আজকের পোস্টে আমরা বাংলাদেশের সবচেয়ে ভালো এনজিওগুলোর একটি জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন নিয়ে কথা বলতে আচ্ছি। জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন কি, আপনি এখান থেকে কি কি ধরণের লোন পাবেন, জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন লোন পদ্ধতি, কারা কারা লোন পাবেন ইত্যাদি নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি।
জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন কি?
জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন হলো একটি নন গভার্নমেন্ট অরগানাইজেশান সংক্ষেপে এনজিও। একে সংক্ষেপে জেসিএফ ও বলা হয়। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্মানিত ও সুখ্যাত এনজিও সমূহের একটি। ১৯৭৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত জগরণী চক্র ফাউন্ডেশন সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। জেসিএফ মূলত শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য ইত্যাদি মৌলিক অধিকার নিয়ে কাজ করছে। এর পাশাপাশি তারা কৃষি ও নানা ব্যবসা বাণিজ্য প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্যও কাজ করে যাচ্ছে।
তাদের উদ্দেশ্য হলো দেশের গরিব ও অবহেলিত জনগণকে আর্থিকভাবে সহায়তা করে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেয়া। তারা বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই কাজ করছে। বাংলাদেশের ৫১ জেলার ২৮৬ উপজেলায় জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছে।
যা ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। বর্তমানে তাদের সারা দেশে ৬৪০ টি অফিস রয়েছে। সারা দেশে আট লক্ষেরও বেশি মানুষ তাদের সেবা গ্রহণ করেছেন যার পাঁচ লক্ষের অধিকই হলো নারী।
জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন লোন পদ্ধতি, কি কি লোন প্রদান করে?
সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ: মূলত গ্রামীণ হতদরিদ্র জনগণের আয়বৃদ্ধি, দারিদ্র বিমোচন, নারীদের ক্ষমতায়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে এই ক্ষুদ্র ঋণ প্রকল্পটি কাজ করছে। বর্তমানে দেশের ৪৭ টি জেলায় সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ ঋণ প্রকল্পটি কাজ করছে। তারা নানা সরকারি বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের কাজ থেকে আর্থিক সহায়তা পায়।
এই প্রকল্পে এখন পর্যন্ত প্রায় ২৪৪ বিলিয়িন টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে। ঋণগ্রহীতার সংখ্যা সাড়ে চার লাখেরও বেশি যার সাড়ে তিন লাখই হলো নারী। কৃষকদের ফসল ক্রয়ে সহায়তা করা। স্বল্প আয়ের কৃষকদের বিকল্প ফসল চাষের প্রবর্তন করা। কৃষকদের ফসল চাষ ও গবাদিপশু পালন ও আয়বৃদ্ধিমূলক কাজের জন্য ফ্লেক্রিবল লোন প্রদান।
তারা কৃষকদের মধ্যে জ্ঞান বৃদ্ধি ও সহায়তা করার জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও স্থাপন করেছে। যেখানে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি আপনি নানা ধরণের পরামর্শও পাবেন।
জাগরণ:
গ্রামীণ ও শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে এই ঋণ প্রকল্পের আওতায় ঋণ প্রদান করা হয়। ঋণগ্রহীতা কৃষি ব অন্য যেকোনো আয়বৃদ্ধিমূলক কাজের জন্য এই গ্রহণ করতে পারবে। ঋণের পরিমাণ আলোচনা সাপেক্ষ। ঋণটি এক বছরের জন্য প্রদান করা হয়। ঋণ সাপ্তাহিকভাবে কিস্তি হিসেবে পরিশোধ করতে হবে।
বছরে মোট ৪৬ বার কিস্তির টাকা প্রদান করতে পারবেন। সর্বোচ্চ সিলিং টাকার পরিমাণ ৪৯ হাজার টাকা। ঋণের উপর মুনাফার হার ২৫%। গ্রেস পিরিয়ড ১৫ দিন। অর্থাৎ একটি একটি কিস্তি পরিশোধের জন্য কিস্তি পরিশোধের মূল দিনের পর ১৫ দিন অতিরিক্ত সময় পাবেন। ১৫ সপ্তাহের কিস্তি অগ্রিম পরিশোধ করা লাগতে পারে।
সেল্ফ রিলায়েন্ট প্রোজেক্ট (Self Reliant Project):
এটি আসলে কোনো ঋণ প্রকল্প নয়। এখানে মূলত আপনি তাদের জন্য কাজ করতে পারবেন এবং এর মাধ্যমে জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনকে আয় করাবেন। এখানে শুধু নারীরাই কাজ করতে পারবে। তাদেরকে প্রয়োজনে কাজের প্রশিক্ষণও দেয়া হবে যার মাধ্যমে তাদের জ্ঞান ও পণ্য পরিসীমা বৃদ্ধি পাবে তথা তাদের মজুরি বৃদ্ধি পেতে থাকবে।
মূলত এমব্রয়ডারি কাজ করানো হবে। এবং সেই প্রোডাক্ট স্থানীয়ভাবে এমনকি বিদেশেও বিক্রি করা হবে। বর্তমানে ৪ জেলায় এই প্রকল্পটি চালু আছে ও ৭০০ এরও অধিক ব্যক্তি এ কাজে নিয়োজিত।
জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন থেকে কারা কারা লোন পাবেন?
লোন পাবার জন্য আপনাকে অবশ্যই ১৮ বছরের চেয়ে বেশি বয়স হতে হবে ও বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। এর পাশাপাশি কিছু কিছু প্রকল্পে আলাদা কিছু শর্ত বা নিয়ম নীতি পালন করতে হয়। কিছু কিছু ঋণ রয়েছে যা সাধারণত নারীদের প্রদান করা হয় বা নারীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়। কিছু প্রকল্প আছে যা কেবল দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে প্রদান করা হয়।
আবার কিছু ঋণ প্রকল্প আছে যেখান থেকে ঋণ নিতে আপনাকে কৃষির সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত থাকতে হবে। তো আপনি কি আপনার নিকটিস্থ অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করে দেখতে পারেন যে আপনি আপনার কাংখিত ঋণের যোগ্য কিনা।
জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন থেকে লোন পেতে কি কি কাগজপত্র লাগবে?
জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন থেকে লোন পেতে আপনার বিভিন্ন ধরণের কাগপত্র লাগতে পারে। মূলত আপনার লোন প্রকল্পের উপর নির্ভর করে যে আপনার কি কি কাগজ লাগবে।
কিন্তু আপনার অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র জমা দিতে হবে যার মাধ্যমে আপনি যে বাংলাদেশের নাগরিক তা নিশ্চিত করা যাবে।
এর পাশাপাশি আপনার সদ্য তোলা কয়েক কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবিও লাগতে পারে।
জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন এর প্রধান কার্যালয়:
জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয় হলো:
৪৬, মুজিব সড়ক, যশোর, খুলনা।
জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন বিভাগীয় কার্যালয়:
বরিশাল: সরকারি শিশু পরিবারের পাশে, বরিশাল – পিরোজপুর হাইওয়ে, ঝালকাঠি।
সিলেট: ব্লক: ই, বাড়ি নং-৬১, রোড নং-০২, শাহাজালাল উপ শহর, পিএস: শাহ পরান, সিলেট।
রংপুর: কাকলি মঞ্জিল বাবুখা, রংপুর সদর, রংপুর।
রাজশাহী: শহীদ জাহান আলী বিশ্বাস রোড, রাজশাহী।
ঢাকা: নূর মহল হোটেল এর পার্শবর্তী, রোড নং- ১১, ডিওএইস রোড, ঢাকা।
ময়মনসিংহ: ধোড়াউয়া, পাটগুদাম সার্কেল, ময়মনসিংহ।
পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।