ফজরের আযান চলছে। প্রায় শেষ পর্যায়ে। হঠাৎ হৈ হৈ-রৈ রৈ শব্দে একদল মানুষ জানালার উত্তর দিক থেকে দক্ষিণ দিকে ছুটে যাচ্ছে। ঘুম থেকে লাফ দিয়ে উঠল পান্না। কিছু বুঝে উঠার আগেই ছুটে চলে গেল মানবদলটি। মনে হল যে কোন দুই দলের মধ্যে কোথাও হয়ত মারামারি লেগেছে। চোখে এখনও ঘুম কাটেনি পান্নার। কি ঘটেছে এসব নিয়ে চিন্তা বাদ দিয়ে পুনরায় ঘুমিয়ে পড়ল পান্না।
সকাল হল। পাখির মিষ্টি ডাকের আওয়াজে ঘুম ভাঙল পান্নার। গরম চায়ের কাপে মুখ লাগিয়ে টিভির সামনে বসতেই দেখর সারা মিডিয়া জুড়ে তোলপাড় গত রাতে ঘটে যাওয়া একটা খুন নিয়ে। অবাক করা বিষয় হলো খুনের ঘটনাটি তার বাড়ির দক্ষিণ পাশের একটা ঝোপ থেকেই সন্ধান মিলেছে লাশটির। পান্নার বুঝতে বাকি রইল না যে গত রাতের সেই চিৎকার চেচামেচির শব্দটা এই খুনটার জন্যই হয়েছিল।
লাশটার চেহারাটা এসিড নিক্ষেপের কারণে ঝলসানো ছিল। বয়স বিবেচনায় মনে হচ্ছিল ২৫-২৬ বছর বয়সী একজন যুবক হবে। চেহারা অস্পষ্ট থাকায় লাশটা সনাক্ত করা যাচ্ছিল না। এদিকে খুনের কোন প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছিল না। তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হলো ডিবি পুলিশের উপর।
বাড়ির পাশের ঘটনা দেখে অবাক পান্না। সবার মত লাশটি দেখার জন্য পান্নাও জমা হল ভিরের মধ্যে। লাশের ঝলসানো বিভৎস চেহারা দেখে চমকে উঠল পান্না। এক পলক দেখেই দৌড়ে চলে আসল ওখান থেকে। লাশটার কাছ থেকে আসার পর থেকেই এক অদ্ভুত চিন্তা চেপে বসল পান্নার মাথায়্ মনে হচ্ছে লাশটা তার পরিচিত কারোরই হবে। কিন্তু কে হতে পারে লোকটা। ভাবতে ভাবতেই রাত এসে গেল। রাতের ডিনার ও করা হলো না পান্নার। চিন্তা মাথায় নিয়েই ঘুমিয়ে পড়ল পান্না।
গভীর রাত। কে যেন জানালায় স্বজোরে নক করছে। দৌড়ে জানালা খুলল, জানালা খুলেই দেখল গতকালের খুন হওয়া সেই লাশটি বাঁচাও বাঁচাও বলে সাহায্য চাইছে। এ দৃশ্য দেখামাত্রই ঘুম থেকে এক লাফে উঠে বসল পান্না। বুঝতে পারল এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিল সে।
ভয়ে তখনও কাপছিল পান্না। আতংকিত অবস্থায় তাকালো জানালার দিকে। দেখল বাহিরে প্রচুর ঝড় হচ্ছে। প্রচণ্ড বাতাসে জানালার পর্দাটা উড়ছে। আস্তে আস্তে/ধীরে ধীরে খাট থেকে নামল পান্না। জানালা বন্ধ করে পুনরায় বিছানায়েএসে শুয়ে পড়ল পান্না। চোখটা বন্ধ হলেই যেন শুনতে পাওয়া যায় সেই ভয়ংকর আত্মচিৎকার। চোখে কোনভাবেই ঘুম আসছে না পান্নার।
কোনমতে রাতটা কেটে গেল। সকালে ঘুম থেকে উঠে কাজের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়ল পান্না। সারাদিন বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকায় স্বপ্নের বিষয়টা তেমন মনে পড়েনি তার। রাতে যখন সে ঘুমাতে গেল তখন বিছানায় পিঠ লাগাতেই মনে হলো ছাদের উপর কেউ হয়ত হাটছে। পান্না চিন্তায় পড়ে গেল। এত রাতে তো কারো ছাদে উঠার কথা না। সে নিঃশব্দে ছাদে উঠতে শুরু করল।
আজ এই পর্যন্তই সামনের পর্ব নিয়ে অন্য কোন আর্টিক্যেলে আসছি। ততক্ষণ পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ এবং গ্রাথর ডট কমের সাথেই থাকুন।আল্লাহ হাফেজ