আসসালামু আলাইকুম । আমাদের জীবনে সর্দি একটি অতি পরিচিত একটি অসুখ । কিন্তু এই সর্দি অসুখ আমাদের কীভাবে হয়? আপনারা কি জানেন?
শুরু করছি একটি আংশিক গল্প বলে-
রাবেয়ার সর্দি হয়েছে । রাবেয়ার বড় ভাই শাহাদাত হোসেন ঔষুধ আনতে গিয়েছেন। তিনি বড্ড কিপ্টা প্রকৃতির মানুষ , ২ টাকা কেউ দিলে অনেক খুশি কিন্তু কাউকে ২ টা টাকা দিতে নারাজ । তাই উনার মেজাজ এখন ভালো না । যাওয়ার আগে তিনি রাবেয়াকে বলছিলেন- “আমি যদি জানতে পারতাম যে কে এই সর্দির জন্য দায়ী তাহলে তাকে বেধে তার হাত-পা বেঙ্গে ফেলতাম”।
রাবেয়া – “আহা ! এত রাগ করছো কেন ভাইয়া ? তবে আমি কিন্তু জানি আমার এ সর্দির জন্য কে দায়ী” । শাহাদাত ভাইয়া- “যানিস তে বল দেখি” । রাবেয়া- “জানি কিন্তু তোমাকে বল্বো না । তবে একটা ক্লু দিতে পারি” । শাহাদাত ভাইয়া- “আচ্ছা । কি সেটা?” । রাবেয়া- ” সে মানুষ না (হা! হা! হা!)” । শাহাদাত ভাইয়া- ” আমার সাথে মজা হচ্ছে না? দাড়া তবে রে……।”
আসলে সর্দি ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয় । এমন কোন ব্যক্তি খুজে পাওয়া কঠিন যার কখনো সর্দি হয় নি । মানুষ যেসকল রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় তার মধ্যে সর্দি প্রথম। প্রতি বছরে একজন প্রাপ্তবয়স্ক ও বয়স্ক ব্যক্তি কমপক্ষে ২-৩ ও একটি শিশু কমপক্ষে ৬ – ১২ বার এই সর্দিতে আক্রান্ত হয়। মূলত শীতকালে এর প্রকোপ অনেক বেশি বৃদ্ধি পায় ।
যেভাবে ছড়ায়ঃ
ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হওয়ার মতো রোগ পৃথিবী অনেক রয়েছে । তন্মধ্যে সর্দি একটা। ১০০ এরো বেশি ভাইরাস রয়েচে যা সর্দির মতো সংক্রামণের জন্য দায়ী, এর মধ্যে অন্যতম হলো “রাইনোভাইরাস” । ৫০% এরও বেশি ঠাণ্ডাজনিত রোগের জন্য এই রাইনোভাইরাসকেই দায়ী করা হয়।
সর্দির এই ভাইরাস কণিকাগুলো দূষিত আঙ্গুল , দুষিত বাতাস এমনকি ধুলাবালি থেকে আমাদের নাকের ভিতরে এসে জমে হয় । এই সর্দির জন্য অতি অল্প সংখ্যক ভাইরাস কণিকা এই সংক্রামনের জন্য যথেষ্ট । এই ভাইরাস কণিকাগুলো নিজে নিজে নাকের ভিতরে “এডিনইড” নামক এলাকায় প্রবেশ করে ।
এরপর এগুলো অনুনাসিক কোষ পৃষ্ঠের উপর অবস্থিত রিসেপটর (আইসিএএম-১)এর সাথে যুক্ত হয় । এই ভাইরাস রিসেপ্টর পৃষ্ঠের উপর “ডকিং স্পট” নামক অংশের সাথে মশে যায়। রিসেপ্টরের সাথে যুক্ত হওয়ার পর ভাইরাস একটি কোষের মধ্যে সংক্রামণ হওয়া শুরু করে। এরপর সংক্রামিত কোষে নতুন ভাইরাস কণিকা উৎপাদন করা শুরু করে ।তখন সংক্রমিত কোষগুলোর মৃত্যু ঘটে ।
এভাবে নতুন কোষে ভাইরাস সংক্রামণ ঘটে এবং নতুন নতুন ভাইরাস কণিকা উৎপাদিত হয় । এই প্রক্রিয়াটি ক্রমাগত চলতে থাকে । আর এর ফলেই আমরা সর্দিতে আক্রান্ত হই।
প্রতিরোধঃ
সর্দি “ছোঁয়াচে” । সর্দিতে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির স্পর্শ বা তার ব্যবহৃত জিনিস যা জীবাণুমুক্ত না সেগুলো ব্যবহার করলে ঐ মানুষজন এবং আশেপাশের মানুষজন এই সর্দি রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তাই অবশ্যই রোগীর ব্যবহৃত জিনিসপত্র জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে। যেমনঃ জামাকাপড়, থালাবাসন, তোয়ালে এমনকি ফোন কিংবা ল্যাপ্তপের কী-বোর্ড ইত্যাদি।
প্রতিকারঃ
সর্দি হলে অবশ্যই ঘোরোয়া চিকিতসা নিতে হবে না কমলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ।
ধন্যবাদ
সকলে সুস্থ থাকবেন।
আসসালামু আলাইকুম।