পুরো বিশ্বজুড়ে সবার মনে এখন একটাই আতঙ্ক, তার নাম করোনাভাইরাস। করোনাভাইরাস সম্পর্কিত সকল বিষয়কে কেন্দ্র করে সকলের মনে বাড়ছে দুশিন্তা ও উত্তেজনা। তবে নিজেকে ও পরিবারের মানুষদের সুরক্ষিত রাখতে চাইলে সহজ কিছু নিয়ম মেনে চলাই যথেষ্ট। ভয় নয়, বরং সঠিক নিয়মই পারবে করোনাভাইরাস মোকাবিলা করতে। তো চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে এই ভাইরাস থেকে আমরা সুরক্ষিত থাকতে পারবো।
হাত ধুতে হবে অবশ্যই
হাত ধোয়ার জন্য বিশেষ কোন সাবান কিংবা লিকুইড সোপের প্রয়োজন নেই। সাধারণ সাবানই কিন্তু যথেষ্ট। তবে অবশ্যই কমপক্ষে ২০-২২ সেকেন্ডে সময় নিয়ে খুব ভালোভাবে হাত ধুতে হবে। এই ছবিটি লক্ষ্য করলেই হাত ধোয়ার সঠিক নিয়মটি বুঝতে পারবেন। আপনি ছবিটির একটি স্ক্রিনশট তুলে রাখতে পারেন।
বিকল্প হিসেবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার
হাতকে জীবাণুমুক্ত ও পরিষ্কার রাখতে সাবানের সাহায্যে হাত ধোয়া হবে সবচেয়ে সঠিক নিয়ম। এরপরে আসবে হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবহার। তবে খেয়াল রাখতে হবে- প্রয়োজনের সময়েই কেবল হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ক্ষেত্রে ৬০% অ্যালকোহলযুক্ত হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করার চেষ্টা করুন।
আপনার মুঠোফোন জীবাণুমুক্ত করুন
শুধু হাতকে পরিষ্কার করলেন, কিন্তু হাত দিয়ে যে ফোনটি ব্যবহার করছেন সেটি অপরিষ্কার থাকলো, তাহলে কিন্তু কোন লাভই হবে না। এজন্য আপনার ফোনটিকেও পরিষ্কার একটি নরম কাপড়ের সাহায্যে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করে রাখুন।
দরজা-জানালার হাতল ও ইলেকট্রনিক পণ্যে জীবাণুনাশক ব্যবহার
হাতকে জীবাণু থেকে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রাখতে চাইলে এই বিষয়ের দিকেও নজর দিতে হবে। যেহেতু দরজা-জানালার হাতল ও বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক পণ্য ব্যবহার করা হয় সবসময়, এগুলোও জীবাণুনাশক পণ্যের সাহায্যে পরিষ্কার রাখতে হবে।
মুখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকুন
আপনার হাত যতই পরিষ্কার থাকুক না কেন, মুখে কোনভাবেই কিন্তু হাত দেওয়া যাবে না। মুখে হাত দেওয়া থেকে যেভাবেই হোক নিজেকে বিরত রাখতে হবে। প্রয়োজনে নতুন অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে মুখের কাছে হাত নেওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য।
একে অন্যকে স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ সময়ে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে একে অন্যকে যেকোন প্রকার স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছে। হ্যান্ডশেক, কোলাকুলির মতো সাধারণ বিষয়গুলোও এখন জীবননাশের কারণ হয়ে উঠতে পারে। তাই নিজেকে সংযত রেখে আশেপাশের সবাইকেও এই বিষয়ে সতর্ক করুন।
ব্যবহার করা হাতের টিস্যু ফেলে দিন
হাতে থাকা যে টিস্যুটিতে হাঁচি-কাশি দেওয়া হয়েছে, নাক-মুখ মোছা হয়েছে সেটা বেশিক্ষণ হাতে না রেখে সরাসরি ডাস্টবিনে ফেলে দিতে হবে। যেখানে-সেখানেও ফেলা যাবে না। কারণ এই টিস্যুর অপব্যবহার থেকেই ছড়াতে পারে জীবাণু।
ধূমপান বর্জন করুন
করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টি করে, ফলে ধূমপায়ীদের এই ভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সবচেয়ে বেশি। বর্তমান পরিস্থিতিতে ধূমপানের অভ্যাসটি যথাসম্ভব পরিহার করে নিজেকে নিরাপদ রাখাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমাতে হবে
সার্বিক পরিস্থিতিতে নিজেকে শান্ত ও দুশ্চিন্তামুক্ত রাখা কষ্টকরই বটে। যা মানসিক স্বাস্থ্যের উপরেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে দেয়। তাই এ সময়টাতে চেষ্টা করতে হবে যতটা সম্ভব মানসম্পন্ন ও পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানোর। এতে করে মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তি দূর হবে।
পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে
অন্যান্য সকল নিয়মের মাঝে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের দিকেও নজর দিতে হবে। এখন পর্যন্ত গবেষক বা বিজ্ঞানীরা এমন কোন খাদ্য উপাদানের নাম জানাতে পারেননি যা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে কিংবা এই ভাইরাসজনিত সমস্যা কমাতে কার্যকর। তবে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ও শরীরকে তুলনামূলকভাবে সুস্থ রাখতে কাজ করে বলে নিয়ম মেনে খাবার খেতে হবে।
করোনাভাইরাস সম্পর্কিত স্বাস্থ্য পরামর্শ পেতে ১৬২৬৩ অথবা ৩৩৩ নম্বরে কল করুন।
সর্বোপরি নিজে সচেতন থাকুন ও অন্যকেও সচেতন করুন। কারণ সচেতনায় এখন পর্যন্ত এ ভাইরাসের প্রধান ভ্যাকসিন। ধন্যবাদ।