“আসসালামু আলাইকুম পাঠক ও পাঠিকাগন”
আশা করি সবাই ভাল আছেন ও সুস্থই আছেন ।আজ এমন এক সেলস ম্যান ব্যবসায়ী কথা জানবো আজ যার উদ্যান কোন সিনেমার সাফল্যর গল্পের চেয়েও কম নয় তার জন্ম বেঙ্গালুরের একটা ছোট্র গ্রামে ।
যিনি ছোটবেলা থেকে অন্যের লোকের বাড়িতে বাড়িতে খাবার ভিক্ষা করে বেড়াতেন তিনি ।বেঁচে থাকার জন্য কখনো লোকের কাছ থেকে নারিকেল পাড়ার কাজ,কখনো প্লাস্টিক কোম্পানির লেবারের কাজ ,কখনো সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি ,আবার কখনো লাশবাহী গাড়ি ড্রাইভারেরে কাজও করতেন ।
বর্তমানে সে মানুষটি এখন কয়েক কোটি টাকার মালিক ।তার কোম্পানির লাভ বছরে প্রায় ৩৮ কোটি টাকা ।বাবা ছিলেন একজন ধর্মযাজক তাই তার কোন নির্দিষ্ট উপার্জনও ছিল না সৃষ্টিকর্তার উপাসনাতেই তার অধিকাংশ সময় কেটে যেত ।
৫জনের সংসার চলত বাড়ির পেছনের একটা জমিতে চাষাবাদ করে, যে বছর ভালো ফসল ফুলতো না সেই বছর বাবার সাথে লোকের বাড়িতে বাড়িতে চাল,গম ভিক্ষা করে বেড়াতেন তিনি। কিন্তু তার বয়স যখন মাত্র ১৫ বছর তখন তার বাবা মারা যান।
বিবাহিত বড় ভাই পরিবারের দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করায় মা ও দুই বোনের যাবতীয় দায়িত্ব পড়ে তার কাঁধে। সেই সময় পড়াশোনা ছেড়ে বরফ কলের মজুরি হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি, সেখান থেকে কখনো প্লাস্টিক কোম্পানির মজুর,কখনো বিভিন্ন কোম্পানির লেবারের কাজ করতে থাকেন এরপর হঠাৎ তার মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় ঘর ও ছোট ছোট দুই বোনকে সামলানোর জন্য মাত্র ২০বছর বয়সে বিয়ে করে নিতে হয় তাকে।
ততদিনে লেবারের কাজ ছেড়ে একটা কারখানায় সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি করছেন তিনি আর এখানে রাতের বেলা ড্রাইভারদের কাছ থেকে গাড়ি চালানোর কাজে ভালো উপার্জন হয় শুনে ড্রাইভিং শেখার ভুত মাথায় চাপে। তিনি বুঝতে পারেন ড্রাইভিং এর কাজ কখনো বন্ধ হবে না সেসময় পাশে এসে দাঁড়ান তার স্ত্রী ।
কাপড়ের ফ্যাক্টরিতে কাজ করে জমানো টাকা ও বিয়ের আংটি বিক্রি করে তিনি স্বামীকে ভর্তি করান ভালো একটি ড্রাইভিং স্কুলে ।সেখান থেকে ড্রাইভিং শিখে,ড্রাইভিং লাইসেন্স নিয়ে বেরিয়ে একটা ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি মৃতদেহ বহন করার কাজ পান ।সেখানে ৪ বছর ধরে তিনশ’র বেশি মৃতদেহ বহন করার পর তিনি বুঝতে পারেন এবার সময় এসেছে নিজে কিছু করার । তাই তিনি ২০০০ সালে ব্যাংক থেকে১.৫ লক্ষ টাকা লোন নিয়ে নিজের প্রথম গাড়িটা কিনে ফেলেন,তারপর কঠোর পরিশ্রমের ফলে পরবর্তী চার বছরে মধ্য আরও ৬টি গাড়ি কিনে ফেলেন এবং সিদ্ধান্ত নেন তার কোম্পানি গাড়ি ২৪ ঘন্টায় রাস্তায় থাকবে।
তাই তিনি ৬টা গাড়ির জন্য মোট ১২জন ড্রাইভার কাজে রাখেন এরপর ধীরে ধীরে অ্যামাজন,ওয়ালমার্ট ও জেনারেল মোটরসের মত বড় বড় কোম্পানিগুলো তার গাড়িগুলোকে কাজের জন্য ভাড়া নিতে শুরু করেন। তার হার না মানা মানসিকতায় এভাবে তার কেনা গাড়ি পরিমাণ দাঁড়ায় ৩০০টি, ব্যবসা বাড়ানোর জন্য তিনি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন জনসাধারণের জন্য টেক্সি সার্ভিস দেওয়া ।
তাই তিনি ৩০০টি গাড়ি নিয়ে নিজস্ব কোম্পানির অনলাইন বুকিং ট্যাক্সি সার্ভিস চালু করেন ।তিনি হলেন ভারতের-নাগরিক রেণুকা আরাধ্য্যা নামে সেই মানুষটা যার সর্বমোট ১৩০০টা গাড়ির মালিক ।রেণুকা আরাধ্য্যা নামক সংস্থাকে আস্তার সাথে বিশ্বাস করেন বড় বড় কর্পোরেট সংস্থা থেকে শুরু করে ছোট ব্যবসায়ী ভারতের-নাগরিক সবাই ।
এক সময় লোকের বাড়িতে বাড়িতে ভিক্ষা করা মানুষটা আজ কোটি কোটি টাকার মালিক,একটি নিউজ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন.. স্বপ্ন দেখা আর নিজেকে তৈরি করা থামাতে নেই ।আমি কোনদিনও কলেজে যেতে পারিনিই অথচ বড় বড় কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা আজ আমার কাছ থেকে বিজনেস অপারেটর শিখার জন্য আসে।
তাই নিজেকে প্রতিস্থান করায় সাফল্য চাবিকাঠি যা ভাবে একদিন বড় হতে অংশীদার করে ।তাই আপনি যে কাজটি করেন না কেন মনোযোগ সহকারে করবেন লোকে যা বলে বলুক তাতে পাত্তা দিবেন না নিজের মনকে মনোযোগ দিয়ে নিজে কাজটিকে বেশি মনোযোগ প্রদান করেন তাতে নিজের একদিন না একদিন সাফল্য চাবিকাঠি হবে ।
যদি রেণুকা আরাধ্য্যা পারে ভাগ্য পাল্টাতে তাহলে আপনি কেন পারবেন না আপনার ভাগ্যকে পরিবর্তন করতে, আপনিও পারবেন আপনার ভাগ্য পরিবর্তন করতে যদি আপনার মন ইচ্ছা থাকলে ।আজ এখানেই লেখা শেষ করলাম, নতুন টপিক নিয়ে আবার দেখা হবে । সুস্থ থাকবেন ভালো থাকবেন সবাই ,পাশে থাকার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ………আল্লাহ হাফেজ ।