আজকের পোস্টে আমরা একটি বাড়ি একটি খামার’ নামক প্রকল্প নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি। এটি আসলে কি, একটি বাড়ি একটি খামার লোন পদ্ধতি, কোন কোন ক্ষেত্রে টাকা পাবেন এসকল বিষয় নিয়ে আজকের এ পোস্টে কথা বলা হবে।
একটি বাড়ি একটি খামার সম্পর্কে
‘একটি বাড়ি একটি খামার’ হলো বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া একটি সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প। এর আরেক নাম ‘আমার বাড়ি আমার খামার’। মূলত গ্রামীণ গরিব জনগোষ্ঠীকে আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন করার জন্য ও এর মাধ্যমে দেশের দারিদ্রতার হার হ্রাসের লক্ষেই মূলত এই প্রকল্পের শুরু। এই প্রকল্পের সূচনা ঘটে ২০০৯ সালে যা এখনো চালু রয়েছে। এই প্রকল্প ৯০ হাজার গ্রামে দুই কোটিরও বেশি ব্যক্তিকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। বর্তমানে এর মোট মূলধন প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার মতো। [বুরো বাংলাদেশ এনজিও লোন সম্পর্কে এখান থেকে পড়ুন]
একটি বাড়ি একটি খামার’ কি ধরণের ঋণ দিয়ে থাকে?
একটি নতুন ব্যবসা শুরু করতে আমাদের ভালো একটি পরিমাণের মূলধন প্রয়োজন। কিন্তু এই মূলধন পাওয়াই বা যাবে কি করে? ব্যাংক থেকে লোন নেওয়া সম্ভব যার জন্য জামানত ও অন্যান্য নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। গ্রামের সাধারণ গরিব জনগণকে সাধারণত কোনো ব্যাংকই ঋণ নিতে দিবে না।
আর এই ক্ষেত্রেই এ প্রকল্পটি কাজ করে। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প গ্রামের ক্ষদ্র ব্যবসায়ীদের বা যারা ছোটখাটো কোনো ব্যবসা প্রতিষ্টা করতে চায় এমন ব্যক্তিদের সহায়তায় ঋণ প্রদান করে থাকে থাকে মূলত খামার টাইম যেমন হাঁস-মুরগি, গরু বা ছাগল লালন পালন, মৎস চাষ, ফসলের বীজ ক্রয় ইত্যাদি কাজের জন্য ঋণ দিয়ে থাকে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা ও নারী উদ্যোক্তারাও এই ঋণের সহায়তায় উপকৃত হয়েছে তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
তারা আপনাকে প্রথমে পর্যায়ে ৫০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ প্রদান করতে পারে। আপনি যে ধরণের ব্যবসার জন্য এ ঋণ নিয়েছেন শুধু সে ব্যবসার জন্যই এই ঋণ ব্যবহার করতে পারবেন। এটি যেহেতু একটি সরকারি প্রকল্প তাই এর ঋণের উপর সুদের হার অন্য যেকোনো ব্যাংক যা এনজিও এর চেয়ে কম। আপনি মাত্র ৭% সুদে এই ঋণ নিতে পারবেন। এর পাশাপাশি কোনো জামানতের প্রয়োজন হবে না। ঋণ পরিশোধ করার জন্য ১৮ মাস পর্যন্ত সময় পেতে পারেন। ঋণ সাপ্তাহিক বা মাসিক কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবেন।
একটি বাড়ি একটি খামার লোন পদ্ধতি
এই প্রোজেক্ট থেকে লোন নেওয়া অনেক সহজ। প্রথমে ঠিক করুন আপনি কি ধরণের ব্যবসা বা খামারের জন্য ঋণটি চান। তারপর আপনাকে নিকটস্থ পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকে যান অথবা প্রকল্প অফিস যান। কিংবা আপনি অন্যান্য কোনো সরকারি অফিসে গিয়েও জেনে আসতে পারেন। সেখানে আপনি আপনার ডকুমেন্টস নিয়ে যাবেন।
কি কি ডকুমেন্টস লাগবে তা নিচে দেওয়া হবে। আর তারপর তারা আপনাকে একটি ফর্ম দিবে সেটি পূরণ করতে হবে। ওই ফরমে আপনার নাম, আপনার পিতা ও মাতার, বর্তমান ঠিকানা ও স্থায়ী ঠিকানা, আপনার আয়ের উৎস ইত্যাদি দিতে হবে। আর আপনি চাইলে অনলাইন থেকেও ফর্ম পূরণ করতে পারবেন। তারপর তারা আপনার ঋণের আবেদন যাচাই করে দেখবে এবং তারপর আপনাকে ঋণ দিবে।
একটি বাড়ি একটি খামার থেকে কারা কারা লোন নিতে পারবেন?
বাংলাদেশের যেকোনো সুস্থ সচেতন ব্যক্তিই এখান থেকে লোন নিতে পারবেন। কিন্তু তারা মূলত গ্রামীণ সম্প্রদায়ের মানুষজনদের লোন দিতে থাকে। ও যারা দরিদ্র এবং এই অর্থের সাহায্য নিয়ে নিজে স্বচ্ছল হতে চায়। তার পাশাপাশি আপনাকে অবশ্যই কর্মক্ষম হতে হবে। আপনি যদি এমন ব্যক্তি হয়ে থাকেন তবে আপনার লোন পাওয়ার সুযোগ অনেক বেশি হয়ে যাবে।
একটি বাড়ি, একটি খামার থেকে ঋণ নেওয়ার জন্য শর্ত কি কি ও কি কাগজপত্র প্রয়োজন?
ঋণ পাওয়ার জন্য বেশি কিছু শর্ত নেই বা বেশি একটা কাগজপত্র লাগে না। একজন সুস্থ, সচেতন, কর্মক্ষম নাগরিক হতে হবে। গ্রাহকের ন্যাশনাল আইডি কার্ড, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্সের কপি জমা দিতে হবে। গ্রাহক সর্বোচ্চ ১৮ মাস সময় পাবেন ঋণ পরিশোধের জন্য। ঋণ গ্রহণের তিন মাস হতে কিস্তি দেওয়া শুরু করতে হবে।
একটি বাড়ি একটি খামার এর প্রধান কার্যালয়
প্রবাসী কল্যাণ ভবন (লেভেল-১৩), ৭১-৭২ ইস্কার্টেন গার্ডেন, ঢাকা।
বিভাগীয় অফিস
আপনি প্রতিটি বিভাগীয় অফিসের নাম্বারে ফোন দিয়ে সবকিছু জেনে নিতে পারেন। নিম্নে প্রতিটি বিভাগের বিভাগীয় অফিসের যোগাযোগের ঠিকানা দেওয়া হলো।
বরিশাল
DCO এর ফোন নাম্বারঃ 01958601418
BRDB এর ফোন নাম্বারঃ 01938879245
চট্টগ্রাম
DCO এর ফোন নাম্বারঃ 01958601454
BRDB এর ফোন নাম্বারঃ 01938879518
ময়মনসিংহ
DCO এর ফোন নাম্বারঃ 01958601414
BRDB এর ফোন নাম্বারঃ 01938879289
রাজশাহী
DCO এর ফোন নাম্বারঃ 01958601434
BRDB এর ফোন নাম্বারঃ 01938879133
রংপুর
DCO এর ফোন নাম্বারঃ 01958601442
BRDB এর ফোন নাম্বারঃ 01938879062
সিলেট
DCO এর ফোন নাম্বারঃ 01958601450
BRDB এর ফোন নাম্বারঃ 01938879429
খুলনা
DCO এর ফোন নাম্বারঃ 01958601424
BRDB এর ফোন নাম্বারঃ 01938879212
আপনি যে বিভাগে থাকেন। সে বিভাগের অফিসে ফোন দিলেই, তারা আপনাকে সবকিছু ডিটেইলসে বলে দিবেন। আর এই প্রকল্পের মাধ্যমে টাকা ঋণ নেওয়া নিরাপদও যেহেতু এটি সরকারি। আর তার পাশাপাশি ঋণের উপর ইন্টারেস্ট রেট মাত্র ৭%।
পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।