স্মার্টফোনের যুগে মোবাইল ছাড়া টাচ স্ক্রিন চলেই না। নিয়মিত টাচ স্ক্রিন মোবাইল দিয়ে অন্য কাউকে কল বা টেক্সট করছি। তবে আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন, এই টাচ স্ক্রিনটি আসলে কীভাবে কাজ করে?
মোবাইল অনেক আগে উদ্ভাবন হলেও টাচ স্ক্রিন মোবাইলের প্রথম উদ্ভাবন হয় ১৯৯২ সালে। টাচ স্ক্রিন একধরনের ইনপুট ডিভাইস হিসেবে কাজ করে। এর ওপর আঙুলের প্রিন্ট, নখ বা যেকোনো কাঠি দিয়ে চাপ দিলেই কাজ করে।
বর্তমানে, রেজিস্টিভ ও ক্যাপাসিটি নামে দুটি টাচ স্ক্রিন বেশি ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে মোবাইলে ক্যাপাসিটিভ টাচ স্ক্রিন ব্যবহার করা হচ্ছে। এই জাতীয় টাচ স্ক্রিনটি সম্পূর্ণরূপে ইলেকট্রিক্যাল ইমপালসের ওপর উপর নির্ভরশীল। আমাদের শরীরের বৈদ্যুতিক চার্জ না থাকলে এই টাচ স্ক্রিনটি কাজ করবে না।
আপনি যদি টাচ স্ক্রিনটি কীভাবে কাজ করে তা জানতে চান, আপনাকে অবশ্যই প্রথমে মোবাইলের স্ক্রিন সম্পর্কে জানতে হবে। মোবাইলের স্ক্রিনের উপরের অংশটি টাচ সনাক্তকরণ অংশ এবং এটি এলসিডি স্ক্রিন। এটি মূলত মোবাইলের ব্যাটারি এবং সার্কিটের উপরের অংশ। মোবাইল স্ক্রিন দুটি স্তরের পর্দা আছে। মোবাইলের অভ্যন্তরীণ সার্কিট এই দুটি স্ক্রিনের মাধ্যমে একগুচ্ছ পাতলা তারের সাথে সংযুক্ত। এর মাধ্যমে সার্কিটটি মোবাইলের স্ক্রিনটি সক্রিয় করে। মোবাইল ফোনের শীর্ষে থাকা গ্লাসটি মোবাইল ফোনটিকে বিভিন্ন ধরণের আঘাত থেকে রক্ষা করে। এর নীচের কাঁচ বা পর্দাটি অভ্যন্তরের তারের সাথে সংযুক্ত। মূলত দুটি তারের স্তর রয়েছে। এই দুটি একত্রিত হয়ে একটি গ্রিড প্যাটার্ন গঠন করে।এই দুটো মিলে একটা গ্রিড প্যাটার্ন তৈরি করে। দুটি তার সব সময় পরস্পর বিপরীতধর্মী চার্জ বহন করে।
যখন আমাদের হাতের আঙুল মোবাইল স্ক্রিনের ওপর স্পর্শ করে, তখন স্তরগুলোর মধ্যে চার্জের আদান-প্রদান হয়। চার্জের সমতা রক্ষার জন্য চার্জের আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে তৃতীয় মাধ্যম হিসেবে কাজ করে হাতের আঙুল।
স্ক্রিনে স্পর্শ করা হলে, আঙুলটি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রে মধ্যে প্রবেশ করানো হয়। আঙুলের রক্ত এবং কোষগুলি জল পূর্ণ। চার্জড পরমাণু এতে দ্রবীভূত হয়। যেমন ধনাত্মক আয়ন সোডিয়াম এবং পটাশিয়াম আর ঋণাতক আয়ন ক্লোরাইড। বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের মধ্যে আঙুলটি প্রবেশ করানো হলে, এই ক্ষেত্রটি চার্জ প্রস্তুত করতে থাকে এবং পজিটিভ তারেরদিকে নেগেটিভ আয়নগুলো আসে এবং পজিটিভ আয়নগুলো দূরে চলে যায়।
সব অতিরিক্ত চার্জ আঙুলের মধ্যে সংগঠিত হয়। বৈদ্যুতিন ক্ষেত্র যেহেতু খুব শক্তিশালী তাই এটি ব্যাটারি থেকে প্রচুর চার্জ শোষণ করতে পারে। আঙুলের চার্জটি বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের খুব কাছাকাছি যায়, সেটা ফোনের দৃষ্টিগোচর হয় এবং সেই অনুসারে টাচ স্ক্রিনটি কাজ করে।
টাচ স্ক্রিনের চারপাশে যে কালো দাগ থাকে, এটা সেন্সরকে ঢেকে রাখে। লুকানো সেন্সরগুলো পরিমাপ করে ঠিক কী পরিমাণ বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়।
আর একটি প্রশ্ন থেকে যায়, পর্দার কোনও নির্দিষ্ট জায়গায় প্রয়োগ হওয়া চাপ অনুযায়ী মোবাইল ফোন কীভাবে কাজ করবে? কল করার সময় কীভাবে বুঝতে পারে আমি কল করছি না কাটছি? উত্তরটি হ’ল এই জিনিসগুলি ডিভাইসের অপারেটিং সিস্টেমে প্রোগ্রাম করাথাকে। নতুন অপারেটিং সিস্টেম ডিজাইন করার সময় প্রসেসরকে এই বিষয়গুলির বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়।