Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

আরেকটি অদ্ভুতুড়ে সত্য ঘটনা

আমি তখনো হাইস্কুলে পড়ি। সবেমাত্র নবম শ্রেণীতে উঠলাম জেএসসি পরীক্ষা শেষ করে। বছরের শুরুর দিক। অর্থাৎ জানুয়ারি মাস। সবাই পড়ালেখার প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত। আমিও তাদের খাতায় নাম লেখালাম। প্রাইভেট পড়া শুরু করে দিলাম। যেহেতু প্রতিদিন স্কুলে যেতে হতো তাই স্যার প্রাইভেট পড়াতো ভোরে। প্রাইভেট শুরু হয়ে গেল সকাল ছয়টার সময়। আমার বাসা থেকে স্যারের বাসা বেশ অনেকটাই দূর ছিল।

তাই ফজরের নামাজের পরপরই হালকা নাস্তা করে আমাকে বাসা থেকে বের হয়ে পরতে হতো।যাইহোক শীতের সকাল তাই বেশ ভাল রকমের শীতের কাপড় গায়ে দিয়ে বের হতে হতো। চারপাশ কুয়াশা থাকার কারণে সবকিছু ভালোভাবে দেখা যেত না। আমার প্রাইভেটের যাবার রাস্তা ছিল তিনটি। তাহলে কি রাস্তায় ছিল মেইনরোড, যার কারণে আমরা সবসময় সেই রাস্তা এড়িয়ে যাওয়ার কথা বলতো।

আরেকটি রাস্তা ছিল আমার বাসার সামনে দিয়ে যেটা দিয়ে প্রাইভেটে যেতে প্রায় আধা ঘন্টার মত সময় লাগতো আর আরেকটি রাস্তা ছিল কয়েকটি বাড়ির ভেতর দিয়ে। এ রাস্তা ছিল একটি হিন্দু এলাকার ভেতর দিয়ে যাওয়ার রাস্তা। সকালবেলায় এমনকি কোন বেলাতেই এই রাস্তায় তেমন একটা মানুষ থাকত না। আমিও নিরিবিলি পছন্দ করতাম। এর জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই রাস্তাটি ব্যবহার করতাম। যেহেতু রাস্তাটি ব্যবহার করে অনেক কম সময়ে আমার প্রাইভেটে যাওয়া সম্ভব হতো তাই আমি এই রাস্তাটি ব্যবহার বেশি করতাম।

প্রায় প্রতিদিনই যাওয়া-আসা করছিলাম এই রাস্তা দিয়েই। কিন্তু কিছুদিন ধরে রাস্তা দিয়ে যেতে ভালো লাগছিলো না। সকালবেলা সবকিছু নিশ্চুপ। আর যেহেতু আশেপাশের বাড়িগুলো হিন্দু বাড়ী ছিল তাই এত সকালে ঘুম থেকে ওঠার কোনো প্রশ্নই ছিল না তাদের। একদিন আমি প্রাইভেটে যাওয়ার সময় লক্ষ্য করলাম কেউ একজন আমার পেছনে আছে। পেছনে তাকিয়ে দেখি একজন লোক আমার থেকে বেশ খানিকটা দূরে আমার পেছনে আসছে। কুয়াশা থাকার কারণে বেশ ভালোভাবে লোকটিকে দেখতে পারলাম না।

যাইহোক আমি আমার প্রাইভেটে চলে গেলাম। আমি তেমন একটা কিছু ধারণা করিনি লোকটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে। আর রাস্তাটা আমার বাবার ছিল না যে সবাই এই রাস্তা দিয়ে হাঁটতে পারবে না। কিন্তু সমস্যা হল তারপর। বেশ কিছুদিন ধরেই আমি আমার পেছনে একজন লোক আসতে দেখি। প্রথমে ভাবতাম হয়তো সে কোন কাজে যাচ্ছে। কিন্তু পরে বুঝতে পারলাম যে লোকটি আমার পিছু নিয়েছে। আর প্রতিদিন ওই একই লোক কে আমি দেখতে পাই। সে আমার বেশী কাছে আসতো না। দূর থেকেই পিছু নিত। একদিন আমি বাসা থেকে একটু আগেভাগেই বের হলাম।

সেদিনের অবস্থা ছিল অন্যান্য শীতের সকালের চেয়ে পুরোপুরি অন্যরকম। সেদিন কোনো রকমের কুয়াশা ছিল না। তেমন একটা ঠাণ্ডাও ছিল না। কিন্তু মনে হচ্ছিল যে ভোর নয় রাত হয়েছে। চাঁদ এখনো ভালোভাবে আলো দিচ্ছে। আমি খানিকটা অবাক হলাম। আবার রাস্তায় বের হয়ে দেখি সম্পূর্ণ রাস্তা ফাঁকা। সকালবেলা মানুষ কম হলেও বেশ কিছু লোক হাঁটাহাঁটি করার জন্য বের হতো। কেউ ছিলনা সেদিন। আমি ভাবলাম আজকে হয়তো একটু বেশি আগে বের হয়েছি এজন্যই এরকম হচ্ছে। আমি আবার সেই রাস্তা দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম।

সেদিন সেই লোকটিকে আমার ঠিক পিছনেই দেখতে পেলাম। আজ সে আমার থেকে দূরে নয় বরং অনেক কাছে। তার সম্পূর্ণ শরীর লাল রংয়ের একটি কাপড়ে ঢাকা ছিল। তার হাতে ছিল একটি কাপড়ের ঝুলি। সে আমার পেছনে আসতে শুরু করলো এবং বেশ জোরে জোরেই কিছু একটা বলতে শুরু করল। তবে আমি তোর কথা কিছুই বুঝতে পারলাম না। কিন্তু এতোটুকু নিশ্চিত ছিলাম যে সে বাংলায় কথা বলছিল না। আমি একটু ভয় পেলাম।

রাস্তায় কেউ নেই। আমি যে দৌড়ে পালাবো সেই সাহসটুকুও পাচ্ছিলাম না। লোকটি আমার পিছনে আসতে আসতে তার ব্যাগ থেকে কিছু একটা বের করল। আমি একটু একটু করে পেছনের দিকে তাকাচ্ছিলাম। বুঝতে পারলাম তার হাতে কোন প্রাণীর হারের মতো কিছু একটা আছে। আর তার শরীর থেকে বেশ ভাল রকমের একটা বিশ্রী গন্ধ আসছিল। ওই হাড্ডি হাতে নিয়ে সে এবার বেশ জোরে সে যা বলছিল তা বলা শুরু করলো।

এবার আমি রীতিমত ভয় পেয়ে গেলাম। ভাবলাম কিছু একটা করতে হবে। কিন্তু মনে হচ্ছিল যে শরীরের সমস্ত শক্তি আমি হারিয়ে ফেলেছি। চিৎকার দেয়ার মতো শক্তি ও আমার মধ্যে বাকি ছিল না। সেই সময় হঠাৎ করে একটা বাড়ি থেকে একজন বৃদ্ধ মহিলা বেরিয়ে আসলো এবং তার ঘরের ময়লাগুলো রাস্তার এক কোনায় ফেলল। বৃদ্ধ মহিলাটি বের হয়ে আসার সাথে সাথে আমার পেছনে থাকা লোকটা চুপ হয়ে গেল।

আমিও ভাবলাম এই সুযোগ কিছু খারাপ হওয়ার আগে আমি এখান থেকে পালাই। এজন্য কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে আমি দিলাম দৌড়। বেশ খানিকটা দূরে তোরে আসার পর আমি একবার পেছনের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। শুধু দেখলাম লোকটি এক ধ্যানে আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। যাই হোক ঐদিনের পর আমি কখনো ভোর বেলায় ওই রাস্তা দিয়ে যাও আসা করতাম না।

Related Posts

9 Comments

  1. ভৌতিক গল্প, খুবই চমৎকার। আমিও একটা বাস্তব ঘটনা লিখবো ভাবতেছি।

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No