আজকে আমি আপনাদের সাথে পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করব। আপনারা যদি পাইকারি পাইকারি ব্যবসা করতে চান তাহলে কোন প্রোডাক্ট নিয়ে বিজনেস করতে পারবেন,সেই সম্পর্কেই আজকে আমি আপনাদের সাথে আমি আলোচনা করব।
পাইকারি ব্যবসা কাকে বলে ?
উৎপাদনকারী যারা আছে তাদের কাছ হতে পাইকারি হিসেবে কোন পণ্য ক্রয় করে তা আবার খুচরা বিক্রেতা যারা আছে তাদের কাছে বিক্রি করাকেই কিন্তু পাইকারি ব্যবসা বলা হয়ে থাকে। এই বিজনেসে লাভ কিন্তু অনেক বেশি।
পাইকারি ব্যবসা কেন করবেন ?
পাইকারি ব্যবসাতে অনেক সহজেই অল্প পরিশ্রম করেই অল্প সময়ের ভিতরেই অনেক লাভবান হতে পারা যায় আর আরো অনেক সুবিধা আছে এই পাইকারি ব্যবসাতে।
১. ধানের ব্যবসা
আমাদের বাংলাদেশে কিন্তু ধান এর অনেক অনেক চাহিদা আছে। আর তার কারন হচ্ছে এই ধান থেকে চাল বানানো হয়।
আপনারা পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে কিন্তু ধান কিনে সেটা বিক্রি করতে পারবেন। আর তার জন্যই কিন্তু আপনাদেরকে গ্রাম এর বিভিন্ন হাটে গিয়ে ধান ক্রয় করে তারপরে বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানির কাছে বিক্রি করতে পারেন।
এই ব্যবসাতে প্রচুর পরিমানে লাভ আছে। আজকাল গ্রাম এর অনেক লোক আছে যারা এই ব্যবসা শুরু দিচ্ছে আর এই বিজনেসে অনেক লাভ রয়েছে।
২. চালের পাইকারি ব্যবসা
আমাদের দেশে চাউল এর প্রচুর চাহিদা আছে। কারণ আমরা ভাত ছাড়া অন্য কিছু খেতে পারি না।
অতএব আপনি চালের ব্যবসা করতে পারেন। আর তার জন্য কিন্তু আপনারা অনেক কৃষক আছে যাদের কাছ হতে ধান কিনে নিতে পারবেন।
তারপরে ভাঙ্গিয়ে চালে রূপান্তর করে পাইকারি হিসেবে বিভিন্ন দোকানদারদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন। আপনারা ইচ্ছা করলে খুচরাতেও বিক্রি করে দিতে পারবেন। এই ব্যবসা করে কিন্তু অনেক বেশি পরিমাণে লাভবান হয়ে যেতে পারবেন।
৩. শাক-সবজির পাইকারি ব্যবসা
শাক-সবজি এর পাইকারি ব্যবসা কিন্তু অনেক লাভজনক একটি পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া। আপনারা প্রায়ই টেলিভিশন আর পত্রিকাতে দেখে থাকেন যে ঢাকা কিংবা অন্যান্য যে সকল শহর আছে সেখানের বাজারগুলোতে সবজি এর যে পরিমানে দাম থাকে সেটা কৃষদের কাছ হতে কিনে প্রায় দিগুণ পরিমানে থাকে।
মাঝে মাঝে সেটা ৩ থেকে ৪ গুণও হয়ে যায়। আর এর মানে হচ্ছে আপনারা কৃষকের কাছ হতে যে সবজি ১০ টাকা কেজি দাম কিনে আনবেন সেটা শহর এর বাজারে গিয়ে কম করে হলে ও ২০ টাকা বিক্রি করতে পারবেন।
আপনি যদি সরাসরি কৃষকেদের কাছ থেকে কিনে আনেন তাহলে কিন্তু আপনাদের খরচ অনেকটাই কম পড়বে। কিন্তু অন্য পাইকারদের কাছ থেকে যদি আপনারা সবজি কিনে আনেন তাহলে আপনাদের খরচের পরিমান অনেক বেশি পরে যাবে, আবার অপরদিকে পরিবহণ খরচ ও অনেক কম হবে।
ঢাকা এর ভিতরে শাক-সবজি এর পাইকারি বাজার হল কারওয়ান বাজার আর শ্যাম বাজার তাছাড়া ও উত্তরবঙ্গের বগুড়াসহ দেশ এর বিভিন্ন অঞ্চলেই কিন্তু আসলে সবজি এর পাইকারি বাজার আছে। এই ব্যবসা শুরু করবার জন্য আপনাদের কম করে হলেও ৫ লাখ টাকার পুঁজির দরকার হবে।
৪. ব্যাগের পাইকারি ব্যবসা
আপনারা যদি এই পাইকারি ব্যবসাটি করতে চান তাহলে করতে পারেন কিন্তু আপনাদের পুজির পরিমান অনেক বেশি লাগবে। কিন্ত ১ বার যদি আপনাদের এই বিজনেস ভাল ভাবে চালু হয়ে যায় তাহলে কিন্তু অনেক লাভ ভাল হতে থাকবে এই বিজনেস থেকে।
নির্মাতাদের সাথে যোগযোগ করে জেনে নিতে পারেন আপনারা পাইকারি মূল্য। কোন এলাকা এর কোন দোকানে সেই ব্যাগ দিলে আপনাদের লাভ হবে সেটা হিসেব করে নিলেই ভাল হবে। ব্যাগ এর মান এর দিকে নজর দিতে হবে, তাহলেই সেটা কিন্তু বাজারে চলবেই।
৫. টি-শার্টের পাইকারি ব্যবসা
তুলনামূলকভাবে কম পুঁজি দিয়েই এই শুরু করা সম্ভব। আমাদের পড়শি দেশ বাংলাদেশে টি-শার্ট তৈরি করার বহু কারখানা আছে, যেইখানে স্বল্পমূল্যে বিশ্বমান এর টি-শার্ট তৈরি করা হয়ে থাকে।
উপযুক্ত অনুমতি নিয়েই কিন্তু সেইখান থেকে পাইকারি হারে টি-শার্ট আনার পরে আপনাদেরকে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দিতে পারবেন। সঠিক পদ্ধতিতে যদি কাজ করতে পারেন তাহলে কিন্তু এই বিজনেস থেকে বেশ ভাল পরিমানে লাভ করতে পারবেন।
৬. ঘড়ির পাইকারি ব্যবসা
আপনারা পাইকারি ব্যবসা আইডিয়াটা নিয়ে চাইলে ২ ভাবে এগোতে পারবেন,ব্র্যান্ডেড লাক্সারি ঘড়ি এর পাইকারি ব্যবসা আর নন-ব্র্যান্ডেড ঘড়ির পাইকারি ব্যবসা দিতে পারেন।
ব্র্যান্ডেড লাক্সারি ঘড়ি যদি করতে চান তাহলে আপনাদের ব্যবসা করবার জন্য দরকার কিন্তু আসলে বেশি পরিমাণে মূলধনের। দামি ব্র্যান্ডেড ঘড়ি এর প্রস্তুতকারক যারা আছে তাদের সঙ্গে আপনারা চুক্তিবদ্ধ হবার জন্য ১টি রেজিস্টার্ড কোম্পানির কাছে থাকা দরকার, প্রয়োজন ১টি সুলিখিত বিজনেস প্ল্যান করার।
সরাসরি প্রস্তুত করে এরকমের কোম্পানি এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন কিংবা তাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারেন। তারপরে বিভিন্ন ঘড়ি এর দোকান এর সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ঘড়ি অর্ডার দেবার আগে ঘড়ির দোকান এর সাথে সঙ্গে চুক্তি করে নিবেন।
নন-ব্র্যান্ডেড ঘড়ির পাইকারি ব্যবসা করার জন্য আপনাদের পুঁজি লাগবে অল্প পরিমানে,কিন্তু এইক্ষেত্রে ঘড়ি এর পাইকারি বাজার নিয়ে কিন্তু আপনাদেরকে ভাল করে জেনে নিতে হবে। কোন প্রস্তুতকারক কোম্পানি এর কাছ হতে যদি আপনারা থেকে ঘড়ি কিনে নেন তাহলে আপনাদের বেশি লাভ হবে, কাদের ঘড়ি এর বিক্রি ভাল, কিংবা কাদের ঘড়ি এর বাজার তৈরির সম্ভাবনা আছে সে সম্পর্কে আপনাদেরকে ভাল ভাবে জেনে নিতে হবে।
৭. সরিষার ব্যবসা
আমাদের বাংলাদেশে কিন্তু ধান এর মত সরিষার চাহিদা তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি। আর আপনারা এই সরিষা খাওয়া হতে শুরু করে দিয়ে কিন্তু অনেক কাজেই লাগাতে পারবেন।
আর সেজন্যই এইটার চাহিদা অনেক বেশি পরিমাণে রয়েছে । আপনারা সরিষা বিভিন্ন কৃষক কিংবা হাট বাজার থেকে কিনে আনতে পারবেন খুব সহজেই।
তারপরে আপনারা বড় বড় কোম্পানি এর কাছে গিয়ে তাদের কাছে বিক্রি করে দিতে পারবেন পাইকারি হিসেবে কিংবা আপনারা ইচ্ছে করলে সরিষা ভাঙ্গিয়ে নিয়ে তারপরে তেল বিক্রি করার কাজও করতে পারবেন খুচরা হিসেবে বা পাইকারি হিসেবে ও। এই ব্যবসাতে কিন্তু অনেক লাভ আছে।
৮. ভুট্টার ব্যবসা
ভুট্টার ব্যবসা ও কিন্তু অনেক লাভজনক একটি ব্যবসা। আপনারা যদি ইচ্ছা করেন তাহলে কিন্তু আপনারা হাট হতে ভুট্টা কিনে তার পরে সেগুলোকে বিভিন্ন কোম্পানিদের কাছে পাইকারি হিসেবে বিক্রি করে দিতে পারবেন। আমাদের দেশে কিন্তু ভুট্টা এর প্রচুর পরিমানে চাহিদা আছে।
কারন হচ্ছে এই ভুট্টা দিয়ে কিন্তু অনেক রকমের জিনিস বানানো হয়ে থাকে। তাই এটার চাহিদা অনেকটাই বেশি। আপনারা এই পাইকারি ব্যবসাটি যদি করত্যে চান তাহলে শুরু করে দিতে পারেন।
৯. কসমেটিকস পণ্যের ব্যবসা
কসমেটিকস যে সকল প্রোডাক্ট আছে সেগুলোর কিন্তু অনেক চাহিদা। কারন বর্তমান সময়ে মেয়েরা কিন্তু কসমেটিকস পণ্য বেশি পরিমানে পছন্দ করে থাকে । এই ব্যবসাতে প্রচুর পরিমাণে লাভ রয়েছে।
আপনারা কিন্তু ইচ্ছা করে পাইকারি হিসেবেই এই ব্যবসাটি শুরু করে দিতে পারেন। অর্থাৎ বড় বড় কোম্পানিদের কাছ হতে কসমেটিকস পণ্য কিনে তারপরে বিভিন্ন গ্রামে কিংবা খুচরা ব্যবসায়ী যারা আছে তাদের কাছে পাইকারি হিসেবে বিক্রি করার কাজ করতে পারেন।
১০. শার্ট- প্যান্টের ব্যবসা
এই ব্যবসাতে কিন্তু অনেক বেশি পরিমাণে আছে। লক্ষ লক্ষ মানুষ আছেন যারা এই ব্যবসাটি করে সফলতা অর্জন করেতেছে। আর তার কারন হচ্ছে প্রত্যেকটা মানুষেরই কিন্তু আসলে শার্ট-প্যান্টের দরকার হয়ে থাকে।
আর এর থেকে বুজাই যায় যে , এর চাহিদা অনেক বেশি পরিমাণে রয়েছে। অতএব আপনারা ইচ্ছা করলে কিন্তু শার্ট প্যান্টের পাইকারি ব্যবসা শুরু করে দিতে পারেন।
অর্থাৎ, বিভিন্ন কোম্পানিদের কাছ হতে আপনাদেরকে শার্ট প্যান্ট কিনতে হবে আর তারপরে আপনাদেরকে সেটা বিভিন্ন খুচরা ব্যবসায়ী যারা আছে তাদের কাছে বিক্রি করে দিতে হবে।
আর আপনারা ইচ্ছা করে নিজেরাও বানিয়ে তারপরে সেগুলোকে খুচরা ব্যবসায়ী যে সকল মানুষেরা আছে তাদের কাছে পাইকারি হিসেবে সাপ্লাই করে দিতে পারেন।
আমাদের শেষ কথা
তাহলে আজকে আমাদের এই আর্টিকেলের ভিতরে আপনাদের সাথে ১০ টি পাইকারি ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করলাম। আশা করি যে , আপনাদের এই ১০ টি আইডিয়া থেকে যে কোন একটি বিজনেস পছন্দ করে সেটি করতে পারবেন।