মোবাইল ব্যবহারকারীদের কাছে ভিডিও এডিটিং এখন খু্বই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দ্বাড়িয়েছে। কেননা এখন প্রায় বেশিরভাগ মানুষ বিভিন্ন মাধ্যমে ভিডিও আপলোড করে থাকে। আর এসব আপলোডকৃত ভিডিওর জন্য ভিডিও এডিটিং খুবই জরুরী। এক্ষেত্রে ভাল মানের ভিডিও আপলোড করার জন্য প্রয়োজন ভাল মানের ভিডিও এডিটিং অ্যাপস। তাই আজকে আমি আপনদের সাথে ২০২২ সালের সেরা ৭ টি ভিডিও এডিটিং অ্যাপস নিয়ে আলোচনা করবো। চলুন শুরু করা যাকঃ
আপনার হাতে যদি একটি স্মার্টফোন থাকে তাহলে আপনি স্মার্টফোন ব্যবহার করেই করতে পারবেন আপনার পছন্দমত ভিডিও এডিটিং এর কাজ। বর্তমান সময়ে অনেকেই ভিডিও তৈরি করে সামাজিক মিডিয়ায় আপলোড করার জন্য। কিন্তু অনেক সময় তা আপলোডের উপযোগী হয় না। এর প্রধান কারণ হলো ভালমানের অ্যাপস ব্যবহার করা যার মাধ্যমে আপনি আপনার পছন্দের ভিডিওটি পছন্দ মতো এডিট করতে পারবেন।
৫ টি সেরা ভিডিও এডিটিং অ্যাপস
প্লে স্টোর ওপেন করে সার্চ করলে অনেকগুলো অ্যাপস পাওয়া যাবে এডিট করার জন্য । কিন্তু সেগুলোর সবগুলো দিয়ে ভালমানের ভিডিও এডিটিং এর কাজ করা যায়। এ কথা শুনে কি ভাবছেন মোবাইলে ভিডিও এডিটিং করা সম্ভব নয়। অবশ্যই সম্ভব। কারণ, এমন কিছু ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার আছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনি প্রফেশনাল ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন। এমনি সেরা ৭ টি অ্যাপস সম্পর্কে আজকে আমি আপনাদেরকে জানাবো।
01. PowerDirector। সেরা ভিডিও এডিটিং অ্যাপ
PowerDirecto – এমন একটি অ্যাপস যেখানে ডেস্কটপ সংস্করণের সমস্ত কার্যকারীতাকে একটি সুবিন্যস্ত মোবাইল ইন্টাফেসে সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। এই ভিডিও এডিটিং অ্যাপস এর মধ্যে মাল্টি-ট্রাক ও 4k সংযুক্ত করা হয়েছে যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজে আপনার সোস্যাল মিডিয়ার উপযোগী ভিডিও তৈরি করতে পারবেন।
PowerDirector এর বৈশিষ্ট্য সমূহ। সেরা ভিডিও এডিটিং অ্যাপ
- সাধারণত ট্যাপ দিয়ে ভিডিও ট্রিম, স্প্লাইস এবং ঘোরানো যায়।
- ড্রাগ এন্ড ড্রপ দিয়ে ড্রপিং ইফেক্ট এবং ট্রানজিশন প্রয়োগ করা যায়।
- ভিডিওতে টেক্সট এবং অ্যানিমেটেড শিরোনাম যোগ করা যায়
- PiP ওভারলে দিয়ে ভিডিও এবং ছবির কোলাজ তৈরি করা যায়।
পাওয়ারডিরেক্টর তার ডেস্কটপ সংস্করণের সমস্ত কার্যকারিতাকে একটি সুবিন্যস্ত মোবাইল ইন্টারফেসে সংক্ষিপ্ত করতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে মাল্টি-ট্র্যাক এবং 4K সম্পাদনা, যা আপনার ভিডিওগুলিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করতে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে।
অ্যাপটিতে বিভিন্ন ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট টুল রয়েছে, যা কম্পোজিটিং থেকে শুরু করে স্পিড অ্যাডজাস্টমেন্ট পর্যন্ত সব ধরণের কাজ করতে পারে। YouTube ভূমিকা এবং আউটরোস জন্য টেমপ্লেট তৈরি করা সহ একটি কোয়ালিটি সম্পন্ন ভিডিও তৈরি করতে আপনাকে ব্যাপকভাবে সাহায্য করে।
02. iMovie-Video Editor।সেরা ভিডিও এডিটিং অ্যাপ
iMovie এমন একটি ভিডিও এডিটিং অ্যাপ যেখানে 4K মাল্টি-ট্রাক ম্যানেজমেন্টকে সমর্থন করে। এটি ভিডিওর দৈর্ঘের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সংগীত পরিবেশন করতে দেয এভং অটোমেটিকস ভিডিও এর সাথে সামঞ্জস্য বিধান করে ।
iMovie এর বৈশিষ্ট্য সমূহ।সেরা ভিডিও এডিটিং অ্যাপ
- এটি অ্যাপল গ্রাহকদের জন্য বিনামূল্যে সরাবরাহ করে থাকে।
- সহজ ইন্টারফেস ব্যবহার করা যায়
- সমস্ত অ্যাপল ডিভাইসে কাজ করতে পারে।
iMovie এর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি হল iMovie এর থিমের স্যুট। কিছু প্রাক-প্রোগ্রাম করা থিমের মধ্যে রয়েছে ফটো অ্যালবাম, খেলাধুলা, ভ্রমণ, কমিক বুক এবং নিওন। প্রতিটি বিকল্প সঙ্গীত, রূপান্তর এবং টেক্সট ওভারল সহ আসে, ও ম্যানেজমেন্ট প্রক্রিয়া চলাকালীন আপনার সময় এবং শ্রম উভয়ই সাশ্রয় করায়।
আপনি যদি সম্প্রতি এই অ্যাপসটি ব্যবহার না করে থাকেন তাহলে তাহলে আমি ্ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে এটি ব্যবহার করার পরামর্শ দিব। কারণ অ্যাপল নিয়মিত প্লাটফর্ম ্আপডেড করে এবং ব্যবহারকারীদের উৎকৃষ্ট ভিডিও এডিটিং সিস্টেম প্রভাইড করে।
03. Splice – Free Video Editor। সেরা ভিডিও এডিটিং অ্যাপ
ধরা যাক আপনি আপনার সর্বশেষ হাইকিং অ্যাডভেঞ্চারের একটি হাইলাইট রিল তৈরি করতে চান, তবে এই অ্যাপটি আপনার জন্য। আপনার ক্লিপগুলি আপলোড করার পরে এবং সঠিক ট্র্যাকগুলিতে স্থাপন করার পরে, আপনি কয়েকটি ট্যাপ দিয়ে সেগুলি ট্রিম এবং ক্রপ করতে পারেন৷ যদিও আপনি এটিতে 4k এ ব্যবহার করতে পারবেন না তবুও ফলাফল হিসাবে আপনার ভিডিও কোয়ালিটি সম্পন্ন এবং পরিষ্কার ফুটেজ লাভ করবে।
Splice এর বৈশিষ্ট্য সমূহ। সেরা ভিডিও এডিটিং অ্যাপ
- সরাসরি সামাজিক মিডিয়ায় ব্যবহার করা
- ভিডিও সম্পাদনার সমস্ত মৌলিক বিষয় কভার করে
- হাইলাইট রিল তৈরি করতে পারে
আপনি Splice-এর ফ্রি মিউজিক এবং সাউন্ড এফেক্ট লাইব্রেরির সাথে কিছু সোনিক ফ্লেয়ার যোগ করতে পারবেন। আপনি যে ট্র্যাকটি চান তা আলতো চাপুন এবং টাইমলাইনে পছন্দসই স্থানে টেনে আনুন। Splice আপনাকে ট্রানজিশন সন্নিবেশ করতে, ভিডিও প্রভাব প্রয়োগ করতে এবং সরাসরি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করতে দেয়।যা আপনার জন্য উত্তম হবে।
04. KineMaster – Video Editing App । সেরা ভিডিও এডিটিং অ্যাপ
আপনি ফ্রেম-বাই-ফ্রেমের ভিত্তিতে ক্লিপগুলি ট্রিম, কাট এবং টুইক করতে চান?। তাহলে এই অ্যাপসটি অবশ্যই আপনার জন্য।এটি অডিও ট্র্যাকের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এটি এমন একটি অ্যাপ যেখানে আপনি আপনার ইচ্ছামতো ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন। এখন পর্যন্ত আমার কাছে এটি সেরা ভিডিও এডিটিং অ্যাপস।
KineMaster এর বৈশিষ্ট্য সমূহ। সেরা ভিডিও এডিটিং অ্যাপ
- সুনির্দিষ্ট ম্যানেজমেন্ট নিয়ন্ত্রন
- প্রফেশনাল গ্রেড সরঞ্জাম ব্যবহার
- ইউটিউবে ভিডিও আপলোড সমর্থন
কাইনমাস্টারের বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে ট্রানজিশন, মিশ্রন, ক্রোমা কী এবং আলোর সমন্বয়। এই সমস্ত সরঞ্জাম একটি সহজে নেভিগেট ইন্টারফেসে ব্যবহার করা যায়। যা আপনার জন্য খুবই সুবিধাজনক হবে।
05. Filmmaker Pro । সেরা ভিডিও এডিটিং অ্যাপ
ফিল্মমেকার প্রো আপনার হাতের তালুতে প্রফেশনাল-গ্রেড ভিডিও সম্পাদনার জন্য একটি বেস্ট ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। বর্তমান সময়ে অনেক ইউটিউবার এ সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে ভিডিও এডির্টিং করে তাদের চ্যানেলে প্রকাশ করে থাকে।
Filmmaker Pro এর বৈশিষ্ট্য সমূহ। সেরা ভিডিও এডিটিং অ্যাপ
- সবুজ পর্দা সম্পাদনা করতে সক্ষম
- 30টি ফিল্টার, 17টি ট্রানজিশন এবং 200টি ফন্ট সাপোর্ট
- অডিওমিটার সহকারী ভয়েস ওভার সাপোর্ট।
অ্যাপটিতে মাল্টি-ট্র্যাক এডিটর না থাকলেও, ফিল্মমেকার প্রো এর বিকল্প হিসাবে অনেক সুবিধা প্রদান করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, এটি আপনাকে 30টি ফিল্টার এবং 17টি ট্রানজিশন সহ 4K ক্লিপগুলি কাস্টমাইজ করতে দেয়৷ এটি একটি অডিওমিটারের সাথে আসে, যা মিনিটের মধ্যে একটি ভয়েসওভার যোগ করা সহজ করে তোলে। যা আপনার জন্য সত্যিই অ্যামেইজিং।
পরিশেষে
আশা করি আমি আপনাকে সেরা ভিডিও এডিটিং অ্যাপগুলো সম্পর্কে ধারণা দিতে পেরেছি। আপনি যদি উপরের ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যারগুলো ব্যবহার করে আপনার সামাজিক মিডিয়া ও চ্যানেলের জন্য ভিডিও তৈরি করেন আপনি প্রফেশনাল কোয়ালিটি সমৃদ্ধ ভিডিও তৈরি করতে পারবেন ইনশাল্লাহ। আমার এ পোস্ট আপনার ভাল লেগে থাকলে অবশ্যই আপানর বন্ধুদের সাখে শেয়ার করবেন।