আমাদের জীবন এমনই হওয়া উচিত।
আমাদের জন্য হিন্দুস্তান, ফ্রান্স-জার্মানি, আমেরিকা কানাডাসহ আরো যত বড় বড় রাষ্ট্র রহিয়াছে সবই বরাবর।
আমরা যেখানেই থাকি না কেন আমাদের বাড়ির কথা ভুলতে পারিনা।
আমরা যেখানেই থাকি আমাদের মনে রাখতে হয় সাঝেঁ নীড়ে ফেরার কথা।
দুনিয়াতে যার যেখানে বসবাসের ব্যবস্থা হয়,
কেউ ঝুপড়িতে, কেউ অট্টালিকায়,দেহ আমার যেখানেই পরে থাকুক,
আমার দিল যেন আল্লাহর সাথে জড়িয়ে থাকে।
সেই আসল বাড়ির কথা যেন কখনো বিসৃত না হয়।
সেই কবর আমার ঘর শহর নগর থেকে দূরে নির্জন উপত্যকা।
সুনসান নিরবতা,
নেই লোকালয়ের কোলাহল,
নেই বাচ্চাদের কান্নাকাটি,
আর বড়দের সান্তনা।
একটি গর্ত করে যে আমাকে শইয়ে দেওয়া হবে সেখানে। সে খান থেকে ফেরার আবার সুযোগ টাও নেই।
সেখানে আমি পড়ে থাকব একা একা, সাথে থাকবে শুধু আমার আমল।
টুটাফাটা যা কিছু নামাজ-কালাম পড়তাম, কালিমা, দুরুদ পড়তাম,
তাই সেখানে কাজে আসবে।
আমল গুলোই হবে আমার আপন, আমার ঘরের বিছানা বালিশ আলো-বাতাস হবে এই আমলেই দুনিয়ার জিন্দেগীতে করে যাওয়া আমলের উপরই নির্ভর করবে কবরের সংকীর্ণতা প্রশস্ততা।
কোন পরিচয় সেখানে কাজে আসবে না সেখানে চলবেনা কোন প্রভাব প্রতিপত্তি।
যা কাজে আসবে তা তোমার ঈমানের নূর দুনিয়াতে যত টুকু আল্লাহর নাম নিয়ে ছিলে তা কাজে আসবে আল্লাহর সাথে যতোটুকু সম্পর্ক করতে পেরেছিলে ততটুকু কাজে আসবে।
এখানে যদি নামাজে মন বসে তাহলে ওখানে দিলখোশ থাকবে আর যদি কালেমা নামাজের প্রতিদিন না লাগে দিন ঈমানের সাথে সখ্যতা না জমে,
মন শুধু উপরে থাকে সেই প্রশ্নের প্রতি দিল যদি লেগে থাকে শুধু বাড়ি-গাড়ির সাথে তাহলে সেখানে কোন গতি থাকবে না কেবল এই দুর্গতির বাড়ি-গাড়ি অর্থকরী জামা কাপড় কোন কিছুই তো সেখানে থাকবে না সেখানে থাকবে শুধু তুমি আর তোমার আমল। এগুলো থাকবে তো দূরের কথা ঘনিষ্ঠজনেরা ও সেখানে কোনো কাজে আসবে না।
মায়ের মমতা পাওয়া যাবে না।
বাবার স্নেহ থাকবেনা,
আদরের কন্যা কে পাওয়া যাবেনা।
থাকবেনা যুবক পুত্রের কোন ধরনের সাহায্য সহযোগিতা। কিছু বলতে কিছুই তোমার কাজে আসবে না।
যা কাজে আসবে তা শুধু তোমার ঈমান এবং আমল।
ওই যতোটুকু আল্লাহকে দেখেছি লেতা কাজে আসবে।
ঈমানের নুর কাজে লাগবে,
নামায-রোজার নুর কাজে লাগবে, কুরআনের নূর কাজে লাগবে।
সে নিঃসঙ্গ মুহূর্তে তোমার আমলগুলো হবে তোমার আপন।
হাদীসে এসেছে কবর হয়তো তোমার জন্য জান্নাতের একটি বাগান হবে,
নতুবা হবে জাহান্নামের একটি গর্ত।
এটা কিভাবে!
একই জায়গায় দুইজনের জন্য দুই রকম হয় কি করে!
হা, কবর জান্নাত জাহান্নাম হওয়া নির্ভর করবে, তোমার আমলের উপর।
এখানকার ভালো আমলগুলো সেখানে বাগান হবে,
ফুল ফোটাবে কবরের সাথে জান্নাতের সংযোগ করে দেওয়া হবে।
জান্নাত থেকে শীতল হাওয়া প্রবাহিত হবে,
জান্নাতের গানে মোহিত হবে তোমার কবর।
দেখানো হবে জান্নাতে তোমার ঠিকানা।
হাদীসে এসেছে, মৃত্যুর সময়, এবং মৃত্যুর পর তার ঠিকানা কোথায় হবে, জান্নাত নাকি জাহান্নাম , তারা তাকে দেখিয়ে দেওয়া হয়।
যারা ভালো ঈমান নিয়ে কবরে যাবে,
তাকে বলা হবে নববধূর মত ঘুমাতে থাকো।
যদি না হয়, তাহলে দুর্গতি আর সীমা থাকবেনা।
আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন আমিন।