ওডিআই ক্রিকেটে এশিয়ার সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যান। এই উপমহাদেশে ক্রিকেটের সাথে মানুষের আবেগ এমনভাবে জরিয়েছে পছন্দের কোন খেলা অথবা নিজেদের দেশ খারাপ খেললে এখনকার দর্শকদের খুব সহজেই চোখে পানি চলে আসে। এমন আবেগে জন্য হয়তো উপমহাদেশে ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলো খুব তারাতাড়ি নিজেদের উন্নাতি সাধন করতে পেরেছে। এর মূল কারন হলো: ক্রিকেটের প্রতি দেশ গুলোর প্যাশন। কিছুদিন আগেও ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া বা দক্ষিন, আফ্রিকার, মতো শক্তিশালি দলগুলো উপমাহাদেশের তিন পরাশক্তি বলতে ভারত, পাকিস্তান শ্রীলঙ্কাকেই বুঝায়। কিন্তু সময় এতই দ্রুত বদলে গেছে যে, এখন তাদের এখন তাদের বাংলাদেশ ও অাফগাস্তিনকে নিয়েও ভাবতে হয়। তাই উপমাহাদেশে বর্তমানে বোলিং, ব্যাটিং বা ফিল্ডিং সব ক্ষেত্রে এই দলগুলোতে সেরা মানের খেলোয়াড় রয়েছে। তারা যে কোনো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ভয় ডর হীন ব্যাটিং এর জন্য বেশ বিখ্যাত। বিশ্বের অন্যান্য ক্রিকেট খেলুড়ে দেশগুলো সেরা মনের বোলাররা এশিয়ার ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে স্বস্তি পান না। কারন এশিয়ার ব্যাটসম্যানদের বলা হয় মাস্টারস অফ ব্যাটিং। একদিনের ক্রিকেটে সেরা ক্রিকেটারদের ক্রম আমি নিচ থেকে আপনাদের সাথে আলোচনা করছি।
৫. তামিম উকবালঃ ওডিআইতে তামিম বাংলাদেশের হয়ে সবার প্রথম ছয় হাজার রান করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বাংলাদেশের হয়ে ধারাবাহিক ভালো পারফরম্যান্স করে যাচ্ছেন। তার আক্রমনাত্বক ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করেই বাংলাদেশ বড় সংগ্রহ গড়তে পারে। তামিম ইকবাল সব ধরনের ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত বিশটি সেঞ্চুরি করেছেন। যা দেশের রেকর্ড সর্বোচ্চ। এর মধ্যে একদিনের ক্রিকেটে তার সেঞ্চুরির সংখ্যা এগারোটি ও হাফ সেঞ্চুরির সংখ্যা তেতাল্লিশটি। আইসিসি ওডিআই ব্যাটিং র্যাংকিং এ তামিম এর অবস্থান ১৩ তম। বাংলাদেশের বাহাতি এই ব্যাটসম্যান সবসময়ই আক্রমনাত্বক ব্যাটিং করে থাকেন এবং প্রতিপক্ষের বোলারদের সবদিক দিয়েই সীমানা ছাড়া করতে পারেন। তিনি বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দশ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। তাই তাকে নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশের সর্কালের সেরা ওপেনার হিসেবে আখ্যা দেয়া যায়।
৪. বাবর আজমঃ বর্মানের পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপের অন্যতম নির্রযোগ্য এ ব্যাটসম্যান তিন নম্বরে ব্যাটিং করে থাকেন। তিনি দলে যোগ দেয়ার পর থেকে পাকিস্তানের ব্যাটিং শক্তিও অনেক বেড়ে গেছে। ওডিআইতে তিনি যৌথভাবে সবচেয়ে দ্রুত একহাজার ও দুই হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। ২৩ বছর বয়সে পাকিস্তানের এই খেলোয়ার ৫১ টি ওডিআই ম্যাচ খেলে ৫১.৯২ গড়ে ২১২৯ রান করেছেন। এছাড়াও ওডিআইতে তার সেঞ্চুরির সংখ্যা ৮ টি ও হাফ সেঞ্চুরির সংখ্যাও ৮ টি। বর্তমানে তিনি আইসিসি ওডিআই র্যাংকিংয়ে ৬ষ্ঠ স্থানে অবস্থান করছেন।
৩. শেখর ধাওয়ানঃ ভারতের এই রান মেশিন ওডিআইতে টিম ইন্ডিয়ার নির্ভরযোগ্য একজন ব্যাটসম্যান। ওপেনার হিসেবে তার বিষ্ফোরক ব্যাটিং ভারতকে প্রায়ই ভালো সূচনা এনে দিয়েছে। তিনি প্রথমে দ্রুত গতিতে রান তুলে মিডল অর্ডারের কাজকে সহজ করে দেন। ফলে ভারত খুব সহজেই বড় সংগ্রহ দাড় করাতে পারে। ওডিআইতে শেখর ধাওয়ানের সেঞ্চুরির সংখ্যা ১৫ টি এবং হাফ সেঞ্চুরির সংখ্যা ২৫ টি। আইসিসির ব্যাটিং ওডিআই র্যাংকিংয়ে তার অবস্থান ৫ম।
২. রোহিত শর্মাঃ ভারতের ওপেনিং ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মার আরেক নাম হেডম্যান। আইপিএলের মুম্বাই ইন্ডিয়ানস এর এই আধিনায়ক তার দিনে প্রায় একাই ম্যাচের গতিবিধি পরিবর্তন করে দিতে পারে। মারকুটে এই ব্যাটসম্যান ওডিআইতে সর্বোচ্চ ২৬৪ রানের ইনিংসও খেলেছেন। এছাড়া একমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ দুটি সেঞ্চুরির মালিকও তিনি। ধাওয়ানের সাথে জুটি বেধেঁ প্রায়ই ভারতকে ভালো শুরু এনে দেন রোহিত। তিনি ১৯ টি সেঞ্চুরি ও ৩৬ টি হাফ সেঞ্চুরি করেন।
১. ভিরাট কোহলিঃ একটা সময় শচীন যখন অবসর নিলেন তখন তার রেকর্ড বই দেখে অনেকেই মন্তব্য করে যে শচীনের রেকর্ড বহুদিন টিকে থাকবে। কিন্ত এখন সেই ধারনা থেকে অনেকেই বের হয়ে এসেছেন। কারন ভিরাট কোহলি বর্তমান সময়ের সেই খেলোয়ার যিনি প্রতিনিয়ত শচীনের বিভিন্ন রেকর্ডে নিঃশ্বাস ফেলে চলেছেন। এভাবে চলতে থাকলে শচীনের একশত সেঞ্চুরির রেকর্ড ছুয়ে ফেলতে পারেন একমাত্র কোহলি। ভিরাট কোহলি বর্তমানে ওডিআই ও টেস্টে বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যান। বলা চলে ভারতীয় ব্যাটিং লাইনআপের মেরুদন্ড ভিরাট কোহলি। ওডিআইতে ভিরাটের সেঞ্চুরির সংখ্যা ৩৫ টি ও হাফ সেঞ্চুরির সংখ্যা ৪৮ টি।