ষড়ঋতুর এই দেশে শীত মানেই এক অন্য অনুভূতি। শীতে শুধু প্রকৃতি বদলায় না সাথে বদলায় মানুষের জীবনধারাও। কিছু মানুষ শীত আমেজে উল্লাসে মেতে থাকে আর কিছু মানুষ থাকে কখন ভোর হবে। এক শ্রেণির শিশুর গায়ে জড়ানো থাকে বিলাস বহুল নানা দৃষ্টিনন্দন পোষাক আর কেউ একটা ছেঁড়া জামাতেই নিজেকে সামলানোর চেষ্টায় মগ্ন থাকে। এ সমজের দুই শ্রেণির মানুষের কাছে শীত আসে দুভাবে।
এত কিছুর মাঝেও কিছু ব্যতিক্রমি মানুষ দেখা যায়, যারা পথে পথে ঘুরে বেড়ায় অসহায় শীতার্তদের। তাদের হাতে সামর্থ মতো পৌঁছে দেয় শীত বস্ত্র। এ জেন মানু্ষ্যত্বের বহিঃপ্রকাশ। মাঝে মাঝে টানা দু-তিন দিন সূর্যের দেখা মেলে না। তখন শহরের ভাস্যমান মানুষগুলো চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকে একটি সামান্য কম্বলের আশায়। শহরে শীতের রাতে বের হলেই চখে পড়বে মানুষ আর কুকুর একে অপরকে ছুঁয়ে শুয়ে আছে, একটু উষ্ণতার আসায়। এমন চিত্র হর-হামেসাই দেখা যায়।
শীতের সময় শহেরের নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন কিছুটা থমকে যায়। এসময় রোগব্যধি একটু বেড়েই যায়। হাসপাতাল গুলোতে ঠাঁই থাকে না, সবচেয়ে বেশি দেখা যায় শিশুদের। এসময় নিউমেনিয়াসহ নানান জটিল রোগে আক্রান্ত হয় শিশুরা। এক সময় এদেশে শিশু মৃত্যুর হার আনেক বেশি ছিলো যার জন্য বেশ অনক অংশেই শীতকাল দায়ি। শুষ্কতায় হা-পা ফাটতে দেখা যায় প্রায় সব বয়সী মানুষেরই।
শীতে শুধু নিম্ন আয়ের মানুষ নয়, মধ্যবিত্ত পরিবার গুলাও অনেকটা বিপদে পরে যায়। বছরের প্রায় বেশিরভাগ সময়ই আবহাওয়া গরম থাকায় এদেশের প্রায় বেশিরভাগ বাড়িতেই শীত নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা থাকে না। শীতের তীব্রতা বাড়লে লেপ-কম্বল থেকে সারাদিনে অনেকে বের ই হতে চান না। তখন মোজা আর উলের টুপি সাথে মোটা পোষাক শীত নিবারনের চেষ্টা চলে। শীতের সকালে হাড়-কাঁপা ঠান্ডায় সব চেয়ে বিপদে পরে অফিসগামীরা। একে তো শীতের সকল তার উপর প্রায় কোনো অফিসেই থাকে না শীত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা।
কষ্ট হোক বা অনন্দ, বছরঘুরে প্রকৃতির নিয়মে শীত তো আসবেই। তাই সাধ্য মতো প্রস্তুত থাকতে হবে শীতেকে মোকাবেলা করার। আর মানসিকতা থাকতে হবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবার। মনুষ মানুষের জন্য। সমাজের বৃত্তবানদের দায়িত্ব অসহায় নিম্ন আয়ের মানুষের পাশে দাঁড়ানো।