যারা মৌরিনহোর আমলে খেলা দেখে অভ্যস্ত তাদের কখনই জিনেদিন জিদান এর খেলানোর ধরণ ভালো লাগবে না। ফুটবলে মৌরিনহোর মস্তিষ্ক অন্য রকমের। ও যখন কোচ হয় রিয়াল তখন অপরিণিত একদল ছিল। রোনালদো, ওজিল, হিগুয়েন, বেঞ্জু, মোরাতা ডি মারিয়া সদ্য রিয়ালে যোগ দিয়েছিল। এবং রোনালদো বাদে সবাই আন্ডার ২২। মার্সেলো , রামোস ও তখন শুরুর সময়ে।
তাদের মধ্যে বোঝাপোড়াও তেমন ছিলো না। আনকোড়া একটা টিম নিয়ে কি খেলাটাই না খেলেছিল। প্রতিটা কাউন্টার এটাক যেনো হৃদকম্পন বাড়িয়ে দিতো। চোখের পলকেই গোল। রিয়ালের খেলা মানেই ওজিল টু রোনালদো, ওজিল টু বেঞ্জু, ডি মারিয়া টু হিগুয়েন কিংবা রোনালদো মাঝে আলান্সোর নিখুদ লং থ্রো।
তখন কাকে রেখে কাকে নামাবে সেটা ভাবতেই রাত চলে যেতো মৌরিনহোর। কাকা, ক্যাসিয়াসের মত প্লেয়ার বেঞ্চে বসে থাকতো ভাবা যায়??? ড্রেসিং রুমে তার প্রভাব কেমন ছিলো সেটা জানার জন্য এই তথ্যই যথেষ্ট।
বার্সা তখন সর্বজয়ী। তাদের সাথে রিয়ালের ম্যাচ গুলো ছিলো নিয়ম রক্ষার। হার অবধারিত। এরকম একটা টিমের সাথে রোনালদো ছাড়াই আন্ডার _১৯ মোরাতা, ওজিল ডি মারিয়াদের মাঠে নামিয়ে নাকানি চুবানি খাওয়ালো। ভুলে যাওয়া ট্রফির স্বাদ এনে দিলো। বার্সার ডমিনেট ভেঙ্গে রেকর্ড পয়েন্ট ও গোল করে লীগ শিরোপা জিতলো। এত ডমিনেটেড কোন টিমকে কখনই করতে দেখা যায়নি। একটা সময়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে দ্বিতীয় রাউন্ড নিয়তি ধরেই টুনার্মেন্টে অংশগ্রহন করত। মৌরিনহো এসে সেই রীতি ভাঙ্গলো। টানা চারবার সেমি খেললেও দুর্ভাগ্যজনক ভাবে কাপটাই ছোয়া হয়নি। একটা কাপ পেলে হয়ত আরো দুই এক বছর তাকে ডাগ আউটে দেখতে পেতো বিশ্ব।
আর বর্তমান টীম?
জিদান ভালো কোচ কোন সন্দেহ নেই। ট্রফি তার হয়েই কথা বলবে। কিন্তু আপনি যখন চোখের শান্তির জন্য খেলা দেখবেন তখন ভালভার্দে আর জিজুর মধ্যে কোন পার্থক্য দেখবেন না।
ম্যাড়মেড়ে ম্যাচ। যাষ্ট খেলা দেখার জন্য খেলা দেখা। কোন এক্সপেক্টেশন নেই। সেজন্য সমালোচোনা ও করা যেতেই পারে।আপনি মৌরিনহোর তরুন স্কোয়াডের দিকে তাকান। সেসময় ওজিল, ডি মারিয়া, বেঞ্জ হিগুয়েন খেলতো আর এখন রড্রিগো, ভিনি, এসেন্সিও ব্রাহিম খেলে। বলছিনা তারা খারাপ কিন্তু যখন এক্সপেক্টেশনের কথা আসবে তখন কি বা চাইবেন এদের সাথে?
মৌরিনহো-পেপ গারদিওলার মাঝে খেলা হতো রেকর্ড কত পয়েন্টে লীগ জেতা যায়।
এখন জিদান-ভালোভার্দে/সেতিয়েনের মাঝে খেলা হয় সর্বোচ্চ কত পয়েন্ট হারিয়ে লীগ জেতা যায়।
সময়ের সাথে সাথে শিরোপার আকাঙ্খাও হারিয়ে যাচ্ছে। সোলারি যখন স্যাক হয়েছিলো তখন সবাই চেয়েছিল মৌরিনহো কোচ হয়ে আসুক। তিনি আসলে হয়ত প্লেয়ারদের এতো ইঞ্জুরিতে পরতে হত না। তারকা খ্যাতির অহংবীধ মনে ঢুকতো না তরুনদের। কারন সবাই এলার্ট থাকতো পারফর্ম না করলে বেঞ্চ নিশ্চিত।
যেই সতর্কবাণী এখন ড্রেসিং রুমে নেই। যার কারনে ম্যাচের পর ম্যাচ অফফর্ম নিয়েও স্কোয়াডে ইভেন একাদশে থাকছে।