আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সকলেই অনেক ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আজকে ” তুমি কি সত্যি আমার !! ” গল্পের ১৩ তম পর্ব প্রকাশিত হবে। আশা করি পুরো সময়টা আমার সাথে থাকবেন। চলুন শুরু করা যাক।
আজ আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছি। আজকে ঈতিশা কে আমার মনের কথা বলবোই বলবো…. দ্বাদশ পর্বের পর থেকে……
সন্ধ্যায় ঈতিশা কে এস এম এস দিলাম।
আমি: ঈতিশা, তোমাকে একটা কথা বলার ছিল।
ঈতিশা: হুম। বলো কি বলবা?
আমি: বললে রেগে যাবে না তো?
ঈতিশা: আমি কি এতটাই রাগী? যে তোমার কথা শুনেই রেগে যাব?
আমি: তা নয়। কিন্তূ আমি যে কথাটা বলতে চাই সেই কথাটা শুনে রেগে যেতেও পারো তাই বললাম।
ঈতিশা: যদি তোমার মনে হয় আমি রেগে যাব তাহলে বলার দরকার নাই।
আমি: এই না না। তুমি শুধু বলো তুমি রেগে যাবে না। আমি এখনোই বলতেছি।
ঈতিশা: আমি তোমার না না নই। পারব না বলতে। রাগ হওয়ার কথা বললে তো রেগে যাব এটা স্বাভাবিক।
আমি: তাহলে থাক, না বলি।
ঈতিশা: আচ্ছা আমি রাগ করব না। বলো কি বলতে চাও।
আমি: সত্যি রাগ করবে না তো?
ঈতিশা: হুম, রাগ করব না।
আমি: promise করে বলো রেগে যাবে না।
ঈতিশা: আচ্ছা বাবা ঠিক আছে। Promise করে বলতেছি রাগ করব না।
আমি: ok. কথাটা বলতে আমার খুব ভয় করছে। একটু পরে বলি।
ঈতিশা: আচ্ছা। পরে বলিও। Bye.
যাহ্ রেগে গেল মনে হয়। ঈতিশা হয়তো আমার মুখে ভালোবাসি কথা শোনার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে। কিন্তূ! আমি তো আমার মনের কথা ওকে বলতেই পারলাম না। নিজেকে খুব অসহায় লাগছে। এ কেমন ছেলে আমি। যে কিনা নিজের ভালোবাসার মানুষের কাছে নিজের ভালোবাসার কথা বলতে পারছি না। ছিঃ!! আজ যদি অনন্ত থাকতো, অনন্ত আমার হয়ে বলে দিত।
নিজের মনোবল ঠিক করতেছি। এবার বলবোই বলবো। আজ বলার সুবর্ণ সুযোগ। এই সুযোগ হাত ছাড়া করা যাবে না। আজকে বলতে না পারলে আর কখনোই বলব না। এরকম একটা প্রতিজ্ঞা করলাম নিজের সাথে। নিজেকে বিভিন্ন ভাবে উৎসাহিত করলাম। এরপর আবার ঈতিশা কে এস এম এস দিলাম।
আমি: hi. কি করো?
ঈতিশা: পড়ছি। তুমি কি করো?
আমি: বসে আছি। ও… আচ্ছা পর তাহলে।
ঈতিশা: আচ্ছা। কিছু বলবা?
আমি: হুম বলতাম। কিন্তূ তুমি তো পড়তে বসছো। এ সময় তোমাকে বিরক্ত করা ঠিক হচ্ছে না।
ঈতিশা: আচ্ছা আমি পড়াটা শেষ করে তোমার সাথে কথা বলি কেমন…..
আমি: আচ্ছা। তুমি পড়া পড়। পড়া শেষ হলে এস এম এস দিও।
ঈতিশা মনে হয় আমার না বলা কথাগুলো বুঝতে পেরেছে। আর আমি যে ওকে ভালবাসি কথাটা বলার সাহস পাচ্ছি না সেটাও বুঝে ফেলেছে। তাই হয়ত আমাকে preparation নেওয়ার জন্য সময় দিচ্ছে। এসব ভাবছিলাম। তখনই মা খেতে ডাকল। তাই আমার ভাবনার অবসান ঘটিয়ে খেতে চলে গেলাম। আমার খেতে একটু ও ইচ্ছা করতেছে না। তবুও খেতে হচ্ছে। তাই বসে বসে প্লেটের ভাত শুধু নাড়াচাড়া করছি, খাচ্ছি না। মা আমাকে দেখেই বুঝে ফেলল, আমাকে আনমনা দেখে বলল,
মা: কি হয়েছে রূহান?
আমি: না কিছু না, কিছু হয় নি তো মা।
মা: তাহলে ভাত না খেয়ে এভাবে বসে কি ভাবছিস?
আমি: কই! না তা।
মা: কিছু লুকাচ্ছো মনে হয়?
আমি: তোমার কাছ থেকে কি কোন কিছু লুকাতে পারি। বলো? খাওয়া শেষ করে বলতেছি।
মা: হুম। এখন মনোযোগ দিয়ে খাও।
আমি: আচ্ছা মা।
খাওয়া শেষে আমার ঘরে আসলাম।মা তার হাতের কাজ টা শেষ করে আমার ঘরে আসলো।
মা: রূহান, বলো কি হয়েছে তোমার? যেটা নিয়ে তুমি এত চিন্তিত।
আমি: আমার বলতে লজ্জা লাগছে মা। পরে বলি?
মা: আমার কাছে লজ্জার কি আছে? সবকিছু খুলে বল আমাকে। কোন লজ্জা নয়। আমি তো তোমার বন্ধুর মত।
আমি: মা, আসলে আমি আজকে ঈতিশা কে…
( আমার কথা শেষ না হতেই মা আমাকে বলতে লাগল)
মা: ঈতিশা কে প্রেমের প্রস্তাব এখনো দিতে পার নাই। তাই তো? কোন সমস্যা নাই। মনে সাহস সঞ্চয় করে পরে তোমার মনের কথা বলে দিও। আর সেটাও করতে না পারলে, ঈতিশা কে ফোন করো তোমার হয়ে আমিই বলে দিচ্ছি।
আমি: না না…. তোমাকে বলতে হবে না। আমিই আজকে বলব। কিন্তূ, যদি রাজি না হয়? না বলে দেয় তখন?
মা: আরে! এতো চাপ নিচ্ছ কেন? আমি তো আছি। আগে বলে দেখ। রাজি না হলে আমাকে বলিও। আমি রাজি করাবো। যদি তবুও রাজি না হয় সোজা বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাব।
আমি: মা… তুমিও না। সব সময় মজা করো।
মা: আচ্ছা আর মজা করব না। আমি যাচ্ছি। কাল যেন সুসংবাদ পাই।
আল্লাহর অশেষ রহমতে আমার এমন একজন মা পেয়েছি। যে কিনা নিজের ছেলের প্রেমে সাহায্য করে। আল্লাহর কাছে দোয়া করি যেন সবার ঘরে আমার মায়ের মত মা থাকে। তাহলে কোন ছেলের মেয়ে পটাতে সমস্যা হবে না।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সম্পুর্ন গল্পের পর্ব টা পড়ার জন্য। ভালো থাকবেন। নিজের পরিবারের যত্ন নিবেন। আজকে আমি আসি।