আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আশা করি সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছি। আজকের বিষয়ঃ অশ্বগন্ধা পাউডার খেলে কি লম্বা হওয়া যায় । তো আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।
অনেকেই অনেক কথা বলতে পারে কিন্তু গবেষণায় প্রমাণিত শুধুমাত্র অশ্বগন্ধা আপনার উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করবে না। একজন ব্যক্তির উচ্চতা সম্পূর্ণরূপে তার শরীরের হরমোন, বিশেষ করে বৃদ্ধির হরমোনের সাথে সম্পর্কিত। যদি আপনার এখনও ১৮ বছর না হয়ে থাকে, আপনার আরও কয়েক সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কিন্তু আপনি যদি এটি সম্পর্কে খুব চিন্তিত হন, তাহলে আপনাকে অবশ্যই একজন এন্ডোক্রিনোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করতে হবে, যিনি আপনার হরমোনের ঘাটতির জন্য সম্পূর্ণরূপে মূল্যায়ন করবেন এবং সঠিক দিকনির্দেশনা দিবেন। অশ্বগন্ধার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসাবে, এটি পেটে অস্বস্তি ডায়রিয়া বমি হতে পারে। তাই এ ধরনের প্রতিকার এড়িয়ে চলাই ভালো
অশ্বগন্ধার উপকারিতা
আগেই বলা হয়েছে, অশ্বগন্ধা উচ্চতা বাড়াতে সাহায্য করে না। কিন্তু এটি মহিলাদের ফারটিলিটি এবং পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (PCOS) এর মতো অবস্থার ক্ষেত্রে অনেক উপকারী সুবিধা রয়েছে। তবে অশ্বগন্ধা কিভাবে নিতে হয় সে সম্পর্কে নারীদের আগে থেকেই জানতে হবে।
নিম্নে অশ্বগন্ধার কিছু গুনাগুন উল্লেখ্য করা হলো ,
অশ্বগন্ধার ওষুধই গুনাগুন / অশ্বগন্ধা পাউডার খেলে কি লম্বা হওয়া যায়
১) শক্তিবর্ধক: অশ্বগন্ধা গাছের রস আমাদের শরীরের জন্য শক্তিবর্ধক। চলাচল করার শক্তি, কর্মশক্তি কিংবা ইন্দ্রীয়শক্তি বাড়াতে বিশেষ কার্যকরী অশ্বগন্ধা।
২) স্নায়ুবিক রোগে উপশম কারি: অশ্বগন্ধারএর মূল ও পাতা স্নায়ুবিক বিভিন্ন রোগে নিরোগ করার ক্ষমতা রাখে। দুধ ও ঘিয়ের সঙ্গে পাতা জ্বাল দিয়ে খেলে পুষ্টি পায় শরীর; মস্তিষ্কের উর্বরতা বৃদ্ধি পায়।
৩) অনিদ্রা: ঘুমের প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে অশ্বগন্ধার বহুল ব্যবহার লক্ষ করা গেছে। ভালো ঘুমের জন্য অশ্বগন্ধা গুঁড়ো চিনিসহ ঘুমানোর আগে এক গ্লাস পান করে নিলে ঘুমের মান লক্ষনীয় ভাবে ভালো হয়।
৪) ঠাণ্ডা- কাশি: ঠাণ্ডা, কাশি থেকে মুক্তি পেতে অশ্বগন্ধার মূল গুঁড়ো করে সেবন করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
৫) চোখে ব্যথা: চোখের প্রদাহ থেকে মুক্ত করতেও এর পাতা বিশেষ উপকারী।
৬) ক্রনিক ব্রংকাইটিস: অনেকে অনেক রোগে ভেলকিবাজি দেখিয়ে থাকেন। এটিও ক্রনিক ব্রংকাইটিসে ভেলকিবাজি দেখানোর মতো একটি ওষুধ।
৭) শুক্রাণু বাড়াতে অশ্বগন্ধার ব্যবহার জনপ্রিয়।
8) ইনসমনিয়ায় রোগ দেখা গেলেও অশ্বগন্ধা ব্যবহার করতে পারেন।
অশ্বগন্ধা পাউডার খেলে কি লম্বা হওয়া যায় ?
উচ্চতার জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা এমন একটি বিষয় যা আজকাল বেশিরভাগ মানুষই এর সাথে পরিচিত হচ্ছে। অশ্বগন্ধা উচ্চতার সাপলিমেন্ট হিসেবে বিভিন্ন আকারে পাওয়া যায়। উচ্চতার জন্য আপনি শীতকালীন চেরি দুধ বা ঘি বা এমনকি জলের সাথে চুর্ণ, ট্যাবলেট এবং গুঁড়ো আকারে খেতে পারেন।
উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য অশ্বগন্ধা পাউডার খুবই কার্যকরী । যারা অশ্বগন্ধা উচ্চতার বৃদ্ধি জন্য ব্যবহার করতে চাচ্ছেন, তাদের জন্য অশ্বগন্ধা পাউডার সেবন করাই সবথেকে উপকারী। অশ্বগন্ধা পাউডার পানির সাথে খাওয়া হলে খুব সহজেই পরিপাক হয় এবং আমাদের শরীরে খুব দ্রুত কাজ করে।
ডায়বিটিকস নিরাময়ে অশ্বগন্ধা
পরীক্ষায় পাওয়া যায়, অশ্বগন্ধা ডায়বেটিকস যেসকল রোগীর রয়েছে, তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমানোর জন্য ইন্সুলিন ক্ষরণ পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়। তাই ডায়েবিটকস হলে ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে অশ্বগন্ধা ব্যবহার শুরু করতে পারেন।
ক্ষত নিরাময়ে অশ্বগন্ধার ব্যবহার
ক্ষত নিরাময়ে অশ্বগন্ধা আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের অন্যতম একটি উপাদান। অশ্বগন্ধার প্রলেপ ক্ষতিগ্রুস্থ ত্বকের উপর লাগানো হয়। বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে পেয়েছে অশ্বগন্ধার প্রলেপ এর পরিবর্তে যদি এটা খাওয়া যায় তবে এর ফল আরো ভালো পাওয়া যায়।
চুলের জন্য অশ্বগন্ধা / অশ্বগন্ধা পাউডার খেলে কি লম্বা হওয়া যায়
চুল পড়া কমানো থেকে শুরু করে চুল কে দীর্ঘ করা উজ্জ্বল করা এবং চুলে পুষ্টি জোগাতে অশ্বগন্ধা ব্যাপক ভাবে কার্যকরী। তাছাড়া অশ্বগন্ধার এন্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকাল প্রতিরোধ করে এবং চুলের স্বাভাবিক রঙ বজায় রাখতে সাহায্য করে।
অশ্বগন্ধা ও মানসিক চাপ
গবেষণা পাওয়া যায় যে অশ্বগন্ধা মানসিক চাপকে উন্নত করতে পারে এবং সিরাম কর্টিসল (স্ট্রেস হরমোন) মাত্রা হ্রাস করতে পারে (লোপ্রেস্টি, 2019)। মানসিক চাপ কমার ফলে, আপনি আরও ভাল ঘুমাতে পারবেন, আরও ভারসাম্যপূর্ণ ক্ষুধা এবং কম আবেগপূর্ণ খাওয়ার অভ্যাস থেকে মুক্তি পেতে পারেন। কিন্তু বিজ্ঞানীরা অশ্বগন্ধা এবং ওজনের মধ্যে সরাসরি সংযোগ এখনও পুরোপুরি খুজে পাই নি।
সবশেষেঃ
অ্যাডাপটোজেন এবং জিনসেং বিকল্প হিসাবে, অশ্বগন্ধা অনেক অবস্থার জন্য উপযুক্ত। গবেষণায় দেখা গেছে যে এটি ক্যান্সার রোগীদের টিউমারকে বাধা দিতে পারে এবং আলঝেইমার রোগীদের স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে।
ঐতিহ্যগতভাবে, এটি পরিস্থিতি নির্বিশেষে সাধারণ জীবনীশক্তি প্রচার করতে ব্যবহৃত হয়। অশ্বগন্ধা দুর্বল বা অসুস্থ শিশুদের, প্রাপ্তবয়স্কদের বেশি মনোযোগ বা একাগ্রতা খুঁজতে এবং বয়স্কদের ডিমেনশিয়া প্রতিরোধ করার জন্য দেওয়া হয়।
তাই আমরা সবাই অশ্বগন্ধা খেতে পারি এটি আমাদের স্বাস্থের জন্য সবদিক থেকেই উপকারি।
পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।