো কলেজে দেখা হয়েছে।
হুম।
খালা আপনার ছেলে মনে হয় খুব ভদ্র।
কলেজে পরিচয় দেওয়ার সময় মাথা নিচু করে ছিল।
বলে হাসতে লাগলো।
আচ্ছা মা আমি একটু ঘুরে আসি।
আমিও যাব।
যা ঘুরিয়ে নিয়ে আয়।
কোনো কথা বললাম না।
একসাথে বের হলাম।
অনেকক্ষণ ধরে হাঁটতেছি কেউ কারও সাথে কথা বলিনি।
শুধু হাঁটতেছি।
আচ্ছা আপনি পড়ালেখা ছাড়া আর কিছু করেন না?
না বললাম?
আবার কথা অফ।
আবার কিছুক্ষণ পর সে বললো
আপনি এত ভিতু কেনো?
মানে
মানে আপনি মেয়েদের দেখলে ভয় পান কেনো?
আপনাকে কে বললো আমি ভিতু।
না আপনি মেয়েদের সাথে কথা বলেননা মেয়েদের কাছে আসেন না এজন্যই বললাম।
কিছু বললাম না। চলুন বাসা যাই।
তারপর বাসার দিকে হাঁটা শুরু করলাম।
বাড়ি ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গেল।
বাসায় এসে খাওয়া দাওয়া করে ছাদে গেলাম।
ছাদে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি।
Hi
কে ?
আমি
ও আপনি হঠাৎ ছাদে।
কেনো ছাদে আসা যাবেনা।
আমি আবার কখন বললাম ছাদে আসা যাবেনা?
বলেননি!কথা শুনে এরকম মনে হল।
আচ্ছা বাদ দিন।কি করেন ছাদে?
কিছুনা আকাশের দিকে তাকিয়ে আছি ভালো লাগে।
ওম আমিও একটু দেখি।
তারপর আমার পাশে এসে বসলো।
আমার গা কেঁপে উঠলো।কারণ কোন দিন কোনো মেয়ের পাশে এত কাছে বসিনি।
কিছুক্ষণ থেকে চলে গেল।
আমিও কিছুক্ষণ পর গিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
এই উঠেন কলেজ যাবেন না।
আরে মা একটু পরে উঠি।যাও তো আর একটু ঘুমাই।
আমি আপনার মা না।
ঘুম ঘুম চোখে উঠলাম।
আরে আপনি, sorry sorry আমি মনে করেছিলাম মা আসছে।
প্রতিদিন আপনার মা আপনাকে ডেকে দেয় বুঝি?
হুম। কয়টা বাজে ৮:০০।
আমি ফ্রেস হয়ে কলেজ এর জন্য রেডি হলাম।
তারপর খাওয়া-দাওয়া করে রিক্সায় উঠলাম।
আমিও যাব ?
কিছু বললাম না। উঠুন।
তারপর কলেজ গেলাম।রিক্সা থেকে নেমে কলেজের মাঠ
প্রবেশ করলাম।
ক্লাসে সে আমার পাশে বসলো।
তারপর ১ম ক্লাস করে বাইরে আসলাম।
বাইরে আসার পর ক্লাসমেটরা বলে উঠলো।
কিরে ভাই তুই না সাদা ছিলি একদিনেই সাদা থেকে রঙিন হয়ে গেলি।
আরে তোরা কি আবল তাবল বলতেছিস আমি তো
কিছুই বুঝতেছি না।
মেয়েটাকে কবে পটাইলি।
মানে
মানে তুই বলবি।
আরে ও আমার খালাতো বোন পরশু আমাদের বাসায় আসছে এখন থেকে আমাদের বাসায় থাকবে।
ও তোর খালাতো বোন।হাহাহা…
আমি দেখলাম ও আমাদের সব কথা শুনে ফেলছে।
তারপর সব ক্লাস করে বাসায় এসে ফ্রেস হয়ে ছাদে গেলাম।
ছাদে গিয়ে দেখি ও আগে থেকে ছাদে।
হঠাৎ ছাদে
হুম ছাদে আচ্ছা তোমার ফ্রেন্ডরা কি বলছিল?
কই কিছু বলেনি।
খালাতো বোন না বলে গালফ্রেন্ড বলতে পারতে।
খালাতো বোনের কথা শুনে আমি তো অবাক।
কি বললেন।
আপনি কি কানে শুনেন না।
এটা সম্ভব না।
কেনো?
কেনো মানে আমি ভালোবাসা টাসা কিছু বুঝিনা।
আমি বুঝিয়ে দিব।
না লাগবে না আমি আমি গেলাম।
খালা খালা।
আপনি মাকে ডাকতেছেন কেনো?
মা সেখানে আসলো।
কি হয়েছে মা। আপনার ছেলে আমাকে ভালোবাসে আর আমি তাকে ভালোবাসি।
মা ও
আরে আগে বলবি তো।
তারপর মা আমাকে বললো।
তুই আমাকে আগে বলিসনি কোনো।
আরে মা।
আমি আজকেই তোর বাবার সাথে কথা বলবো।
বলেই মা চলে গেল।
কি হল এটা। আপনার সমস্যা কি।আমি আপনাকে ভালোবাসতে পারবোনা।
কেনো অন্য কাউকে লাভ করেন।
না।
তাহলে। I Love You
সেখান থেকে আমি ঘরে চলে আসলাম।
রাতে খাবার টেবিলে গেলাম।
।খাওয়ার সময় বাবা বললো। সেখানে সবাই ছিল।
কি রায়হান তুমি নাকি লামিয়া কে ভালোবাসো।
কে বললো?
তোর মা।
মাকে লামিয়া তখন মিথ্যা বলছে।আমি লামিয়া কে ভালোবাসি না।
লামিয়া কেনো মিথ্যা বলবে?
সেটা লামিয়াকে জিঙ্গাসা করে।
লামিয়া ও কি বলতেছে সব।
আসলে ও ঠিক বলতেছে আমি তখন খালাকে মিথ্যা বলেছি।আমি রায়হানকে ভালোবাসি।
সমস্যা কি তোমার আর রায়হান এর বিয়ে সামনের মাসেই
হবে।কথা ফাইনাল।
আমি খাবার টেবিলে থেকে উঠে ঘরে চলে আসলাম।
আমার পিছন পিছন লামিয়াও আসলো।
তুমি এ বিয়েতে রাজি না।
না।
আচ্ছা আমি খালুর সাথে কথা বলে বিয়ে ক্যানসেল করতেছি।
আমি কিছু বললাম না।
সে কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে চলে গেল।
আমি ঘুমিয়ে পড়লাম।
আজ সকালে কেউ ডাকেনি ঘুম থেকে উঠে দেখি ৯টা পার
হইছে।আমি তারাতাড়ি বিছানা থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নিচে এসে মাকে বললাম।
মা লামিয়া কোথায় ওযাবেনা।
লামিয়া অনেক আগে গেছে।
ও আমার জন্য অপেক্ষাও করলো না।
তারপর আমি একাই কলেজ গেলাম। কলেজে গিয়ে দেখি লামিয়া অন্য একটা ছেলের সাথে কথা বলতেছে।
আমার যেন কেমন লাগলো। আমি ক্লাসে গিয়ে বসে পড়লাম। তারপর দেখি লামিয়া ওই ছেলেটার হাত ধরে
ক্লাস রুমে প্রবেশ করলো।এটা দেখে আমার রাগ হচ্ছিলো।
সব ক্লাস শেষে আমি কলেজের বাইরে লামিয়া জন্য অপেক্ষা করতেছি।ও আসলো।
আজ একাই আসছো।
সে কথা না বলে হাঁটতেছে। আমিও তার পেছন পেছন যেতে লাগলাম।
কি হয়েছে তোমার আমার সাথে কথা বলছ না।আর তখন ওই ছেলেটার সাথে কথা বলছিলে কেন।কথা বলছিলে ঠিক আছে আবার হাত ধরে ক্লাস রুমেও প্রবেশ করলে কেনো।
তাতে তোমার কি।
আমার কি মানে?
তুমি তো আমাকে ভালোবাসো না তাহলে আমি কার সাথে কথা বলি কার হাত ধরি তাতে তোমার কি।
হুম সেটাও ঠিক।
তারপর আমি বাসায় এসে ছাদে উঠে মন খারাপ করে বসে আছি আর ভাবছি।
আমি কি লামিয়া কে ভালোবেসে ফেলেছি।
আর তখন মা এসে বললো।
লামিয়ারা আগামীকাল এখান থেকে চলে যাবে।
কি কিন্তু কেন?
তারা নাকি অন্য একটা বাসা পেয়েছে।
আমি দৌড়ে লামিয়ার ঘরে চলে গেলাম।
শুনছি তোমরা নাকি চলে যাচ্ছো?
হুম।
কেনো এখানে কি সমস্যা?
কিছু না।
I Love You.
অনেক দেরি হয়ে গেছে।
কিচ্ছু দেরি হয়নি।
আমি বাবার সাথে কথা বলবো।
দরকার নেই আমরা চলে যাচ্ছি।
আমি তোমাকে সত্যি ভালোবাসি।
কিন্তু অনেক দেরি হয়ে গেছে।
আমি কিছু না বলে কাঁদতে কাঁদতে ঘরে চলে এলাম।আর একটা চাকু হাতে নিয়ে তেই হাত কাটতে যাব এমনি লামিয়া এসে আমার হাত থেকে চাকু কেরে নিয়ে ফেলে দিল।
আর আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো পাগল হয়ে গেছো।
হুম তোমার প্রেমে।
এখানে গল্প শেষ।