ধরুণ, আপনি একটি ব্লগ শুরু করার কথা ভাবছেন। কিন্তু আপনি আপনার ব্লগ নিয়ে এতটাই উত্তেজিত যে কিভাবে কি করবেন তা ঠিক করতে পারছেন না। তাহলে আজকের পোস্টটি আপনার জন্য। আজকে আমি আপনার ব্লগ শুরু করার আগে যে দশটি বিষয় জানা অতি জরুরী তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। চলুন শুরু করা যাকঃ
প্রত্যেকটি ব্লগার তাদের নিজস্ব ব্লগটিকে একটি আদর্শ ব্লগ হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আপনি যদি নির্দিষ্ট ভিজিটরদের নিয়ে আপনার ব্লগে কাজ করতে চান তাহলে আপনাকে আরো সচেতনভাবে আপনার ব্লগ শুরু করতে হবে। একটি আকর্ষনীয় ব্লগ তৈরি করতে থিম নির্বাচন ও হোস্টিং ও নিয়মিত কিছু কাজ সহ অনেকগুলো কাজ আপনাকি পরিচালনা করতে হবে। আপনাকে একটি ব্লগ শুরু করার আগে কমপক্ষে দশটি বিষয় বিবেচনা করা অতি গুরুত্বপূর্ণ তা না করলে আপনি পরবর্তীতে বেশ কিছু ঝামেলায় পড়তে পারেন।
ব্লগ শুরু করার আগে যে দশটি বিষয় জানা জরুরী
একটি ব্লগ শুরু করতে হলে ব্লগটি শুরু করার আগে আপনাকে অনেকগুলো বিষয়কে বিবেচনা করতে হবে। তবে আমি এর মধ্যে থেকে এমন দশটি বিষয়কে বিবেচনার জন্য তুলে এসেছি যে এগুলো বিবেচনা করলেই আপনি একটি আকর্ষনীয় ব্লগ শুরু করতে পারবেন। চলুন তাহলে জেনে নেওযা যাকঃ
০১. কেন আপনি আপনি একটি ব্লগ শুরু করতে চান?
একটি ব্লগ শুরু করার আগে আপনার নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে কেন আপনি একটি ব্লগ শুরু করতে চান। এতে করে আপনি আপনার ব্লগ শুরু করার উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিজে থেকেই নিশ্চত হতে পারবেন। আপনি যখন আপনার ব্লগের উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নিতে পারবেন তখন আপনি ব্লগটিতে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারবেন।
০২. কি নিয়ে লিখবেন?
এবার আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন আপনি আপনার ব্লগে কি নিয়ে লিখতে চাচ্ছেন। আপনার ব্লগটিতে আপনি কোন ধরণের লেখাগুলো প্রকাশ করতে চান। কারণ, আপনার ব্লগটি কোন বিষয় নিয়ে হবে তাতে আপনি কোন ধরনের লেখা গুলো প্রকাশ করতে চাচ্ছেন তা বিবেচনা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য আপনি এমন কিছু বেছে নেন যে বিষয়ে আপনার যথেষ্ট জ্ঞান আছে এবং যে বিষয়ে আপনি লিখতে স্বাচ্ছন্দবোধ করবেন।
০৩. কেন আপনার ব্লগটি অন্যদের চেয়ে আলাদা?
আপনার ব্লগের নাম নির্দিষ্ট হোক বা না হোক আপনাকে প্রচুর প্রতিযোগির সাথে প্রতিযোগিতা করতে হবে। তাই আপনার ব্লগের বিশেষত্ব জেনে ভিজিটররা আপনার ব্লগে ভিজিট করবে। তাই আপনাকে বিবেচনা করতে হবে কোন বিশেষ কারণে আপনার ব্ললটি অন্যদের চেয়ে আলাতা হবে। এটিতে এমন কিছু সুজনশীলতার প্রকাশ থাকতে হবে যেন আপনার ব্লগটি অন্যদের থেকে আলাদা মনে হয়।
০৪. আপনার ভিজিটর কারা?
এ ধাপে আপনাকে বিবেচনা করতে হবে আপনার ব্লগের ভিজিটর কারা হবে। এটা ব্লগের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তবে ব্লগের উদ্দ্যে নির্ধারণ হয়ে গেলে ভিজিটর কারা হবে এ চিন্তা করতে হয় না। কারণ, আপনার ব্লগের উদ্দেশ্য আপনাকে বলে দিবে আপনার ব্লগের ভিজিটর করা হবে।
০৫. পোস্টিং এর ফ্রিকোয়েন্সি কি হওয়া উচিত?
বেশির ভাগ ব্লগগুলো প্রতিদিন কমপক্ষে একটি করে ব্লগ পোস্ট করে থাকে। প্রতিদিন ব্লগ পোস্ট করা একটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও আপনি যদি সময়ের অভাবে প্রতিদিন নাও পোস্ট করতে পারেন তবু্ও আপনাকে সপ্তাহে কমপক্ষে দুই থেকে তিনটি পোস্ট করা উচিত।তবে আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনি যা পোস্ট করছেন তার যেন একটা ধারাবাহিকতা থাকে। তানাহলে আপনার ব্লগে ভিজিটর আসতে চাইবে না।
০৬. আপনার পোস্টের দৈর্ঘ্য কেমন হবে?
এ ধাপে আপনাকে বিবেচনা করতে হবে আপনার পোস্টটি কতটুকু দীর্ঘ হবে। আপনাকে মনে রাখতে হবে আপনার পোস্ট যত বেশি দীর্ঘ হবে ততই গুগল র্যাঙ্ক পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কাছাড়া ভিজিটররাও অনেকক্ষণ যাবৎ আপনার ব্লগে অবস্থান করবে । ফলে আপনার পোস্টটি শেয়ার করার সম্ভাবনা বেশি থাকবে। তবে এক্ষেত্রে আমি আপনাকে কমপক্ষে ১৫০০ শব্দের আর্টিকেল লেখার পরামর্শ দিব।
৭. আপনি আপনার ব্লগে কতটুকু সময় দিতে চান?
আপনি কতক্ষণ সময় ধরে আপনার ব্লগে কাজ করবেন তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন। কেননা একটি নতুন ব্লগ শুরু করার আগে আপনাকে অবশ্যই সময় নির্ধারণ করে নেওয়া উচিত। কারণ, একটি ব্লগ শুরু করলেই যে তা ভালো ভাবে র্যাঙ্ক করতে তা কিন্তু নয় । এজন্য অনেক সময় ধৈর্য্যধারণ করা আবশ্যক।
০৮. আপনার ব্লগটি প্রচার করার জন্য আপনি কোন কৌশল ব্যবহার করতে চান?
এ ধাপে আপনাকে বিবেচনা করতে হবে আপনি আপনার ব্লগটিকে প্রচার করার জন্য কোন কোন বিষয়গুলোকে বিবেচনা করবেন।আপনার ব্লগটিকে সফলভাবে প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে আপনাকে প্রতিনিয়ত পাঠক যুক্ত করতে হবে। এজন্য আপনি সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। এর এর সাথে আপনাকে আপনার ব্লগের জন্য ভালো ভালো এসইও ফ্রেন্ড আর্টিকেল লিখেতে হবে। যা আপনার ব্লগটিকে র্যাঙ্ক করতে ব্যাপক ভাবে সাহায্য করবে।
০৯. আপনার ব্লগের নাম কি?
আপনার ব্লগের নাম কি ঠিক করা হয়েছে ব্লগ শুরু করার আগে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ব্লগের নামই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভিজিটরদের সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়। এজন্য আপনা একটি আকর্ষনীয় ব্লগ নেম বাছাই করতে হবে।
১০. আপনি কোন ধরণের প্লাটফর্মে ব্লগিং করার সিদ্ধান্ত নিযেছেন?
আপানর ব্লগটি আপনি হোস্ট করা আর অন্য জনের পছন্দ অনুযায়ী হোস্ট করার মধ্যে বিশাল পার্থক্য বিদ্যমান। এ জন্য আপনাকেই বেছে নিতে হবে আপনি ব্লগারে নাকি ওয়ার্ডপ্রেসে আপনার ব্লগ সাইটটি খুলতে চান? কেনন আপনার পছন্দ অনুযায়ী হলে আপনি সেখানে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করবেন।
পরিশেষ
আশা করি আপনি আপনার ব্লগিং শুরু করার আগে যে বিষয়গুলো বিবেচনা করবেন তা সঠিকভাবে বুঝতে পেরেছেন। আপনি যদি উপরোক্ত বিষয়গুলোকে বিবেচনা করে ব্লগিং শুরু করেন অবশ্যই আপনি একটি উৎকৃষ্ট ব্লগ তৈরি করতে পারবেন। আমার পোস্টটি আপনাদের ভালো লেগে থাকলে দয়া করে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন।