বৈষম্যবিরোধি ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বাংলাদেশের ছাত্রদের ক্ষমতায় যাওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছেন। তার মতে, ছাত্ররা সবসময় রাজনীতির মাধ্যমে ক্ষমতার প্রবাহকে তরান্বিত করতে ব্যবহৃত হয়েছে এবং এখনও হচ্ছে। গত সোমবার, নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই বিষয়টি প্রসঙ্গ করেন।
আব্দুল হান্নান মাসউদ মন্তব্য করেন, ‘‘ক্ষমতায় যাওয়ার সেইফ হাতিয়ার হলো ছাত্ররা। আমাদের সবসময়ই ব্যবহার করা হয়েছে, হচ্ছে।’’ এভাবে ছাত্রদের ওপর রাজনৈতিক চাপ তৈরি হওয়ার ফলে তাদের মুক্তির আশা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে বলেও তিনি দাবি করেছেন। এই বক্তব্যটি দেশের ছাত্র সমাজের বর্তমান অবস্থান নিয়ে গভীর চিন্তা ও বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
চলতি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ছাত্রদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নানা সময়ে বিভিন্ন আন্দোলন বা সরকার বিরোধী কর্মকাণ্ডে ছাত্ররা প্রধান ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে মাসউদের মন্তব্যের মধ্যে এক ধরনের হতাশা এবং ক্ষোভ ফুটে উঠেছে, যেখানে তিনি স্পষ্টতই বলছেন যে ছাত্ররা কখনোই তাদের পূর্ণ ক্ষমতা ও অধিকার ফিরে পায়নি। বরং তাদের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যবহারের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার উপায় হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর ফলে ছাত্র সমাজের প্রতি সমাজের ও রাজনীতিবিদের দৃষ্টিভঙ্গি এক ধরনের দ্বৈততার মধ্যে পড়ে যায়।
তবে এধরনের মন্তব্য কোন নতুন ঘটনা নয়, বিশেষ করে বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্রদের রাজনৈতিক ব্যবহারের যে দীর্ঘ ধারাবাহিকতা রয়েছে, তা সবারই জানা। ছাত্রদের বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগ্রাম কখনো কখনো তাদের নিজস্ব অধিকার আদায়ের জন্য ছিল, আবার কখনো রাজনৈতিক দলের স্বার্থে তাদেরকে ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ছাত্র সমাজের মধ্যে আজও এই প্রশ্ন উঠে, তারা কি কখনো তাদের আত্মসম্মান ও অধিকার ফিরে পাবে?
আব্দুল হান্নান মাসউদ এই পোস্টের মাধ্যমে ছাত্র সমাজের দুঃখ-দুর্দশা ও তাদের প্রতি ব্যবহৃত হওয়া রাজনৈতিক সুযোগ-সন্ধানী মানসিকতার বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ জানানোর চেষ্টা করেছেন। তবে, তার এই মন্তব্য সমাজে ছাত্রদের এক অবস্থান ও রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়ে নতুন করে ভাবার সুযোগ সৃষ্টি করেছে।