মেটাভার্স নিয়ে আজকাল খুব কথাবার্তা হচ্ছে!আমাদের সবার প্রিয় মার্ক জাকারবার্গ তার কোম্পানির নাম বদলে একপ্রকার হৈ চৈই ফেলে দিয়েছেন বলা চলে।
তার ভাষায় এটি হলো ‘ভার্চুয়াল পরিবেশ’ বা কল্পনার জগত যার মধ্যে আপনি প্রবেশ করতে পারবেন। এখানে পরস্পরসংযুক্ত ভার্চুয়াল সমাজ থাকবে—যেখানে মানুষ পরিচিতদের সঙ্গে দেখা করবে, কাজ করবে, খেলবে। উনি উনার মেটাভার্স দুনিয়ায় এমন এমন সব সুবিধার ফিরিস্তি শুনাচ্ছেন তা শুনে যেকোনো স্বাভাবিক বাস্তববাদী মানুষ খুশি হয়ে যাবেন।অবশ্য খুশি না হয়ে যাবেনই বা কোথায়! চোখে শুধু একটি থ্রিডি গ্লাস পড়েই নাকি মানুষ ঘুরে আসতে পারবে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে। ভার্চুয়াল সাক্ষাৎ গুলোও হয়ে যাবে আরো জীবন্ত।মানুষ তার মেটাভার্স ওয়ার্ল্ডেই সেরে ফেলতে পারবে যেকোনো কাজ!এইসব নিঃসন্দেহে আমাদের জীবনযাত্রার মান আরও সুন্দর করে তুলবে যদি আদো সম্ভব হয়।
মেটাভার্সে অনলাইন জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্র, যেমন কেনাকাটা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমও যুক্ত হবে।আমাদের অনেক কাজ বা স্বপ্ন যেগুলো আমরা নানারকম সীমাবদ্ধতার কারণে করা সম্ভব হই না সেসব কাজ হয়তো করার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। ভবিষ্যতের ব্যাবসা,চাকরির বাজারেও অনেক পরিবর্তন আসবে নিঃসন্দেহে!
কিন্তু অদ্ভুত মনে হতে পারে, আমাকে কিছুটা পাগল মনে হতে পারে কিন্তু আমি চাই না এইসব কিছু হোক।আমরা ইতিমধ্যেই প্রয়োজনের তুলনায় বেশি যন্ত্রনির্ভর হয়ে পড়ছি।শেষ কবে আগ্রহ নিয়ে সকালের পেপার আসার জন্য অপেক্ষা করেছি মনে নেই,শেষ কবে কাগজে পাতায় বই পড়েছি মনে নেই।ইবুকেই কাজ সেরে ফেলি,
আপনারাই ভাবেন শেষ কবে পরিবারের সাথে বসে বিটিভিতে ইত্যাদি দেখেছেন? অথচ কিছু বছর আগেও ইদের সময় এই কাজ টা মিস যেতো না।
কত ভয়াবহ দ্রুত ভাবেই না আমাদের এককালের নিত্যনৈমিত্তিক অভ্যাস গুলো অতীত হয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু দিনশেষে সবকিছু তো আমার খেয়াল খুশি মতো চলবে না,হয়তো খুব অল্প কিছু বছরের ব্যবধানে মেটাভার্স এর অদ্ভুত দুনিয়ার সাথে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে পড়বো।কিন্তু তাও হয়তো মাঝে মধ্যে কখনো না কখনো এইরকম মধ্যরাতে আমাদের পুরনো অভ্যাস পুরনো জীবনযাত্রার অবস্থার কথা মনে পড়বে। তখন কিঞ্চিৎ দীর্ঘশ্বাস ফেলে মনে মনে বলেও উঠতে পারি “আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম”
তবুও দিন শেষে সময় এবং তার পরিবর্তন আমরা আটকে রাখতে পারবো না। আমাদের সময়ের সাথে তাল মিলিয়েই চলতে হবে। তবে আমরা যেটা করতে পারি ভার্চুয়াল আর রিয়াল লাইফের যথাযথ ব্যালেন্স! পুরোপুরি যেনো আমরা একেবারেই যন্ত্র নির্ভর না হয়ে পড়ি এই ব্যাপার টা তে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এতে যেমন বর্তমানের সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষতিকর দিক টাও যেমন কমে আসবে ঠিক তেমনিভাবেই আসন্ন মেটাভার্স দুনিয়ার ক্ষতিকর দিক গুলোও আমরা খুব সহজে সামলাতে পারবো।