জুতা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। দৈনন্দিন হাঁটাচলায় স্বাচ্ছন্দ্য ও সৌন্দর্যবোধের জন্যে প্রয়োজন সঠিক জুতা নির্বাচন। আরামদায়ক জুতা স্বাভাবিক গতিতে হাঁটতে যেমন সাহায্য করে, একইভাবে তা পায়ের স্বাস্থ্যরক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পা দু’টিকে অনাকাঙ্ক্ষিত আঘাত, অপ্রত্যাশিত ব্যথা বা জীবাণু থেকে বাঁচিয়ে রাখতে জুতার গুরুত্ব অপরিসীম বলা যায়। তাই, জুতা কিনতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই নিচের বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে :
১. জুতার ধরন যেমন হতে পারে –
প্রথমেই আপনাকে ঠিক করতে হবে কী ধরনের জুতা আপনি কিনতে চান। এটি হতে পারে বেল্টযুক্ত, হতে পারে বেল্ট ছাড়া, হতে পারে উঁচু হিলের বা নিচু হিলের, হতে পারে কেডস জাতীয়। জুতার ধরন নির্ধারণ করতে হলে বিবেচনা করতে হবে আপনি কোন কাজের জন্য জুতা জোড়া কিনছেন। কর্মক্ষেত্রে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য রয়েছে নির্ধারিত জুতা, পার্টি কিংবা অনুষ্ঠানের জন্যে রয়েছে ভিন্ন ধরনের জুতা, সাধারণ হাঁটাচলার জন্য আছে অন্যরকম জুতা। স্থানভেদে জুতা যেমন ভিন্ন হয়, তেমনই আবহাওয়াভেদেও জুতার রয়েছে ভিন্ন প্রকরণ। গরমের দিনে কিছুটা খোলামেলা জুতাই ভালো। আর বর্ষাতে পানিরোধী বা বৃষ্টিতে চলার উপযোগী জুতা কিনতে হবে। শীতের সময়ে পায়ের পাতা যেন পুরোপুরি ঢেকে থাকে এমন জুতা বাছাই করতে হবে।
২. জুতার সাথে পায়ের মাপ –
এই ব্যাপারটি খুব জরুরি। জুতা হতে হবে হুবহু পায়ের সমান মাপের। একটু বেশিও না, একটু কমও না। জুতা যদি পায়ের চেয়ে ছোট হয়, তাহলে পা বেরিয়ে থাকবে বা আঁটসাঁট হবে। আর পায়ের চেয়ে বড় হলে ঢিলে হয়ে থাকবে, হাঁটার সময় জুতা খুলে পড়ে যেতে পারে। অনেক সময় জুতার ডিজাইন বা রং পছন্দ হলে আমরা মাপের সাথে কিছুটা সমঝোতা করতে উদ্ধত হয়, অথবা দোকানদার পায়ের চেয়ে ছোট বা বড় জুতাকে যথাযথ মাপের বলে আমাদের কাছে গছিয়ে দিতে চায়। জুতার মাপ সঠিক না হলে কখনোই ডিজাইন বা রং এ প্রলুব্ধ হওয়া যাবে না।
৩. জুতার তল যেমন হতে হবে –
ধরন ও মাপের পাশাপাশি জুতা নির্বাচনে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল জুতার তল পরীক্ষা করা। শক্ত ও পাতলা তলের জুতা হাঁটতে অসুবিধা সৃষ্টি করে। অল্প সময় হাঁটার পরই তা হাঁটুর ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এছাড়া পাতলা তলের জুতা দ্রুত ক্ষয় হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। তাই, জুতা কেনার সময় দেখতে হবে এর তল নরম ও পুরো কি-না।
আমরা জুতা পড়ি পায়ের সুরক্ষার জন্য। কাজেই জুতা কেনার সময় এই তিনটি বিষয় গুরুত্ব সহকারে লক্ষ্য রাখতে হবে। অবশ্যই জুতা পড়ে দেখবেন এতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটতে পারছেন কি-না, জুতার ফিতা বা বেল্ট আপনার পায়ে কোনো প্রকার অসুবিধা তৈরী করছে কি-না, এই জুতার ভার আপনি বহন করতে পারছেন কি-না। সঠিক জুতা আপনার হাঁটাচলাকে করবে নির্বিঘ্ন। দীর্ঘ হাঁটায় আপনার জুতাকে হতে হবে আরামদায়ক। তাই, জুতা কেনায় কোনো ঔদাসীন্য নয়। পর্যাপ্ত সময় নিয়ে মনোযোগ দিয়ে জুতা বাছাই করুন, দৈনন্দিন জীবনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করুন।