প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রকোপে পুরো বিশ্ব এখন আতঙ্কিত। বিশ্বে অনেক দেশে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই জনগণের মনে তৈরি হয়েছে বেশ আতঙ্ক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, করোনা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া ও তার প্রভাবের ঝুঁকি বেশ বড়সড় ভাবেই দেখা দিবে সম্পূর্ণ বিশ্বজুড়ে। করোনার আতঙ্কের হাত ধরে বেড়েই চলেছে মাস্কের বিক্রি ও এর চাহিদা। সকলেই মাস্ক পড়ছে এই আশায় যে, করোনাভাইরাস থেকে নিরাপদে থাকবে। কিন্তু আসলে বহুল ব্যবহৃত মাস্কগুলো আমাদের জন্য কতটুকু কার্যকর হবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে?
আইইডিসিআর এর পরিচালক ড.মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের ভাইরাস এতো ক্ষুদ্র ও সূক্ষ্ম যে সে ভাইরাস খুব সহজেই সাধারণ সার্জিক্যাল মাস্কের ভেতর অনায়াসে দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে। এই সকল মাস্ক ব্যবহারের ফলে কোনো ধরনের প্রতিরক্ষাই নেওয়া হয় না। ঠিক একই রকম তথ্য জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জটাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড ইমিউনোলজি বিভাগের অ্যাসিসটেন্ট রিসার্চ প্রফেসর এরিন শরেল।
শ্বাসযন্ত্রের রোগ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করার জন্য এবং নিজের কাছ থেকে ছড়ানো রোধ করার জন্য মাস্কের ব্যবহার তেমন কোনো কাজই করে না। এমনকি জনপ্রিয় এন৯৫ র্যাস্পাইরেটরি মাস্ক ব্যবহারের ফলেও করোনাভাইরাস প্রতিরোধের ক্ষেত্রে সার্জিক্যাল মাস্কের মতোই ফলাফল দেখিয়েছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও এ ভাইরাস ছড়ানো রোধ করতে চাইলে সবার আগে অন্য মানুষের সাথে যেকোন ধরনের শারীরিক সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। হ্যান্ডশেক, কোলাকুলি করার মতো কাজগুলো সম্পূর্ণরুপে বর্জন করা অতি আবশ্যক একটি বিষয়।
সেই সাথে যখন হাঁচি ও কাশি হবে তখন হাতের কনুয়ের সাহায্যে মুখ ঢেকে নিতে হবে। অথবা রুমাল বা টিস্যু পেপারের সাহায্যে মুখ ঢাকতে হবে। হাঁচি, কাশির শেষে, বাহির থেকে ঘরে ফিরে, কোনো কাজ করার পূর্বে ও পরে অবশ্যই সাবানের সাহায্যে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে। সাথে নিজের সাথে সবসময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখার চেষ্টা করতে হবে ও তা ব্যবহার করতে হবে।
শ্বাসযন্ত্রের রোগ হওয়া সত্ত্বেও এই ভাইরাস সবচেয়ে বেশি ও দ্রুত ছড়ায় হাতের সাহায্যে। এজন্য সবসময় হাত যথাসম্ভব পরিষ্কার রাখতে হবে ও চোখে-মুখে হাত দেওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে।
সবশেষে এটাই বলতে চাই আতঙ্কিত না হয়ে সচেতনতা অবলম্বন করুন। নিজেকে ও নিজের চারপাশের মানুষজনকে এ ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকার জন্য সচেতন করার চেষ্টা করুন। ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার চেষ্টা করুন এবং সেই মোতাবেক চলার চেষ্টা করুন। যতটা সম্ভব সচেতন থাকুন। জরুরী প্রয়োজন না হলে বাড়ি থেকে বের না হওয়ায় উত্তম এবং আতঙ্কিত না হয়ে নিয়মিত এ বিষয়ে আপডেট তথ্য সংগ্রহ করুন।