কোন খাবারগুলো গর্ভাবস্থায় প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকা অনেক জরুরী এবং কেন?
একজন নারী যখন সন্তান সম্ভবা হয়, তখন খুশি হওয়ার সাথে সাথে একটু চিন্তিত হন এই ভেবে- তার গর্ভের বাচ্চাকে সুস্থ রাখতে তিনি কি খাবেন আর কি খাবেন না? গর্ভাবস্থায় মা বেশি বেশি খাদ্যের চাহিদা অনুভব করলেও, তারা প্রায় সময়ই থাকেন খাদ্য বিমুখ। কিন্তু মা ও বাচ্চার সুস্থতার জন্য পুষ্টিকর খাবার তো নির্বাচন করতেই হবে। চলুন জেনে নেয়া যাক- মায়েদের গর্ভাবস্থায় যে খাবারগুলো না খেলেই নয়-
ডিম
গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকায় যে খাবারটি প্রথমে আসে তা হল ডিম। যেটা গর্ভবতী মায়ের প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকা ভীষণ জরুরী। ডিম উচ্চমাত্রার প্রোটিন সমৃদ্ধ পুষ্টিকর একটি খাবার। ডিমে আছে প্রয়োজনীয় প্রোটিন, ফ্যাট, মিনারেল এবং ভিটামিন যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
এছাড়া ডিমে আরো রয়েছে- কোলিন ও ওমেগা-থ্রি নামক ফ্যাটি এসিড। এগুলো শিশুর সার্বিক গঠন ও মস্তিষ্কের বিকাশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন কমপক্ষে একটি করে ডিম অবশ্যই খেতে হবে।
দুধ বা দুগ্ধজাত খাদ্য
গর্ভবতী মায়েদের খাদ্য তালিকায় ক্যালসিয়াম থাকা জরুরী। দুধ বা দুগ্ধজাত খাদ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। এছাড়া দুধে রয়েছে ভিটামিন ডি, ভিটামিন এ এবং প্রোটিন, যা নবজাতকের শারীরিক গঠনে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া ক্যালসিয়ামের অভাবে গর্ভবতী মায়ের হাত বা পায়ের হাড়ে যে ব্যথা হয়, তা নিরাময় করতেও সাহায্য করে। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে এক গ্লাস দুধ অবশ্যই পান করতে হবে।
খেজুর
গর্ভবতী মায়েদের খাদ্য তালিকা খেজুর থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। খেজুরে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম, যা গর্ভের শিশুকে স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে এবং শিশুর হাড় ও মাংসপেশি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া খেজুরে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা গর্ভবতী মায়ের দেহের বিভিন্ন ক্যান্সার, যেমন- কোলন ক্যান্সার, স্তন ক্যান্সারে অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। এমনকি গর্ভাবস্থায় মায়েদের যে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হয় তা থেকেও সুরক্ষিত রাখে।
বলা হয়- নিয়মিত খেজুর খেলে প্রসূতিকালীন ব্যথা, খেজুর না খাওয়া মায়েদের তুলনায় অনেক কম হয়। তাই নিয়মিত খেজুর খাওয়া গর্ভবতী মায়েদের জন্য অবশ্যই জরুরী।
পালং শাক
গর্ভাবস্থায় যেসব পুষ্টি উপাদানের প্রয়োজন, তার প্রায় কয়টায় পালং শাকে বিদ্যমান। পালংশাক নামক এই সবুজ পাতাটির মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনীয় ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফলিক অ্যাসিড। এই সকল উপাদান গর্ভবতী মা ও শিশুকে বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখে।
এছাড়া এর মাঝে থাকা প্রচুর পরিমাণে আয়রন গর্ভবতী মাকে রক্তশূন্যতার হাত থেকে রক্ষা করে।
বাদাম
প্রেগনেন্সির শুরু থেকে প্রতিদিন সকাল বেলা খালি পেটে সাত থেকে আটটি ভিজিয়ে রাখা বাদাম খাওয়া দরকার। বাদাম খাওয়ার ফলে মা এবং গর্ভের বাচ্চার এলার্জি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। বাদামে উপস্থিত ভিটামিন বি, গর্ভাবস্থা থেকে বাচ্চার ব্রেনের বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে।
এছাড়া কাঠবাদামে বিদ্যমান প্রোটিন, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম মা ও বাচ্চার হার্ট সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। তবে গর্ভাবস্থায় শুকনো বাদাম খাওয়া ঠিক নয়, এতে শরীর গরম হয়ে যেতে পারে। আর যাদের আগে থেকেই অ্যালার্জি আছে, তাদের না খাওয়াই ভালো।