করুনার ভাইরাসের কবলে পড়ে পুরো পৃথিবী স্তব্ধ। সারা বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠান কলকারখানা, শিল্পপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালত সবকিছুই বন্ধ। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। মাত্রই এই দুই-তিন মাসে পুরো অর্থনীতি চাকা উল্টোপথে ঘুরতে শুরু করেছে। জানিনা এর ভবিষ্যৎ কি হবে?
ইতিমধ্যেই ভয়াবহ ধ্বংসের মুখে পড়েছে বিশ্ব অর্থনীতির অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান। অর্থাৎ বিশ্ব অর্থনীতি এখন বেহাল অবস্থা। আরেকটি সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে চাকরির বাজার। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ চাকরি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর মতে,কোন ভাইরাসের এই মহামারীর কারণে সমগ্র বিশ্বে প্রায় ৭ কোটি মানুষ চাকরি হারাবে। যদি আমরা বাংলাদেশের দিকে তাকায় তাহলে এর করুন অবস্থা আমরা দেখতে পায় অলরেডি বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ শ্রমিক চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছে।
বিশ্বের অর্থনীতিবিদ বিশ্লেষকেরা বলছেন, করোনা ভাইরাস এর এই মহামারি’র কারণে যত ধরনের অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হবে তার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়বে মধ্যবিত্তদের উপর। আপনারা নিজেরাই একটু লক্ষ্য করলে দেখবেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সবচেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা।
এরা না পারে কারো কাছ থেকে সাহায্য চাইতে,না পারে মুখ খুলে কিছু বলতে। সরকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং উচ্চবিত্তদের জন্য প্রণোদনা দিচ্ছে,গরীব মানুষেরা কিছুটা হলেও আর্থিক সাহায্য পাচ্ছে কিন্তু মধ্যবিত্তদের কথা ভাবার কেউ নেই?
এই করুন পরিস্থিতিতে হঠাৎ উপার্জন বন্ধ হওয়া তার ওপর আরো বাড়িওয়ালাদের বাড়তি বাসা ভাড়ার চাপ। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা। অবশ্যই ঢাকা শহরের অনেক মানবিক বাড়িওয়ালা তাদের বাড়া মকুব করেছেন কিন্তু তারা কতজন? প্রয়োজনের তুলনায় তারা খুবই সামান্য। একইভাবে সব বাড়িওয়ালাদের বাড়ি ভাড়া মওকুফের জন্য কেউ অনুরোধ করছে না। আমরা অনেক পরিবারকে দেখেছি যারা বাসা ভাড়া দিতে না পেরে নির্যাতিত হয়ে বসা থেকে তাদের বের করে দেয়া হয়েছে।
আর কতদিন? হয়তো আমরা এক সময় খেতে না পেয়ে মরে যাবো। বিভিন্ন মিডিয়ায় এবং পত্র-পত্রিকায় বড় বড় করে হেডলাইন চাঁপা হবে হূদরোগে আক্রান্ত হয়ে বা বড় কোনো অসুখে মারা গেছে।
কারণ আমি নিজেই মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে। এই মধ্যবিত্তের ব্যাস ও ব্যাসার্ধ আমি ভালো করেই বুঝি।