আজকাল ইন্টারনেটের কল্যাণে পুরো দুনিয়া আপনার হাতের মুঠোয়। দুনিয়াতে এমন কি আছে, যা অনলাইনে পাওয়া যায় না? এমন কি এখন প্রেমও অনলাইনে করা যায়! প্রথমে অনলাইনে অচেনা বন্ধুর সাথে চ্যাট, দিনে দিনে চেনা – জানা, তারপর প্রেম, এরপর দুজনে সাক্ষাত। আরোও কত কি!
আবার এই অনলাইনে কিন্তু আপনি প্রতারণার শিকারও হতে পারেন! হারাতে পারেন ধন, সম্পদ, মান – সম্মান, এমন কি সাধের জীবনটা পর্যন্ত!! অতএব, সাধু সাবধান!!!
সাবধানতার কথা যখন চলেই এলো, তাহলে চলুন দেখা যাক অনলাইনে যে কোন অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ থেকে রক্ষা পেতে কি কি করা যেতে পারে।
অনলাইনে অপরিচিত ব্যক্তি, ভালো বা খারাপ দু’রকমই হতে পারে। তাই যতক্ষন না সেটা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, ততক্ষণ চ্যাট বা চ্যাটের সূত্রে বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে –
১। নিজের প্রকৃত নাম, ঠিকানা, বয়স, ই-মেইল আইডি ইত্যাদি অপর পক্ষকে জানানো উচিৎ হবে না। (পরবর্তীতে যদি এটা বুঝা যায় যে অচেনা বন্ধুটি প্রকৃতপক্ষেই ভালো, তখন তাঁকে নিজের সম্পর্কে সবকিছু বলা যেতে পারে। এক্ষেত্রে, প্রথম দিকে এই সতর্কতা অবলম্বন করাকে, তিনি অর্থাত্ অচেনা বন্ধু অবশ্যই সাধুবাদ জানাবেন।)
২। নিজের ছবি, নিজের ঘনিষ্ঠ কারোর ছবি, কিংবা কোন তথ্য কোনো অবস্থায়ই তাকে দেয়া ঠিক হবে না। (কারণ, ছবির ব্যবহার কী পর্যায়ে হবে, সেটা আপনি নিশ্চিত নন।)
৩। অচেনা বন্ধুর কাছ থেকে প্রাপ্ত কোনো লিংকে (আপাতদৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ মনে হলেও) ঢোকা উচিৎ নয়।
৪। অচেনা বন্ধুর প্রোফাইল অতি বিচক্ষণতার সাথে বিবেচনা করুন। প্রোফাইলে আত্মকথার বর্ণনায় যদি আত্ম প্রচারের সুর থাকে, তবে, খুবই সন্তর্পণে এগোন। প্রোফাইলে কোনো অসামঞ্জস্য আছে কি না, সেটা বিশ্লেষণ করুন।
৫। লক্ষ্য রাখুন, কোন কোন ব্যাপারে অচেনা বন্ধুটি উৎসাহ প্রকাশ করছেন।প্রথম দিকেই যদি ব্যক্তিগত বিষয়ে তার উৎসাহ থাকে, তাহলে সন্তর্পণে এগোনো দরকার।
৬। অচেনা বন্ধু যে সব ব্যাপারে উৎসাহ দেখাচ্ছেন, সে সব ব্যাপারে নিজের উৎসাহ থাকলেও, সেটা প্রকাশ না করে, নিরুৎসাহ প্রকাশ করে দেখুন কী প্রতিক্রিয়া হয়। ভালো বন্ধু হলে, তিনি আপনার ব্যক্তিগত পছন্দ, অপছন্দের মর্যাদা দিবেন।
৭। বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিন্ন করার অভিনয় করুন। অচেনা বন্ধুর থেকে সম্পর্ক বজায় রাখার ব্যাপারে উৎসাহের আতিশয্য, সন্দেহের কারণ হতে পারে।
৮। অচেনা বন্ধুর থেকে কোনোরূপ উপহার গ্রহণ করার ব্যাপারে, অবশ্যই সতর্ক থাকুন। (উপহার সামগ্রী পাঠানোর ছলে ডেলিভারী চার্জের কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা কিন্তু অহরহ ঘটছে!)।
৯। যতক্ষণ না বন্ধুর সততা সম্পর্কে নিশ্চিত হচ্ছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার নিজের অবস্থান সম্পর্কে তথ্য প্রদানে বিরত থাকুন।
১০। সামনা সামনি দেখা করার ক্ষেত্রে অচেনা বন্ধুর নয়, বরং নিজের পছন্দের স্থানটিই নির্বাচন করুন। দেখা করার সময়, অপ্রত্যাশিত বিপদের মোকাবিলায় মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকুন এবং অবশ্যই নিজের ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত জনদের পরোক্ষ নজরদারির ব্যবস্থা রাখুন। যাতে প্রয়োজণে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।
আপনার জীবন পূর্ণ থাকুক অনাবিল হাসি আর আনন্দে এই প্রত্যাশায়, আল্লাহ্ হাফিজ।