বহু গুণে সমৃদ্ধ তাল ও তাল গাছ
রনজিৎ বর্মন ঃ তাল বাংলাদেশের একটি অপ্রচলিত গুরুত্বপূর্ণ ফল। গ্রাম বাংলার প্রায় প্রতিটি ঘরে তাল ফল ও তালের পায়েস খাওয়ার প্রথা প্রচলিত রয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে তাল খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সুশোভিত লম্বা গাছ ও সবুজ গুচ্ছ পাতা মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি করে। একটি বয়স্ক গাছ ৫০ থেকে ৬০ ফুট বা তারও বেশি লম্বা হয়ে থাকে। এর শিকড় মাটির বেশি গভীরে না গেলেও মাটি ক্ষয় রোধ করে। কৃষিবিদদের মতে বজ্রপাতরোধক হিসাবে তাল গাছ কাজ করে। বর্তমান সরকার তাল গাছ রোপনে ব্যাপকভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন। বাংলাদেশের সকল জেলা,উপজেলায় তাল গাছ রোপন চলছে সরকারি ও বেসরকারীভাবে।
তালের পুষ্টি গুণ ও ঔষধিগুণ রয়েছে। সকল প্রকার ফলের মধ্যে তালের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। তালের আঁশ থাকার কারণে তালের গুড় পুষ্টি সমৃদ্ধ। চিকিৎসকদের মতে তালের রসে শক্তি যোগায় এবং ক্লান্তি দূর করে। তালের রস আমাশয় দূর করে। তালের রস পানীয় হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
তাল কাঠের তৈরী ঘর গ্রাম গঞ্জে খুব সহজে চোখে পড়ে। তাল কাঠ শক্ত ও মজবুত। গ্রামের অনেক মানুষ এখনও তাল গাছ কেটে ঘর তৈরীর কাজে ব্যবহার করছেন। অনেকে তালের পাতা ছাউনি হিসাবে ব্যবহার করে থাকেন। তাল গাছের ছোট ডিঙ্গি নেীকা দেখা যায়। তাল গাছের পাতা ও ডাল জ¦ালানী হিসাবে ব্যবহার করা হয়। ৪ অথবা ৫ সদস্যের পরিবারে ৩/৪ টি তাল গাছ থাকলে সারা বছর জ¦ালানী সংকট কেটে যায় বলে ব্যবহারকারীরা মত প্রকাশ করেন।
তালের পাতার পাখার বাতাস কার না ভাল লাগে। বিদ্যুৎ চলে গেলে ঠান্ডা বাতাসের জন্য তাল পাতার পাখার বাতাসের জুড়ি মেলা ভার। তাল পাতার পাখা বাড়ী তৈরী করে বাজারে বর্তমানে ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে বিক্রী করে অনেকে অর্থ উপার্জন করছেন। তালের রস বিক্রী করে অনেকে বেশ অর্থ উপার্জনও করে থাকেন। কচি তালের রস ও শ^াস যেমন প্রিয় খাদ্য তেমনি পাকা তালের রস বের করার পর বিচি মাটিতে কিছু দিন রাখার পর বিচির মধ্যে শিকড় সমৃদ্ধ যে নরম শ^াস তৈরী হয় সেটিও সুস্বাদু খাদ্য।
কৃষিবিদদের মতে তাল গাছ সবধরনের মাটিতে রোপন করা যায়। জলাবদ্ধ ও লবনযুক্ত এলাকায়ও তাল গাছ রোপন করা যায়। পাকা তালের রং সাধারণত কালো, বাদামী লালচে হয়ে থাকে। তালের বীজ থেকে বংশ বিস্তার হয়। সরাসরি বীজ মাটিতে বপন করলেই গাছ বাহির হয়। অন্যান্য ফলের মত এর বাগান করে চারা তৈরী করা হয় না। গ্রাম গঞ্জে,শহরে রাস্তার পাশে,বাঁধের পাশে ,চিংড়ী ঘেরের আইলে তাল গাছের বীজ বপন করতে দেখা যায় বা সারি সারি তাল দেখা যায়। তাল রোপনে ভাল বীজ বাছাই করা ভাল। জুলাই-আগষ্ট মাসে তাল গাছ রোপনের সময় বলে আমরা জানি। সারা বছর তাল ফলন হয় অনেক গাছে। তবে ভাল গাছ রোপনে ভাল ফল নির্বাচন করা উচিৎ। শুকনা ফল নির্বাচন না করাই ভাল। এক প্রকার কোন খরচ ছাড়াই তাল বীজ রোপন করা সম্ভব। তবে তাল গাছ বাহির হলে কৃষিবিদদের মতে পচা গোবর ও অন্যান্য সার ব্যবহার করলে ফলন ভাল হয়। বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা যেন না থাকে ও খরা মেীসুমে সেচ দিলে ভাল হয়।
তাল গাছে সাধারনত রোপনের ১০ বা ১২ বছর পর পুনাঙ্গ গাছে পরিণত হয় এবং ফল ফুল চলে আসে। তাল গাছ পুরুষ ও স্ত্রী উভয় হয়ে থাকে। তালের রসের দাম লিটার প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা। কচি তালের বিচি প্রতিটি ৩ থেকে ৪ টাকা বিক্রী হয়। সব মিলিয়ে তাল গাছ অর্থনৈতিকভাবে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাল গাছ নিধন বন্ধ করা প্রয়োজন। আমাদের প্রত্যেকের তাল রোপনে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। বর্তমান সময়ে সরকারি বা বেসরকারীভাবে তাল গাছ রোপনে বাংলাদেশে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
রনজিৎ বর্মন
তাং-১৪.৯.২০২০ইং
thik bolechen
Thanks
sundor post er jonno dhonnobad.
Thanks
Hmm
Thanks
nice information
Thanks
Nc
Thanks
All are Thanks
nice
Thanks
helpful
Thanks
VERY NICE
ok
❤️
ok
ohh