আসসালামু আলাইকুম,, আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজকে আমি আপনাদের কাছে শেয়ার করতে চলেছি আমার পুরোনো সেই ছোটবেলার কিছু স্মৃতি (ছোট বেলার স্মৃতি কবিতা, ছোটবেলার স্মৃতি ছবি)।
মানুষের জীবনের সবচেয়ে আনন্দের জীবনটা হচ্ছে শৈশব জীবন। আজ আমি বড় হয়ে গেছি। আমার শৈশবের যুগ আর এখনকার যুগের অনেকটাই পার্থক্য। আমি গ্রামের পরিবেশে বড় হয়েছি। গ্রামে যখন বর্ষাকাল হত স্কুলের যাওয়ার অনেকটা অসুবিধা হয়ে পড়তো।
মাঝেমধ্যে নৌকায় চড়ে স্কুলে যেতাম সেটা খুবই ভালো লাগতো। আমার ছোট চাচা আমাকে তার কাঁধে করিয়ে স্কুলে পৌঁছে দিত। সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়লে আমি ভাবি যে আমি এতটা বড় হয়ে গেছি। আমি আজ ২৫ বছরের একজন যুবক।
ছোটবেলা বৃষ্টিতে ভিজে গোসল করা যে কত আনন্দদায়ক সেটা বলে বুঝাতে পারব না। আমাদের গ্রামের মাঝে ছোট ছোট কয়েকটি পুকুর রয়েছে। পুকুরে আমার খেলার সাথীদের নিয়ে আনন্দে মেতে উঠতাম। সেই পানির ভেতরে সাঁতার কাটা আর লুকোচুরি খেলায় কি যে ভালো লাগতো।
মাঝেমধ্যে মায়ের বকুনির কথা এখনো মনে পড়ে। মা যে কত নিষেধ করতো যে আর পুকুরে গোসল করবি না ,তারপরও যখন খেলার সাথীরা ডাকতো মাকে না জানিয়ে চলে যেতাম।
আমার ছোটবেলার স্মৃতি গুলো যখন মনে পড়ে , মা-বাবার সেই ছোট্ট শাসন গুলো খুব মিস করি। আসলে মা-বাবা আমাদের জন্য যা করে তা আমাদের ভালোর জন্যই করে। প্রতিটি মা-বাবাই স্বপ্ন দেখে তার সন্তান অনেক বড় হোক, জীবনে অনেক বড় কিছু করুক। সন্তানের সফলতা মানেই মা-বাবার সফলতা।
ছোট সময় আমি খুব খেলাধুলা প্রিয় ছিলাম। লুকোচুরি, গোল্লাছুট আরও কত ধরনের খেলা নিয়ে যে খেলার সাথীদের সাথে মেতে উঠতাম। আজকে তো আর সেই দিনগুলো নেই। আজকের একজন চতুর্থ শ্রেণি বা পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা হয়তো এ খেলা গুলোর নামই জানে না। কারণ আজকের সময়ে তারা ঘরে বসেই মোবাইল ফোনে অনেক ধরনের খেলা খেলতে পারে।
শৈশবে আম কুড়াতে অনেকটাই ভালো লাগতো। যখনি ঝড় হতো, তখনই প্রস্তুত থাকতাম কখন কাঁচা আম কুড়াবো। সেই দিনগুলো খুব মিস করি। এখন তো আমি অনেক বড় হয়ে গেছি এখন তো আর আম কুড়ানোর বয়স নেই। এখন লেখাপড়ার আর কর্মের জন্যে আমরা ব্যস্ত।
যখন আমি ক্লাস তৃতীয় শ্রেণীতে পড়ি দাদি-নানির মুখের গল্প শুনতে অনেক ভালো লাগতো। সেই রাজার গল্প, পরীর গল্প,ভূত পেত্নীদের গল্প এখন আর শুনতে পারি না। অনেক সময় গল্প শোনার জন্য তাদের মাথার পাকা চুলগুলো ধান দিয়ে তুলে দিতাম। এখন মনে হচ্ছে মধুর সময় গুলো হারিয়ে ফেলেছি।
বর্ষাকালে কাদার মধ্যে দাপাদাপি করা খুবই ভালো লাগতো। নদীতে মাছ ধরতে যেতাম অনেক আনন্দ লাগতো।বর্ষাকালে কাদা দিয়ে কত রকম যে প্রযুক্তি বানাতাম, তখন মাটির কাদা দিয়ে মোবাইল ফোন বানাইতাম। আর এখনকার সময় আমরা অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করি। আরো কত রকমের প্রযুক্তির ব্যবহার করি। অনেক সময় একা একা ভাবি তখনকার সময় আর এখনকার সময় কতটাইনা পার্থক্য।
ছোট সময় বড় কোন উৎসব আসার আগে থেকেই বাবা-মাকে দিয়ে পোশাক কিনে নেয়ার জন্য কান্নাকাটি করতাম। ছোট সময় আমি রঙিন পোশাকগুলো খুব পছন্দ করতাম। আমাদের বাড়ি থেকে দুই মাইল দূরে পহেলা বৈশাখ উদযাপন হতো। ওখানে কত রকমের খেলার জিনিস আর কত রকমের খাবার এর দোকান ছিল।
ওই সময় আনন্দটাই ছিল অন্যরকম। খেলনার পিস্তল , টমটম খেলনা গাড়ি , বাঁশির আওয়াজে ভরপুর থাকতো পুরো মেলায়। ঈদের দিনগুলোতেও খুব আনন্দে কাটাতাম। আগের ঈদের দিন আসলে চাচা, মামা খালুদের কাছ থেকে ঈদের বকশিশ পেতাম, আর সেই টাকা দিয়েই ঈদের দিনটা খুব আনন্দে কাটাতাম।
ছোট বেলার স্মৃতি কবিতা
আসলে জীবনের সবচেয়ে বড় কিছু হারানো বলতে শৈশবের দিনগুলোই, সময় একবার চলে গেলে আর ফিরে আসে না।
তো আজকের জন্য এতটুকুই সবাই ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন। পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর Facebook Group এর সাথেই থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।