বন্ধুরা আজ আমি তোমাদের সাথে একটি রোগ নিয়ে আলোচনা করব। এই রোগটি আমাদের দেশে অতি পরিচিত। এই রোগের নাম হল থ্যালাসেমিয়া। তোমরা নিশ্চয়ই জানো এই রোগের নাম। তবুও আমি আজ বিস্তারিত আলোচনা করব। হয়তো তোমাদের অনেক কাজে আসবে।
থ্যালাসেমিয়া রক্তের লোহিত রক্ত কণিকার এক অস্বাভাবিক অবস্থান জনিত রোগের নাম। এ রোগে লোহিত রক্তকণিকা গুলা নষ্ট হয়। ফলে রোগী রক্ত শূন্যতায় ভোগে। এই রোগ বংশপরম্পরায় হয়ে থাকে। থ্যালাসেমিয়া বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বংশবাহিত রক্ত জনিত সমস্যা। ধারণা করা হয়, দেশে প্রতিবছর ৭০০০ শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগ নিয়ে জন্মগ্রহণ করে এবং বর্তমানে প্রায় এক লাখ রোগী আছে। বাবা ও মা উভয়ই এ রোগের বাহক রোগী হলে তবেই তার সন্তানের রোগ লক্ষণ হিসেবে প্রকাশ পায়।চাচাতো, মামাতো ,খালাতো ভাইবোন বা অনুরূপ নিকটাত্মীয়ের মধ্যে বিয়ে হলে এ ধরনের রোগে আক্রান্ত সন্তান জন্ম দেওয়ার আশঙ্কা বহুগুণ বেড়ে যায়।
লোহিত রক্তকণিকা দু ধরনের প্রোটিন দিয়ে তৈরি, থ্যালাসেমিয়া হয় লোহিত রক্তকোষে দুটি প্রোটিনের জিন নষ্টন থাকার কারণে যার ফলে ত্রুটিপূর্ণ লোহিত রক্ত কোষ উৎপাদিত হয়। দু ধরনের জিনের সমস্যার জন্য দু’ধরনের থ্যালাসেমিয়া দেখা যায়,আলফা থ্যালাসেমিয়া এবং বিটা থ্যালাসেমিয়া। একইভাবে বিটা থ্যালাসেমিয়া তখনই হয়, যখন বিটা গ্লোবিউলিন প্রোটিন উৎপাদন ব্যাহত হয়। থ্যালাসেমিয়া মেজরের বেলায় শিশু তার বাবা ও মা দুজনের কাছ থেকেই থ্যালাসেমিয়া জিন পেয়ে থাকে। এধরনের শিশুরা থ্যালাসেমিয়ার কোন উপসর্গ দেখায়না। তবে থ্যালাসেমিয়া জিনের বাহক হিসেবে কাজ করে।
লক্ষণ-থ্যালাসেমিয়ার কারণ জন্মের আগেই মায়ের পেটে শিশুর মৃত্যুও হতে পারে। থ্যালাসেমিয়া মেজর আক্রান্ত শিশুরা জন্মের পর প্রথমে জটিল রক্তশূন্যতায় ভোগে।
চিকিৎসা-সাধারণত নির্দিষ্ট সময় পর পর রক্ত প্রদান এবং নির্দিষ্ট ওষুধ খাইয়ে থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা দেওয়া হয়। রোগীদের লৌহ সমৃদ্ধ ফল বা ওষুধ খেতে হয় না, কারণ তার শরীরে জমে গিয়ে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি সাধন করে। থ্যালাসেমিয়া রোগীর ৩০ বছরের বেশি বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম ,যদি একবার সমস্যা শুরু হয়।