ভিটামিন এ :
উৎস :মাছের তেল ও প্রাণীজ স্নেহে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ পাওয়া যায়। ক্যারোটিন সমৃদ্ধ শাক-সবজি যেমন -লালশাক, পুঁইশাক, পালংশাক, টমেটো, গাজর, বিট ও মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি। বিভিন্ন ধরনের ফল যেমন -পেঁপে, আম, কাঁঠালে ভিটামিন ‘এ’ থাকে। মালা ও ঢেলা মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে।
দেহে ভিটামিন এর কাজ হলো দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখা, ত্বক ও শ্লেষাঝিল্লিকি সুস্থ রাখা এবং দেহকে বিভিন্ন সংক্রামক রোগের হাত থেকে রক্ষা করা, খাদ্যদ্রব্য পরিপাক ও ক্ষুধার উদ্রেক করা, রক্তের স্বাভাবিক অবস্থা বজায় রাখা ও দেহের পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করা।
অভাবজনিত রোগ :
ভিটামিন এ এর অভাবে বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দেয়। ভিটামিন এ এর অভাবে রাতকানা, জেরপথালমিয়া রোগ দেখা দেয়। এছাড়াও ভিটামিন এ এর অভাব ঘটলে দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। সর্দি কাশি ইনফ্লুয়েঞ্জা ইত্যাদি রোগ হতে পারে।
ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স :
ভিটামিন বি-কমপ্লেক্স গোষ্ঠীর কাজ হলে বিশেষ বিশেষ উৎসেচক এর অংশ হিসেবে আমিষ,শর্করা ও স্নেহ পদার্থ কে বিশ্লিষ্ট করা এবং এদের অন্তর্নিহিত শক্তিকে মুক্ত হতে সাহায্য করা।
ভিটামিন বি১ (থায়ামিন) :
এর প্রধান কাজ হলো শর্করা বিপাকে অংশগ্রহণ করে শক্তি মুক্ত করা। তাছাড়া স্বাভাবিক ক্ষুধা বজায় রাখতে এবং স্নায়ুতন্ত্রকে সক্রিয় রাখতে সহায়তা করা।
ভিটামিন বি২(রিবোফ্লাবিন) :
এটা এমাইনো এসিড, ফ্যাটি এসিড ও কার্বোহাইড্রেটের বিপাকে অংশ নিয়ে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করা।
ভিটামিন বি৬(পাইরিডক্সিন) :
এটা শক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে।
ভিটামিন বি১২(সায়ানোকোবালামিন) :এটা লোহিত রক্ত কণিকা বৃদ্ধি ও উৎপাদনে সহায়তা করে। শ্বেত রক্তকণিকা ও অনুচক্রিকার সংখ্যা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
ভিটামিন সি :
দেহের জন্য ভিটামিন সি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। এ ভিটামিন পানিতে দ্রবীভূত হয় এবং সামান্য তাপে নষ্ট হয়ে যায়। দেহে জমা থাকেনা তাই প্রতিদিন ভিটামিন সি খাওয়া দরকার। টক জাতীয় ফল আমলকি, আনারস, পেয়ারা, কমলা লেবু, লেবু, আমড়া ইত্যাদি ফলে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। সবুজ শাকসবজি ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, লেটুস পাতা থেকে আমরা ভিটামিন সি পাই। পাকা ফল অপেক্ষা কাঁচা সবজি ও ফলে এ ভিটামিন বেশি থাকে।
ভিটামিন সি পেশি, দাঁত মজবুত করে, ক্ষত নিরাময় ও চর্মরোগ রোধে সহায়তা করে, কন্ঠনালী ওনাকে এর সংক্রমণ প্রতিরোধ করে ।
অভাবজনিত রোগ :
প্রাপ্ত বয়স্কদের দেহে ভিটামিন সি এর অভাব প্রকট হলে নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো দেখা দেয় –
হাড়ের গঠন শক্ত ও মজবুত হতে পারে না।
হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায়।
ত্বক খসখসে হয়, চুলকায়, ত্বকে ঘা হলে সহজে তা শুকাতে চায় না।
ভিটামিন ডি:
ভোজ্যতেল, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত খাদ্য, বিভিন্ন মাছের তেল, ডিমের কুসুম, মাখন, ঘি, চর্বি এবং ইলিশ মাছের পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
ভিটামিন ই :
ভোজ্য তেল ভিটামিন ই এর সবচেয়ে ভালো উৎস। শস্যদানা, যকৃত, মাছ-মাংসের ছবিতে ভিটামিন ই পাওয়া যায়।
ভিটামিন কে :
সবুজ রঙের শাকসবজি, লেটুসপাতা, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ডিমের কুসুম, সয়াবিন তেল এবং ভিটামিন কে পাওয়া যায়।