গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ভিপি নুরুল হক নূর বলেছেন, “আমরা এক ফ্যাসিবাদী শাসনকে বিদায় করে আরেকটি স্বৈরাচারকে ফিরিয়ে আনতে চাই না। এ দেশে আর রাজনীতির নামে জমিদারি প্রথা রাখতে চাই না।” তিনি এই মন্তব্য করেন শনিবার (২ নভেম্বর) দাউদকান্দি উপজেলা মডেল মসজিদ ঈদগাহ মাঠে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখার সময়।
নুরুল হক নূর তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতি এবং সমাজে প্রচলিত পরিবারতন্ত্রের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “এ দেশে আর এমপির ছেলে এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যানের ছেলে উপজেলা চেয়ারম্যান আর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের ছেলে চেয়ারম্যান হতে পারবে না।” নূরের এই বক্তব্যে তিনি সমাজে ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা বংশানুক্রমের রাজনীতির বিরুদ্ধে তার দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করেন।
তিনি দাবি করেন, ভারতের আশীর্বাদে আওয়ামী লীগ দেশে ফ্যাসিবাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে, যা মূলত পরিবারতন্ত্র এবং দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের রাষ্ট্রব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করার একটি মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। নূর উল্লেখ করেন যে, জনগণের সহযোগিতায় শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকারকে ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে বিদায় করতে বাধ্য করা হয়েছে। এই বিপ্লবের শুরুর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “২০১৮ সালে আমরাই প্রথম কোটা আন্দোলন শুরু করেছিলাম, যা পরবর্তীতে দেশের সকল শ্রেণির মানুষের সমর্থন পেয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের আন্দোলন গতি পায় এবং আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে।”
নূর আরও বলেন, এই পরিবর্তনের পেছনে গণঅধিকার পরিষদের প্রধান লক্ষ্য হলো, একটি অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রতিষ্ঠা করা, যা একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তবে তিনি সতর্ক করে দেন যে, অন্তর্বর্তী সরকার এই নির্বাচনের প্রক্রিয়া থেকে কোনো ধরনের ব্যত্যয় ঘটালে বা পক্ষপাতিত্ব করলে গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে কুমিল্লা জেলা গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, কেন্দ্রীয় সদস্য ফয়সাল আহমেদ ও মেহেদী হাসান, এবং স্থানীয় নেতা জাহিদ হাসান ও অধ্যাপক মশিউর রহমান প্রমুখ।