আমি রাশেদ অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।বরাবরই আমি একজন ভালো ছাত্র দিলাম।ক্লাসের প্রথম থাকতাম সবসময়। পড়াশোনা বাদে অন্য কোনো দিকে আমার তেমন কোনো দৃষ্টি ছিল না।আমি বন্ধুত্ব ও করতাম ভালো ছাত্র দের সাথে যাতে বাজে কাজে না জোড়ায়।আমরা কয়েকজন বন্ধু নিয়মিত কলেজে যেতাম এবং ক্লাস করতাম।একদিন ক্লাস শেষ করে মাত্রই ক্যাম্পাস এ এসে বসলাম বন্ধু দের সাথে ঠিক তখনি দেখলাম দুইটা মেয়ে আমাদের দিকে আসলো।তাদের মধ্যে একজন খুব সুন্দর ভাবে আসছে কলেজে।তো আমাদের কাছে এসে সবার সামনে আমাকে প্রপোজ করে বসলো।আমি তো হা করে থাকলাম।সত্যি কথা বলতে যখন মেয়ে টাকে দেখলাম তখনই আমার তাকে খুব ভালো লেগে গেছিলো।আজ প্রথম কোনো মেয়েকে দেখে আমার ভিতর ভালোলাগা কাজ করলো।আমি আর না করতে পড়লাম না।তারপর আমার বন্ধু রা বললো তোরা কথা বল আমরা আসছি।এর পর তার থেকে জানতে পারলাম তার নাম আতিকা অনার্স প্রথম বর্ষের স্টুডেন্ট ।তারপর অনেক কথা বার্তা হলো আমরা যার যার মতো বাসায় চলে আসলাম।
এর পরের দিন কলেজে গিয়ে বসে আছি ক্যাম্পাস এ।ক্লাস শুরু হতে এখনো ২০মিনিট বাকি আছে।তাই আমরা গল্প করছিলাম সবাই আর আমি আতিকার জন্য অপেক্ষা করছিলাম।হটাৎ দেখি কলেজের বড়ো গেট দিয়ে একটা প্রাইভেট কার ঢুকছে।গাড়িটা দেখতে অনেক সুন্দর।অবাক করার বিষয় গাড়ি থেকে আতিকা আর আতিকার সেই বান্ধবী নামছিল।তারপর আতিকা আমাকে ফোন দিল।এবং আমরা দেখা করলাম।তারপর ক্লাস শুরু হইয়ে গেলো এজন্য আমরা যার যার ক্লাসে চলে গেলাম।
কলেজে সবার মুখে শুনছিলাম আতিকা নাকি বাবা অনেক বড়লোক ।শহরের বড়ো বড় ব্যাবসাহীদের মধ্যে একজন।কিন্তু আতিকার মধ্যে একটুও অহংকার নেই।গাড়ি ছাড়া ওর বাবা কলেজে আসতে দেইনা তাই সে আসে।কিন্তু আমরা তো মধ্যবিত্ত।একজন মধ্যবিত্ত ছেলে কে কি তার পরিবার মেনে নিবে।আমি ভাবতে লাগলাম।
ক্লাস শেষ করে আতিকার সাথে দেখা করলাম।এবং বললাম আমরা তো মধ্যবিত্ত তোমার বাবা কি আমাদের মেনে নিবেন। আতিকা আমাকে বললো সে পরে দেখা যাবে।আমি তাকে সবসময় ভয় পেতাম।এভাবে দেখতে দেখতে অনার্স শেষ করলাম আমি মাস্টার্স এ ভর্তি হলাম।এদিকে আতিকার বাবা চাই তার বন্ধুর ছেলের সাথে আতিকা কে বিয়ে দিলাম।তিনি তাকে কথা দিয়ে ফেলেছেন।
আতিকা রাতে পড়তে বসছে।তখন আতিকা কে তার বাবা এসে সব বললেন।আতিকা বললো বাবা আমি পড়া শেষ করে বিয়ে করতে চাই।আতিকা বাবা বললো তুই তো পড়া বাদ দিচ্ছিস না।বিয়ের পর পড়া শেষ করিস।আমি ওদের কথা দিছি।দরকার পড়লে এখন বিয়ে টা করে রাখ পরে পড়াশোনা শেষ করে উঠাই নিয়ে যাবে।আতিকা রাজি হলো না।আতিকা কে ওর বাবা জিজ্ঞাসা করলো তুই কি কাওকে পছন্দ করিস।আতিকা বললো হ্যা।তারপর আতিকা তার বাবা কে আমার কথা বললো।তার বাবা কিছু তেই রাজি হয়নি।তার বাবা মধ্যবিত্ত কোনো পরিবারে তার মেয়েকে দিবে না।
এর পর আতিকা আমাকে সব বললো।আমার মন টা খুব খারাপ হলো।আতিকা বললো চলো আমরা পালিয়ে যায়।বাবা তোমাকে কখনো মেনে নিবে না।আমি রাজি হলাম না।আমি আতিকা কে বললাম তুমি বাড়ি যাও আমি দেখেছি কি করা যায়।
আমি রাতে আতিকা দের বাসায় গেলাম।তার বাবা কে সব বুঝিয়ে বললাম।কিন্তু তিনি আমার কোনো কথাই শুনলেন না।আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিলেন।কিন্তু আমার বিশ্বাস ছিল আতিকা আমাকে ছাড়া কাওকে বিয়ে করবে না।
আতিকা কে পরের দিন থেকে আর কলেজে আসতে দেইনি।এদিকে আতিকা কে একদিন না দেখলে আমার ভালো লাগতো না।কি করবো বুঝতে পারলাম না।আতিকা বান্ধবীকে ফোন দিলাম।এবং জানতে পড়লাম আতিকা কে ওর বাবা কলেজে আসতে দিচ্ছে না। কিছুদিনের মধ্যেই বিয়ের তারিখ ফাইনাল করবে।আমি ভাবতে লাগলাম আতিকা কি কিছু বলছে না।
তারপরের দিন আতিকা আমার বাসায় চলে আসলো।সারাদিন থাকলো আমার মার কাছে।রাতে ওর বাবা আসলো।অনেক বকাবকি করলো।কিন্তু অতিকার একটাই কথা আমাকে ছাড়া কাও কে বিয়ে করবো না।বাড়িতে নিয়ে গেলে ওই আত্মহত্যা করবে।
তারপর ওর বাবা বাধ্য হইয়ে আমার সাথে বিয়ে দিলেন।এবং বললেন তুমি যতদিন একটা জব না পাও ততদিন ও আমার কাছেই থাকবে। তারপর আমি বড়ো একটা জব পেলাম এবং বড়ো অনুষ্ঠান করে আতিকা কে নিয়ে আসলাম।এখন আমাদের সুখের সংসার।