স্বাধীন বাংলার সচেতন নাগরিক আমরা।আমরা তো স্বাধীন পাব্লিক যে যা খুশি করতে পারি।যেমন আগে জন্মদিন উপলক্ষে আপরা হালকা করে কেক গালে লাগিয়ে মানুষ কে উইশ করতাম।কিন্তু এখন আর সেই রীতি নেই। এখন আমরা আর একটু বেশি স্বাধীন হয়েছি।তাই আমরা এখন আরো অনেক বেশি বেশি করে সব কিছু লাগিয়ে বেড়াই।
আচ্ছা আপনি একবার ভেবে দেখুন তো জন্মদিন উপলক্ষে খাবার জিনিস নষ্ট করা কোন সংস্কৃতির অংশ? আর কোন সভ্যতার অংশ? আমরা তৃতীয় বিশ্বে বাস করছি।সে হিসেবে আমরা সকলেই সভ্য মানুষ হিসেবেই তো জানতাম।ইদানিং কালে নতুন একটি ট্রেন্ড প্রায় দেখে থাকি তা হলো জন্মদিন উপলক্ষে বার্থডে বয় বা বার্থডে গার্ল কে সবাই মিলে আটা ময়দা মাখিয়ে, ডিম মাথায় ভেঙ্গে, কেক মুখে মাখিয়ে খুব আনন্দ করেন।সেগুলো ছবি আবার বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে আপলোড করে আমাদের মতো কিছু মানুষের মুখ খুলিয়ে নেন বেকার বেকার।
আচ্ছা একবার ভেবে দেখুন তো যেই টাকা গুলো আপনাদের ক্ষনিকের আনন্দ নিয়ে আসে এই সব জিনিস নষ্ট করে সেই টাকা গুলো কিন্তু কারো এক বেলা জলন্ত পেটে শান্তি দিতে পারে। তারা কিন্তু খাবার গুলো খাবে অন্তত নষ্ট করবেনা।
এখন আধুনিক মানুষ জন আমায় বলবে আমি আন সোশ্যাল প্রানী আমি ট্রেন্ড বুঝিনা। আচ্ছা খাবার জিনিস নষ্ট করে কিসের ট্রেন্ড ফলো করেন আপনারা? এবার কিছু পাব্লিক বলবে যে, “তুই কয়টাকা দান করিস?” ভাই আমি ধরে নিলাম নাহয় এক পয়সাও দান করিনা তবে আমি অযথা অপচয়ও করিনা।
আপনারা গায়ে মেখে পায়ের তলে ল্যাটাঘ্যাটা পাকিয়ে ৩২ টাকা হালি ডিম ১০ -১৫ টা নষ্ট করতেই পারেন ফুটপাতে নিরামিষ খেতে খেতে হাফিয়ে যাওয়া বাচ্চা গুলো মা বাবা’র কাছে কিন্তু মাংস খাওয়ার আবদার করতে পারেনা।বলে যে, “মা আমরা ডিম কবে খাবো? সেই কবে ডিম খাইছি” আর আপনাদের এত বুকের পাটা যে আপনারা সেই ডিম নষ্ট করেন? বাহ কি বাহাদুর আপনারা।
১৮০ টাকা পাউন্ড কেক (যদিও জন্মদিন উপলক্ষে ৬০০/- এর নিচে কেক কেনা হয়না এখন)সেই কেক গায়ে মেখে শেষ করেন জানেন কত মানুষ কেক খেতে শখ জাগলেও খেতে পারেনা। আপনি যে ময়দা মাথায় ঢালছেন তা দিয়ে একজনের তিন বেলার খাবার রুটি হতো। কে অধিকার দিল আপনাকে সেগুলো নষ্ট করার? (নষ্ট হওয়া আর জিনিস গুলো তো বাদই দিলাম। বলতে শরম লাগছে একটু।)
এখন কিছু বড়লোক পাব্লিক বলবে যে,”মোর বাপের টাকা মুই উড়াইছি তোর কি?”
তাদের বলবার জন্য আমার কাছে একটাই কথা আছেঃ এই যে, কেক আটা ময়দা সব কিছু বার্থডে বয় কে মাখানোর পরে কিন্তু আর একটা পর্ব চলে বার্থডে বয় এর মুখ কালো করে দিয়ে তাকে দড়ি দিয়ে বেধে, সবাই মিলে উত্তম মধ্যম প্রহার করে। আপনার বাপের টাকায় আপনি মুখ কালো করে, গন- ধোলাই খাবেন তাতে আসলেই আমার বলাই কিচ্ছু নেই।
আপনি যেমন কাজ করেছেন তাতে মুখ কালো হওয়া টাই স্বাভাবিক। সত্তিই এতে আমার বলার কিচ্ছু নেই।
কারন হাজার হোক টাকা টা তো আপনার বাপের তাইনা?
তবে এর সাথে আরো একটা ট্রেন্ড জোড়া লাগানো যেতে পারে, তা হলো যারা এই পার্টির আয়োজন করে এবং অংশ গ্রহন করে মজা লুটে তাদেরকেও তো মার এর ভাগ আর চুন-কালির ভাগ সরি ময়দা কালির ভাগ টা দেওয়া দরকার।শুধু বার্থডে বয় বা বার্থডে গার্লই কেন মজা লুটবে একা একা!(বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে এটাই ভাবার বিষয়)
লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।