বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভাগীয় শহর খুলনা। বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম বিভাগীয় শহর খুলনা। বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন খুলনা জেলাতেই অবস্থিত যা বাংলাদেশে সুন্দরবন নামেই পরিচিত। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, নদ-নদী, খার-বিল ও হাঁওরে ঘেরা এই বৃহত্তর খুলনা নগরী। খুলনা জেলার মানুষ রসিক ও অতিথি পরায়ণ হয়ে থাকে।
খাবারের ভেতর ইলশ মাছের চাহিদা ভোক্তাদের অনেক বেশী দেখা যায়। খুলনার নদ-নদীতে ইলিশ মাছের উৎপাদন আগে বেড়েছে এবং জেলেরা ইলিশ মাছ আহরণ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছেন। মৎস গবেষণা ইনিস্টিটিউটের মতে খুলনাতে ইলিশ মাছের উৎপাদন বিগত বছর থেকে ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই নিয়ে খুলনা জেলাতে ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে সর্বমোট দাঁড়িয়েছে ১৪ শ’ মেট্রিক টন। খুলনা জেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে ইলিশের উৎপাদন হয়ে থাকে এবং এর ভেতর কাজীবাছা, ভৈরব, রুপসা ও আাঠারোবেকী নদীতে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।
খুলনায় জেলেরা এই বিষয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলেরা অত্যন্ত খুশী মনে দিন কাটাচ্ছেন। খুলনা মৎস্য অধিদপ্তরের মতে মা ও জাটকা মাছ ধরা বন্ধ হলে খুলনা জেলাতে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ। তাই ইলিশের চাহিদা ভোক্তাদের কাছে খুবই বেশী। খুলনা জেলাতে ইলিশ সংরক্ষণ করে এবং মা ও জাটকা ইলিশ ধরা বন্ধ করলে খুলনার নদ-নদীতে ইলিশের উৎপাদন আরো বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও খুলনা জেলাতে নদ-নদরি অবস্থা তেমন ভাল না।
নদ-নদীগুলো পয়নিষ্কারের মাধ্যমে ইলিশ উৎপাদনে কার্যকারী ভূমিকা পালন করবে বলে দাবি খুলনা মৎস উন্নয়ন বিভাগের। খুলনা অঞ্চলের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক বলেছেন খুলনা অঞ্চলের নদ-নদীগুলো স্বাভাবিক অবস্থায় আসলে নদীতে ইলিশ মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও ইলিশের পোনা ও জাটকা ধরা বন্ধ করলে ইলিশের উৎপাদন দ্বিগুন হবে এবং ভোক্তাদের চাহিদা মিটিয়েও দেশের বাইরে রপ্তানি করে খুলনার অর্থনৈতিক অবকাঠামো মজবুত করা সম্ভব।
খুলনা অঞ্চলে গত সেপ্টেম্বর মাসে জেলেদের প্রথমত ৬৫ দিনের এবং দ্বিতীয় দফায় ২১ দিনের নিষেধাঙ্গা দেওয়া হয় এবং জেলেদের অন্য পেশায় নিয়োজিত হয়েছিল। পরবরতীতে ইলিশের পোনা ও জাটকা নিধন অনেকটাই কমে আসে। সুন্দরবনসংলগ্ন এই বৃহত্তর খুলনা নগরীতে ইলিশের চাহিদা ও উৎপাদনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে খুলনা অঞ্চলের সরকারের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা।
এছাড়াও খুলনা মৎস গবেষণা ইনিস্টিটিউট নদীতে ইলিশ মাছ সংরক্ষণ করতে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে নদী ও পোনা-জাটকা ইলিশ সংরক্ষণ বিষয়ে জেলেদের সাবধানতা বজায় রাখতে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের দাবি জেলেরা বিষয়গুলোতে এখনই সতর্ক না হলে ভবিষ্যতে ইলিশ উৎপাদনে ভোগান্তির সৃষ্টি হইতে পারে।
সূত্র: কৃষিপ্রতিদিন.কম