আর্কিমিডিস (Archimedes)
(জন্মঃ খ্রিস্টপূর্ব ২৮৭ – মৃত্যুঃ খ্রিস্টপূর্ব ২২১; গ্রিস)
দেশঃ গ্রিস
আবিষ্কার/ কার্য বিবরণঃ লিভারের নীতি।
তরলে নিমজ্জিত বস্তুর উপর ক্রিয়াশীল ঊর্ধ্বমুখী বলের সূত্র আবিষ্কার করে ধাতুর ভেজাল নির্ণয়ে সক্ষম হন।
তিনি গোলীয় দর্পণের সাহায্যে সূর্যের রশ্মি কেন্দ্রীভূত করে আগুন ধরানোর কৌশল জানতেন।
গ্যালিলিও গ্যালিলি (Galileo Galilei)
(জন্মঃ ১৫৬৪ – মৃত্যুঃ ১৬৪২; ইতালি)
সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ ইতালিয়ান পদার্থবিজ্ঞানী, গণিতশাস্ত্রবিদ ও জৌতির্বিদ।
অবদানঃ গ্যালিলিও গ্যালিলিই সর্বপ্রথম এ ধারণা দেন যে, পৃথিবীকে আপাতদৃষ্টিতে ব্রহ্মাণ্ডের কেন্দ্র বলে মনে হলেও বস্তুত পৃথিবী এবং অন্যান্য গ্রহ, সূর্যকে কেন্দ্র করে সদা ঘূর্ণায়মান। তাছাড়া তিনি পড়ন্ত বস্তুর সূত্রের উদ্ভাবক।
স্যার আইজ্যাক নিউটন (Sir Isaac Newton)
(জন্মঃ ১৬৪২ – মৃত্যুঃ ১৭২৭; ইংল্যান্ড)
সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ সর্বকালের, সর্বযুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী। পদার্থবিদ্যা, গণিতশাস্ত্র, রসায়নশাস্ত্র, জৌতির্বিদ্যা, প্রকৃতি দর্শনসহ বহুমুখী বিষয়ে সুপণ্ডিত।
অবদানঃ গতিতত্ত্বের নিবিড় গবেষণা ও গতিসূত্রের অনন্য উদ্ভাবন। জটিল গাণিতিক যুক্তি তত্ত্বের সমাধান ও ক্যালকুলাস নামক গণিতশাস্ত্র উদ্ভাবন। জৌতির্বিজ্ঞানের মাধ্যাকর্ষণ শক্তির আবিষ্কারক, মহাকর্ষ বল আহ্নিক ও বার্ষিক গতির স্বপক্ষে গ্রহণীয় সুস্পষ্ট ব্যাখ্যাদান সহ ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
জর্জ ওহম (George Simon Ohm)
(জন্মঃ ১৭৮৯ – মৃত্যুঃ ১৮৫৪; জার্মানি)
সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ পুরো নাম জর্জ সাইমন ওহম। জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী। পদার্থবিজ্ঞানের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব।
অবদানঃ ১৮১৭ সালে কোলনের একটি কলেজে, ১৮৩৩ সালে নুরেনবার্গের পলিটেকনিক স্কুলে এবং ১৮৫২ সালে মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষামূলক পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক হন। তিনি V=IR এ সূত্রের উদ্ভাবক। সুত্রে V ভোল্ট, R রোধ ও I তড়িৎ প্রবাহকে বোঝায়। তার নামানুসারে ওহমের সূত্রের নামকরণ করা হয়। ‘ওহম’ এককে কোনো পরিবাহীর রোধ পরিমাপ করা হয়।
মাইকেল ফ্যারাডে (Michael Faraday)
(জন্মঃ ১৭৯১ – মৃত্যুঃ ১৮৬৭; ব্রিটেন)
সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ ফ্যারাডেকে যুগপৎ ভাবে প্রকৃতি দার্শনিক, পদার্থবিদ এবং রসায়নবিদ বলা হয়ে থাকে।
অবদানঃ তড়িৎ চৌম্বকত্ব এবং তড়িৎ রসায়নে ফ্যারাডের অবদান অপরিসীম। তিনি ১৮২১ সালে ত্রিশ বছর বয়সে তড়িৎ চুম্বকীয় গবেষণার জন্য খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি পরীক্ষাগারে ব্যবহৃত বুনসেন বার্নার আবিষ্কার করেন। এছাড়া জারণ সংখ্যা নির্ণয় পদ্ধতি, ক্লোরিন, বেনজিন ইত্যাদি আবিষ্কারের মাধ্যমে ফ্যারাডে বিশ্বে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
উইলিয়াম রন্টজেন (W.C Roentgen)
(জন্মঃ ১৮৪৫ – মৃত্যুঃ ১৯২৩)
সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ তিনি পিতা-মাতার একমাত্র সন্তান। তাঁর বাবা কাপড়ের ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর মা শার্লট কনস্টানজ ছিলেন লিনেপ পরিবারের বংশধর।
অবদানঃ ১৯৮৫ সালে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন আবিষ্কার করেন। ওয়েবলেন্থ রেঞ্জ এর এই আবিষ্কার এক্স-রে বা রঞ্জন রশ্মি নামে সর্বাধিক পরিচিত। তাঁর এই অমর কীর্তির জন্য তিনি ১৯০১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।
মাদাম কুরী ওরফে মেরী কুরী (Marie Curie)
(জন্মঃ ১৮৬৭ – মৃত্যুঃ ১৯৩৪; পোল্যান্ড)
সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ নী মারিয়া স্কোডোষ্কা ওরফে মেরী কুরী পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্কুল শিক্ষকের কন্যা ছিলেন। তিনি প্যারিসের শারবর্ণ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনাকালীন এখানকার পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক পিয়েরে কুরীকে ১৮৯৪ সালে বিবাহ করেন, ১৯০৩ সালে তিনি বিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন।
অবদানঃ রেডিয়েশন এর উপর গবেষণার জন্য মাদাম কুরী তার স্বামীর সাথে যৌথভাবে। ১৯০৩ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন। এরপর ১৯১১ সালে তেজস্ক্রিয়তার উপর গবেষণায় স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি রসায়নে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।
আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল (Alexander Graham Bell)
(জন্মঃ ১৮৪৭ – মৃত্যুঃ ১৯২২; স্কটল্যান্ড)
সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ স্কটল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী আমেরিকান উদ্ভাবক এবং শিক্ষক গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করে বিখ্যাত হন।
অবদানঃ শিক্ষকতা জীবনে তিনি সংগীত শিক্ষা, বোবা লোকজনকে কিভাবে কথা বলতে হয় তা শেখান এবং কম্পনশীল বস্তু হতে কীভাবে শব্দ বের হয় তার উপর পড়াশোনা করেন। তিনি এক ধারণা থেকে মানুষের কণ্ঠস্বর এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পাঠানো এবং তা গ্রহণ করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ফলস্বরূপ, তিনি টেলিফোন আবিষ্কার করতে সমর্থ হন।
আলবার্ট আইনস্টাইন (Albert Einstein)
(জন্মঃ ১৮৭৯ – মৃত্যুঃ ১৯৫৫; জার্মানি)
সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী। বিশ্বনন্দিত তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানী। আপেক্ষিক তত্ত্বের জন্য বিশেষভাবে খ্যাত। আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের পুরোধা ব্যক্তিত্ব।
অবদানঃ ১৯০৫ সালে আলবার্ট আইনস্টাইন তাঁর যুগান্তকারী আপেক্ষিক তত্ত্ব প্রকাশ করে বিশ্বময় খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি প্রমাণ করে দেখান যে, কোনো কিছু আলর বেগে চললে সময় ধীরে চলে এবং আলোর বেগকে অতিক্রম করা অসম্ভব। তিনি ভর-শক্তি মতবাদের প্রবর্তক। এ সম্পর্কে তাঁর প্রতিপাদিত গাণিতিক সূত্রটি নিম্নরূপঃ E=mc2; m বস্তুর ভর, C আলোর বেগ এবং E শক্তির পরিমাণ।
জন বার্ডিন (Jhon-Bardeen)
(জন্মঃ ১৯০৮ – মৃত্যুঃ ১৯৯১; আমেরিকা)
সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ জন বার্ডিন মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী এবং বিদ্যুৎ প্রকৌশলী। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি পদার্থবিজ্ঞানে দুইবার নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।
অবদানঃ জন বার্ডিন যৌথভাবে ট্রানজিস্টর আবিষ্কার করেন ১৯৫৬ সালে এবং পরে ১৯৭২ সালে (ফান্ডামেন্টাল থিওরি অব কনভেনশনাল সুপার কানডাক্টিভিটি) তত্ত্ব আবিষ্কার করেন যা বিসিএস থিওরি নামে পরিচিত। তাঁর এ অবদানের জন্য তিনি ১৯৫৬ ও ১৯৭২ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।
ড. আব্দুস সালাম (Abdus Salam)
(জন্মঃ ১৯২৬ – মৃত্যুঃ ১৯৯৬; পাকিস্তান)
সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ পাকিস্তানি পদার্থবিদ। Electroweak Force তত্ত্ব প্রদানের জন্য ড. আব্দুস সালাম ১৯৭৯ সালে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন।
অবদানঃ ১৯৭৯ সালে শেলডন গ্লাশো, স্টিভেন ওয়েনবার্গ ও আব্দুস সালাম প্রমাণ করেন যে, চৌম্বক বল, তড়িৎ বল ও নিউক্লিয় বল আসলে একই প্রকার বলের ভিন্ন রূপ এবং এ বলকে তাঁরা Electroweak Force নামে অভিহিত করেন।
স্টিফেন উইলিয়াম হকিং (Stephen William Hawking)
(জন্মঃ ১৯৪২ – মৃত্যুঃ২০১৮)
সংক্ষিপ্ত পরিচয়ঃ নিউটন উত্তর যুগের শ্রেষ্ঠ ও অন্যতম সফল পদার্থবিদ, পদার্থবিজ্ঞানের নবযুগ আবিষ্কারক, গণিতশাস্ত্রের বিশেষ পণ্ডিত, আধুনিক জ্যোতিশাস্ত্র তথা মহাকাশ গবেষণা পথিকৃৎ এবং সর্বোপরি বিজ্ঞান জগতের এক অনন্য বহুমুখী প্রতিভাধর নিরলস গবেষক।
অবদানঃ মহাজাগতিক সৃষ্টি তত্ত্বের ক্ষেত্রে নতুন গাণিতিক যুক্তি ও কৌশল প্রয়োগ করে হকিং ১৯৬৫-১৯৭০ এর মধ্যে সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বে একত্ববাদের উপর কাজ করে কোয়ান্টাম তত্ত্ব ও সাধারণ আপেক্ষিকতা (General Relativity) প্রয়োগ করে এটা দেখাতে সমর্থ হন যে, কৃষ্ণ গহ্বর তেজস্ক্রিয়তা নির্গমন করতে পারে। হকিং ১৯৭১ সালে মহাবিশ্ব সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে গবেষণা করে ভবিষ্যৎবাণী করেন যে, বিগ ব্যাং তত্ত্ব অনুসারে ১০৯ টন ভরসম্পন্ন অনেক বস্তুও একটি প্রোটনের আকারে গঠিত/সৃষ্টি হতে পারে।