পৃথিবী নামক যে গ্রহটিতে আমরা বসবাস করছি সেটা এক কথায় বলতে গেলে খুবই আশ্চর্যজনক ও অদ্ভূত একটি গ্রহ। একবার নিজেই চিন্তা করুন, আমাদের এই পৃথিবীতে আনুমানিক শতকরা প্রায় ৭৫ ভাগ পানি। সেক্ষেত্রে আমরা বলতেই পারি যে, এই জলজ বা সামুদ্রিক স্থানগুলোতে এমন অনেক অগনিত জায়গা রয়েছে যেখানে মানুষের এখন পর্যন্ত পা পড়েনি। শুধু পানিই নয়, না জানি আমাদের স্থলজভাগে এমন অনেক জায়গা রয়েছে যার অস্তিত্ব সম্পর্কে আমাদের মানুষের কোনো বিন্দুমাত্র ধারনা নেই। আজ আমি আমার পোস্টে আপনাদের সাথে এমন কিছু তথ্য শেয়ার করবো যা শুনলে আপনার শরীর শিউরে উঠবে।
আচ্ছা, এমন কি হতে পারে যে আমাদের পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু বা ভিতরে একদম ফাঁকা? অথবা এমন কি হতে পারে যে, এই পৃথিবীর অভ্যন্তরে অন্য কোনো উন্নত জাতি বা সভ্যতার অস্তিত্ব রয়েছে? আমাদের পৃথিবীতে হাজার হাজার পাহাড়, পর্বত, নদী, মমুদ্র, গুহার অস্তিত্ব আমরা পেয়েছি। এমনকি আন্ডারগ্রাউন্ড অনেক সভ্যতার নিদর্শনও খুজে পেয়েছি যেটা চোখে পড়ার মত। এমন কিছু গুহাও রয়েছে যেগুলোর গভীরতা কয়েক মাইল পর্যন্ত। আর এসকল গুহার গভীর পর্যন্ত অনেকগুলিতে এখনও পর্যন্ত মানুষের পা পড়েনি বা জানাশোনার বাইরে।
অ্যাডমিরাল বার্ড নামে একজন আমেরিকান নেভী অফিসার ছিলেন। ১৯২০ সালে একবার তিনি একটি ফ্লাইটে করে এন্টার্কটিকায় পাড়ি জমান। আপনারা হয়তো অনেকেই জানেন না এ অঞ্চলটিতে যাওয়ার সাহস কেবলমাত্র হাতেগোনা কয়েকজন পাইলটই করে থাকেন। এটা থেকে আমরা অনুমান করে নিতেই পারি তিনি কতটা সাহসী ও বুদ্ধিমান একজন পাইলট ছিলেন। এই অভিযানটিতে অ্যাডমিরাল বার্ডের সঙ্গী ছিলেন তার একজন কো-পাইলট। এ অভিযানটি ছিলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক একটি অভিযান। কেননা এ অভিযানে তিনি কি পাননি সেটা কিন্ত বড় কথা ছিলো না।
তিনি কি পেয়েছিলেন সেটাই হচ্ছে মূল বিষয়। অ্যাডমিরাল বার্ড উত্তর মেরুতে বেশ কিছু বড় বড় গাছের সারি দেখতে পায়। আপনারা ভাবতে পারেন, এ আবার এমন কি! একবার চিন্তা করুন, -০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা সারি সারি সবুজ গাছ দেখলে যে কারো মনে প্রশ্ন জাগে। এমকি তিনি সেখানে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া এক প্রজাতির প্রানিও দেখেছিলেন। এমনকি তিনি সেখানে উন্নত একটি সভ্যতার খোজ পেয়েছিলেন যেটা কিনা আমাদের এ পৃথিবীর বর্তমান সভ্যতার চেয়েও অনেক অনেক উন্নত। এক কথায় বলতে গেলে অ্যাডমিরাল বার্ড সেখানে লুকিয়ে থাকা অন্য এক পৃথিবীর দেখা পেয়েছিলেন।
আপনারা হয়তো জানেন না পৃথিবীর উত্তরে এক ধরনের পাখি পাওয়া যায়। যেটিকে রোজেস বার্ড বলা হয়। এই পাখি সম্পর্কে রহস্যময় বিষয় হচ্ছে যখন খুব বেশি ঠান্ডা পড়ে তখন এই পাখি উত্তর মেরুর দিকে উড়ে যায়। আরও সবচেয়ে রহস্যময় বিষয় হচ্ছে এই যে, এই পাখি তার ডিম ফুটে বাচ্চা জন্ম দেয় কোথায়? এখন পর্যন্ত কেউ আবিষ্কার করতে পারেনি যে, এই পাখিটি কোথায় উড়ে যায় এবং উড়ে আসার সময় সে তার বাচ্চা নিয়ে ফিরে আসে। যেখানে এত ঠান্ডায় কোনো প্রানি বেচে থাকাই সম্ভব না সেখানে সে বাচ্চা জন্মদান কিভাবে করে?
আমাদের এই পৃথিবীর কয়েকটি স্তর রয়েছে। যেটিতে আমরা বসবাস করি সেটি নাম হচ্ছে ক্রাস্ট। এর গভীরতা ১৫-২০ কিলোমিটার। এর অভ্যন্তরে পর্যায়ক্রমে মেনটার, আউটার কোর ও ইনার কোর রয়েছে। স্যাটেলাইটের সাহায্যে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষকরা পৃথিবীর অভ্যন্তরের শব্দ সংগ্রহ করেছেন। তাতে যা সংগ্রহ হয়েছে সেটি চমকে দেয়ার মত। আর এজন্যই বিজ্ঞানী বা গবেষকরা একটি সিদ্ধান্তে পৌছেছেন যে, পৃথিবীর অভ্যন্তরে কোনো ফাপা স্থান রয়েছে। তারা এটিও জানিয়েছে পৃথিবীর অভ্যন্তর সূর্যের মত উত্তপ্ত ও গরম। যা কিনা অভ্যন্তরে ঠিক সূর্যের মতই কাজ করছে। এক্ষেত্রে এমনটি হতে পারে হয়তো পৃথিবীর অভ্যন্তরে কোনো জীবনের উপস্থিতি আছে। যেখানে পৃথিবীর অভ্যন্তরের স্তরের কেন্দ্রবিন্দুটি আলাদা একটি সূর্যের কাজ করছে। জীবন ধারনের জন্য যে সকল জিনিসের প্রয়োজন সবকিছুই সেখানে বিদ্যমান। এজন্য বিজ্ঞানীরা ধারনা করেন উত্তর মেরু ও দক্ষিন মেরুতে এরকম অসংখ্য গর্ত রয়েছে যা কিনা হতে পারে অভ্যন্তর পৃথিবীতে যাওয়ার রাস্তা।
এ্যাডলফ হিটলার এরকমই বড় কোনো গর্ত খূজে বেড়িয়েছিলো এন্টার্কটিকায়। হয়তো ভবিষ্যতে এমন কোনো দু:সাহসী কেউ আসবে যে উত্তর মেরু বা দক্ষিন মেরুর এমন কোনো গভীর গর্তের ভিতরে কি আছে তা জানার সাহস করবে। সেই হয়তো আমাদের জানাবে আসলে পৃথিবীর অভ্যন্তরে কি রয়েছে। আমরা সেই প্রত্যাশাতেই আছি।